ক্রীড়া ডেস্ক
রেকর্ড নিয়ে আর ভাবেন না রোনালদো
গোল করার পর মাঠের এক প্রান্তে ছুটে গেলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। কিন্তু চেনা উদযাপন দেখা গেল না তার। বরং দাঁড়িয়ে ওপরে আঙুল উঁচিয়ে দেখালেন আকাশের দিকে। সেই উদযাপনের পেছনের গল্প জানা গেল ম্যাচের পরে। গোল করে বাবাকে মনে পড়ছিল আল নাসের তারকার। এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এলিট গ্রুপের ম্যাচে কাতারের আল রাইয়ানকে ২-১ গোলে হারায় আল নাসের। প্রথমার্ধের শেষ দিকে কাছ থেকে হেড করে প্রথম গোলটি করেন সাদিও মানে। দুই অর্ধে বেশ কয়েকটি সুযোগ পান রোনালদো। তার তিনটি হেড বাইরে চলে যায় অল্পের জন্য। আরেকবার বল জালে পাঠালেও গোল পাননি অফসাইড হওয়ায়।
অবশেষে ৭৬ মিনিটে বক্সের ভেতর বল পেয়ে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারের সামনে থেকেই বাম পাশে দারুণ ফিনিশিংয়ে বল জালে জড়ান পর্তুগিজ তারকা। হাজার গোলের স্বপ্নপূরণের পথে তার ক্যারিয়ার গোলসংখ্যা হলো এখন ৯০৪টি। ৮৭ মিনিটে অবশ্য একটি গোল শোধ করে দেয় আল রাইয়ান। সেই ব্যবধানেই শেষ হয় ম্যাচ। ম্যাচের পর রোনালদো খোলাসা করেন তার অমন উদযাপনের কারণ। আজকের গোলের ভিন্ন একটা স্বাদ আছে- ভালো লাগত, যদি বাবা আজ বেঁচে থাকতেন। আজকে তার জন্মদিন। গোলটি বাবার জন্য। বেঁচে থাকলে এদিন ৭১ বছর পূর্ণ হতো রোনালদোর বাবার। ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি মারা যান। ২০০৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালের টাইব্রেকারে জয়সূচক গোলটির পর অনেকটা এভাবেই বাবাকে স্মরণ করেছিলেন রোনালদো।
এছাড়া আরো কয়েকবার গোল উৎসর্গ করেছেন বাবাকে। স্তেফানো পিওলি কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর আল নাসের জয়যাত্রা চলছেই। এ ম্যাচের পর সাদিও মানে বললেন, নতুন কোচের সঙ্গে ভালোভাবে মানিয়ে নিতে পেরেছেন তারা। ‘জয় আমাদের প্রাপ্য ছিল। আমরা শুরু থেকেই ভালো খেলেছি, ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ করেছি এবং অনেক সুযোগ তৈরি করেছি।’ আমার মনে হয়, এখন পর্যন্ত একসঙ্গে আমরা দারুণ করে চলেছি (পিওলির কোচিংয়ে)। চার ম্যাচ খেলেছি, সবক’টিই জিতেছি। এর চেয়ে বেশি কিছু তো আশা করা যায় না!’
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে নিজের গোলের চেয়ে দলের জয় নিয়েই বেশি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন রিয়াল মাদ্রিদ, ইউভেন্তুস ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক তারকা রোনালদো। এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের অন্য সব ম্যাচের মতো এটিও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ও কঠিন ম্যাচ ছিল। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আমরা অনেক সুযোগ তৈরি করেছি এবং প্রতিপক্ষকে সহজ সুযোগ তৈরি করা থেকে বিরত রাখতে রক্ষণ ভালোভাবে সামলেছি। ‘আমি সেরা কি না, সেটা এখন আর গুরুত্বপূর্ণ নয়, এখন আর ওসব নিয়ে ভাবি না। গোল করতে পারা একজন খেলোয়াড় জন্য দারুণ কিছু, তবে আমার কাছে দলের জয়টাই মুখ্য। আমি রেকর্ড ভাঙতে অভ্যস্ত, এখন অবশ্য আর রেকর্ডের খোঁজে থাকি না। আমার কাছে এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে খেলা উপভোগ করা এবং আল নাসর ও আমার সতীর্থদের জিততে সহায়তা করা।’
"