ক্রীড়া প্রতিবেদক
বাংলাদেশের লড়াই ফেরার আভাস
জাস্টিন গ্রিভসের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে বড় পুঁজি গড়ে ইনিংস ঘোষণা করল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের শুরুটা হলো বাজে। ৭ বলের মধ্যে সাজঘরের পথ ধরলেন দুই ওপেনার জাকির হাসান ও মাহমুদুল হাসান জয়। শনিবার অ্যান্টিগা টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে সফরকারীরা পিছিয়ে আছে ৪৪০ রানে। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ক্যরিবিয়ানরা ৯ উইকেটে ৪৫০ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে। এরপর বাংলাদেশ ২ উইকেটে তুলেছে ৪০ রান। অভিজ্ঞ মুমিনুল হক ২৩ বল ৭ রানে খেলছেন। আট মাস পর এই সংস্করণের জার্সি গায়ে তোলা শাহাদাত হোসেন দিপু অপরাজিত আছেন ৩১ বলে ১০ রানে।
শক্ত ভিত গড়তে ব্যর্থ হয়ে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি থামে দ্রুত, মাত্র ২০ রানে। জেডেন সিলসের করা দশম ওভারের শেষ বলটি স্টাম্পে টেনে বোল্ড হন বাঁহাতি জাকির। তিনটি চারের সাহায্যে ৩৪ বলে ১৫ রান আসে তার ব্যাট থেকে। আলজারি জোসেফের করা পরের ওভারে বিদায় নেন ডানহাতি জয়। খোঁচা মেরে স্লিপে আলিক আথানেজের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। ৩৩ বলে তার সংগ্রহ ৫ রান। ওই রানেই একবার জীবন পেলেও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। আলজারিরই করা অষ্টম ওভারে গালিতে সহজ ক্যাচ তুলেও বেঁচে গিয়েছিলেন জয়। বল হাতের মুঠোয় জমাতে পারেননি মিকাইল লুই।২১ রানে ২ উইকেট হারানোর পর প্রতিরোধ গড়ার লড়াইয়ে আছেন মুমিনুল ও শাহাদাত। আলোকস্বল্পতায় আগেভাগে খেলা শেষ হওয়া পর্যন্ত তাদের অবিচ্ছিন্ন জুটির সংগ্রহ ৫৪ বলে ১৯ রান। ফলোঅন এড়াতে হলেও বাংলাদেশকে আরও ২১১ রান করতে হবে।
এদিকে বাংলাদেশের বিপক্ষে অ্যান্টিগা টেস্টে অসাধারণ এক সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন জাস্টিন গ্রেভস। অভিষেক সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে মাঠে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গিয়েছিলেন এই অলরাউন্ডার। দিনের খেলা শেষে সেঞ্চুরি ছোঁয়ার মুহূর্ত নিয়ে বলতে গিয়ে আবেগী হয়ে পড়েন তিনি।অ্যান্টিগা টেস্টের দ্বিতীয় দিনের শুরুতে হাসান মাহমুদের ঝলকে বিপদে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেখান থেকে দলকে সাড়ে চারশ রানে পৌঁছে দেন গ্রেভস। ২০৬ বলে ১১৫ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। ধৈর্যশীল এই ইনিংসে ছিল চারটি চারের মার।
দিনের শুরুতে হাসান ফেরান জশুয়া দা সিলভা ও আলজারি জোসেফকে। ২৬১ রানে সাত উইকেট পড়ে ক্যারিবিয়ানদের। সেখান থেকে কেমার রোচের সঙ্গে ১৪০ রানের জুটি গড়েন গ্রেভস। ফাস্ট বোলার রোচও এ দিন ব্যাটার বনে যান। ৪৭ রান আসে তার ব্যাটে।
ম্যাচ শেষে গ্রেভস বলেন, খুবই খুবই স্পেশাল মুহূর্ত। খুব আবেগময়ওৃ সম্ভবত কিছুটা চোখের পানিও ঝরেছে। সব মিলিয়ে খুবই খুশি যে, দলকে ভালো একটা জায়গায় নিতে পেরেছি। অনেক কষ্ট করতে হয়েছেৃ আড়ালে অনেক ঘাম ঝরাতে হয়েছে। অনেকটা পথ পেরিয়ে এই জায়গা এসেছি। মানসিকভাবেও অনেক কাজ করতে হয়েছে। সবকিছুই আমাকে এখানে নিয়ে এসেছে।’বিশেষ করে রোচকে কৃতিত্ব দেন গ্রেভস। ৮২ টেস্ট খেলা এই পেসার উইকেটে গ্রেভসকে দারুণভাবে পরামর্শ দেন, যা ম্যাচে কাজে লাগান এই অলরাউন্ডার। এই দুজনের দাপটে নয় উইকেটে ৪৫০ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা দেয় ক্যারিবিয়ানরা।
গ্রেভস আরও বলেন, স্কোরিং রেট কখনোই কোনো সমস্যা ছিল না। কিমার স্রেফ বলে গেছেন যে, নিজের মতো করে খেলতে এবং প্রতিটি বল দেখে খেলতে ও লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে। রোচের মতো সিনিয়র একজন ক্রিকেটারকে সঙ্গী হিসেবে পাওয়া দারুণ ছিল। তিনি ক্রমাগত বলছিলেন যে, ইতিবাচক তাড়না ধরে রাখতে এবং নিজেকে কিছুটা সময় দিতে। ওদেরকে যতটা সম্ভব ক্লান্ত করে তুলতে এবং বোলারদেরকে চতুর্থ-পঞ্চম স্পেলে আসতে বাধ্য করতে। একটা একটা প্রান্তে ধীরস্থির রয়ে গেছে আর আমি নিজের খেলাটা খেলে গেছি।
"