ক্রীড়া প্রতিবেদক
তাসকিন-মুস্তাফিজের বোলিং জাদু
আফগানদের পছন্দের ভেন্যু শারজায় বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল বেশ ভালো। ২০ ওভারে ৭১ রানের বিনিময়ে আফগানদের ৫ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন টাইগাররা। তবে ইনিংসের শেষ পর্যন্ত সেই আধিপত্য ধরে রাখতে পারেননি টাইগাররা। মোহাম্মদ নবীর দাপুটে ইনিংসে বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দিয়েছেন আফগানরা। তবে বাংলাদেশের হয়ে ৪টি করে উইকেট নিয়েছেন বোলিংয়ে জাদু দেখিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান এবং তাসকিন আহমেদ।
গতকাল বুধবার সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংস শেষে টাইগারদের ২৩৬ রানের লক্ষ্য দিয়েছে আফগানরা। শারজায় টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ওভারে রহমানউল্লাহ গুরবাজের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট হারায় আফগানিস্তান। তাসকিনের ফুল লেন্থের বলে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বিধ্বংসী এ আফগান ওপেনার। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে রহমত শাহকে নিয়ে দেখেশুনে খেলছিলেন সেদিকুল্লাহ আতাল। সেট হওয়ার পর সেদিক রানের চাকাও এগিয়ে নিচ্ছিলেন ভালোভাবেই। তবে বাংলাদেশি পেসারদের সুইংয়ের সামনে বেশ অস্বস্তিতে ছিলেন রহমত। রহমতকে শেষমেশ অস্বস্তি থেকে মুক্তি দিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান।
অষ্টম ওভারে ইনিংসে প্রথমবার বোলিং করতে এসে দ্বিতীয় বলেই এ ব্যাটারকে সাজঘরে পাঠিয়েছেন তিনি। অফ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে বের হয়ে যাওয়া বল খেলতে গিয়ে উইকেটকিপার মুশফিকুর রহিমকে ক্যাচ দিয়েছেন রহমত। ১৩ বলে ২ রান করে আউট হয়েছেন তিনি। ১ ওভার পরে দশম ওভারে আবারও বোলিংয়ে আসেন ফিজ। এবার ১ ওভারে আফগানদের ব্যাটিং লাইনকে তছনছ করে দেন এ পেসার। একই ওভারে ফেরান দারুণ ফর্মে থাকা সেদিকুল্লাহ এবং হার্ড হিটার ব্যাটার আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে। ৩৫ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর পঞ্চম উইকেটে শহীদির সঙ্গে ৩৬ রানের জুটি গড়েছিলেন গুলবাদিন। ২০ ওভারের শেষ বলে তাসকিনের শিকার হয়ে তিনি ফিরলে ভাঙে সেই জুটি। তাসকিনের পরিকল্পনামাফিক বোলিংয়ে মিডউইকেটে তানজিদকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এ অলরাউন্ডার। ৩২ বলে ২২ রান করেছেন তিনি।
দশম ওভারের দ্বিতীয় বলে মুস্তাফিজের স্টাম্প বরাবর বলাবল ব্যাটে খেলতে গিয়ে পাননি সেদিকুল্লাহ আতাল। বল লাগে প্যাডে। আবেদন করা মাত্রই সাড়া দিয়ে আউটের ইশারা করেন আম্পায়ার। ৩০ বলে ২১ রান করে আউট হয়েছেন সেদিক। ওমরজাইকে উইকেটের পেছনে মুস্তাফিজের ক্যাচ বানিয়েছেন মুস্তা। পঞ্চম উইকেটে গুলবাদিন নায়েব এবং শহীদি মিলে ৩৬ রানের জুটি গড়ে বিপর্যয় সামাল দেন। তবে বেশিক্ষণ ধৈর্য ধরে রাখতে পারেননি গুলবাদিন। ২০ ওভারে তাসকিনের ফাঁদে পা দিয়ে মিডউইকেটে ক্যাচ তুলে দেন তিনি।
ষষ্ঠ উইকেটে বিশাল জুটি গড়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন মোহাম্মদ নবী এবং হাশমতউল্লাহ। এ উইকেটে দুজনে মিলে গড়েন ১০৪ রানের জুটি। বাংলাদেশি বোলার এবং ফিল্ডারদের বেশকিছু ভুলের কারণে অবশ্য এত বড় জুটি গড়তে পেরেছেন আফগানরা। আফগানিস্তানের ইনিংসের ৩৪তম ওভারে একবার নবীকে আউট করার সহজ সুযোগ হাতছাড়া করে বাংলাদেশ। ওই ওভারে রিশাদ হোসেনের করা তৃতীয় বলটা সুইপ করতে গিয়ে ব্যর্থ হন নবী। বল সরাসরি প্যাডে গিয়ে লাগে। খোলা চোখে দেখে আউট মনে হলেও আম্পায়ার আউটের ইশারা করেননি। ফলে বেঁচে যান নবী। এ আউট ছাড়াও নবী-হাশমতের আরো কয়েকটি সুযোগ হাতছাড়া করেছে বাংলাদেশ।
হাশমত-নবীর জুটি ভাঙে খেলার ৪১ ওভারে মুস্তাফিজের বলে। ৯২ বলে ৫২ রান করে ফিরেছেন তিনি। রশিদ খানও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। ১১ বলে ১০ রান করে আউট হয়েছেন শরিফুলের বলে। নবীকে সেঞ্চুরি বঞ্চিত করেছেন তাসকিন। ৩টি ছক্কা ও ৪টি চারে ৭৯ বলে ৮৪ রান করা এ ব্যাটারকে সাজঘরে ফিরিয়েছেন তিনি। শেষদিকে খারোতির ২৮ বলে ২৭ রানে ২ বল বাকি থাকতে ২৩৫ রানে অলআউট হন আফগানরা। বাংলাদেশের হয়ে চারটি করে উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান এবং তাসকিন আহমেদ। শরিফুল ইসলাম শিকার করেছেন একটি উইকেট।
"