ক্রীড়া ডেস্ক

  ০১ অক্টোবর, ২০২৪

নাটকীয়তায়ও জিততে পারেনি রিয়াল

আগের দিন স্প্যানিশ লা লিগায় ওসাসুনার মাঠে ৪-২ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে বার্সেলোনা। শীর্ষে থাকা দলটির হারের ফায়দা নেওয়ার সুযোগ ছিল মাদ্রিদের দুই ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ ও অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের। কিন্তু বিধিবাম, ‘মাদ্রিদ ডার্বি’তে কেউ জিতল না। গত রবিবার রাতে ১-১ গোলের শ্বাসরুদ্ধকর ড্র করেছে মাদ্রিদের দুই ক্লাব। এ ড্রয়ে লা লিগায় অপরাজিত থাকল রিয়াল মাদ্রিদ ও অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। লিগের চলতি মৌসুমে এটা রিয়ালের তৃতীয় ড্র; আর অ্যাটলেটিকোর চতুর্থ। দুই মাদ্রিদের পয়েন্ট ভাগাভাগি করায় লিগ টেবিলের ওপরের স্থানগুলো থাকল আগের মতোই। ৮ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে কাতালান ক্লাব বার্সেলোনা।

সমান ম্যাচে তিন পয়েন্ট পিছিয়ে দুয়ে থাকল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ। তাদের চেয়ে দুই পয়েন্ট পিছিয়ে তিনে রইল সাবেক চ্যাম্পিয়ন অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। মেট্রোপলিটানো স্টেডিয়ামে রিয়াল অবশ্য জয়ের সুবাস পাচ্ছিল। কিন্তু শেষ সময়ে গোল করে তাদের পয়েন্টে ভাগ বাসায় স্বাগতিক অ্যাটলেটিকো। মাদ্রিদ ডার্বির প্রথমার্ধ কেটেছে নিস্ফলা। ৬৪ মিনিটে গোলমুখ খোলে ব্রাজিলিয়ান রসায়নে। ভিনিচিয়াস জুনিয়রের সহায়তায় গোল করেন রিয়াল ডিফেন্ডার ও অধিনায়ক এডার মিলিতাও। এ গোলের ওপর দাঁড়িয়ে জয়ের প্রহর গুণছিল রিয়াল। কিন্তু যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে রিয়ালকে হতাশ করে অ্যাটলেটিকো।

গোল করে স্বাগতিকদের সমতায় ফেরান অ্যাঙ্গেল কোররেয়া। তবে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের সমতায় ফেরার আনন্দ মাটি হয়ে যায় ম্যাচের শেষ মুহূর্তে। সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন স্বাগতিক ফুটবলার মার্কোস লরেন্তে। তাতে অবশ্য খুব একটা হতাশ মনে হয়নি অ্যাটলেটিকোকে। বরং হার ঠেকাতে পেরেই খুশি তারা। মেট্রোপলিটানো স্টেডিয়ামে সর্বশেষ ৭ ম্যাচের কেবল একটিতে জিততে পেরেছে রিয়াল মাদ্রিদ। এবার সংখ্যাটা বাড়ানোর সুযোগ ছিল। কিন্তু শেষ দিকে জয় হাতছাড়া হয়ে গেল। আসলে অবস্থা এমন ছিল যে, ম্যাচটা শেষ হলেই যেন বেঁচে যায় রিয়াল। কারণ, ম্যাচজুড়ে রিয়াল খেলোয়াড়দের বিরক্ত করছিলেন স্বাগতিক দর্শকরা। গোলরক্ষক থিবাউট কোর্তোয়াকে উদ্দেশ্য করে তো পলিথিন ভরে আবর্জনাও ছুড়ে মেরেছেন অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের সমর্থকরা। কিছু সময় তো ম্যাচ বন্ধও ছিল। এ নিয়ে ম্যাচ শেষে ক্ষোভ প্রকাশ করেন রিয়াল মাদ্রিদ প্রধান কোচ কার্লো আনচেলত্তি। তার দাবি, কোর্তোয়ার মনোযোগ সরাতেই স্বাগতিক দর্শকরা বাজে আচরণ করেছেন। এদিকে রিয়ালের কোচ বলেন, জয়ের এত কাছাকাছি গিয়ে এভাবে ড্র করাটা মেনে নেওয়া কঠিন। যদিও এরকম হতেই পারে। প্রতিপক্ষ তো খুবই শক্তিশালী ও খুবই মানসম্পন্ন। তবে শেষ সময়ে তারা এরকম গোল করে ফেলল, এটিই খারাপ লাগছে। আমরা ম্যাচটি খুব ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছি, খুব কাছে (জয়ের) পৌঁছে গিয়েছিলাম। হতাশার মধ্যেও অবশ্য প্রাপ্তির ছবি দেখছেন রিয়াল কোচ। আটলেটিকোর মাঠে এ এক পয়েন্টকে সঙ্গী করেই আরো সামনে এগিয়ে যেতে চান তিনি।

আমি সবসময় ইতিবাচক কিছু ভাবতেই পছন্দ করি। প্রতিপক্ষের মাঠ থেকে একটি পয়েন্ট আদায় করেছি আমরা এবং শীর্ষ দলের দিকে আরো এক পয়েন্ট এগিয়েছি। আমরা খুব ভালো অবস্থায় আছি, আশা শেষ হয়ে যায়নি এবং এখান থেকে একটি ড্র নিয়ে ফিরতে পারা মানে ভবিষ্যতের জন্য ভালো ইঙ্গিত।

এদিকে ম্যাচ শেষে রিয়াল গোলরক্ষকের আঙুল তুলে সিমিওনে বলেন, আপনি গোল উদযাপন করতেই পারেন, কিন্তু সেটা (প্রতিপক্ষ) সমর্থকদের দিকে তাকিয়ে নয়। গ্যালারির দিকে গিয়ে এমনভাবে নয়।

সমর্থকরা এমনিতেই চটেনি, তাদের চটার কারণ আছে। যে (কোর্তুয়া) এটাকে উস্কে দিয়েছে তাকে নিষিদ্ধ করা উচিত, যদিও তাতে যা ঘটেছে তা সমর্থন করা যায় না।

উল্লেখ্য, কোর্তুয়ার উত্থান এ অ্যাটলেটিকোতেই। ২০১১ সালে গেঙ্ক থেকে চেলসিতে যাওয়ার পর ধারে চলে আসেন মাদ্রিদের ক্লাবটিতে। এরপর তিন মৌসুম ছিলেন এ ক্লাবে। তখন থেকেই তার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে বিশ্ব দরবারে। এরপর চেলসিতে ফিরে গেলেও ২০২৮ সালে যোগ দেন রিয়াল মাদ্রিদে। যা পছন্দ হয়নি অ্যাটলেটিকো সমর্থকদের। তার ওপর তাদের বিপক্ষে গোলের পর কোর্তুয়ার উদযাপন সহ্য হয়নি স্থানীয় সমর্থকদের।

মাঠ থেকে একটি লাইটার কুড়িয়ে রেফারিকে দেন কোর্তোয়া। পরে দেখা যায় সেই লাইটারের মধ্যে একটি ছুঁড়িও লুকিয়ে ছিল। লাউড স্পিকারে দর্শকদের উদ্দেশে এ ধরনের আচরণ বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়। অন্যথায় খেলা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। পরে খেলা শুরু হলেও দর্শকদের এটাসেটা ছুড়ে মারা বন্ধ হয়নি। কোর্তোয়া ফের অভিযোগ করলে দুই কোচ ও লা লিগা প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে ম্যাচ বন্ধ করে দেন রেফারি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close