ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

জাহানারাকে কেন ভয় পেতেন মারুফা!

একজন আছেন শেষ অধ্যায়ে, আরেকজনের সবে শুরু। বলছি বাংলাদেশ নারী দলের দুই পেসার জাহানারা আলম ও মারুফা আক্তারের কথা। তবে চুপচাপ স্বভাবের মারুফা শুরুর দিকে ভয় পেতেন তার অগ্রজ জাহানারা আলমকে। বিসিবির ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক ভিডিওতে দুজনের আড্ডায় বেরিয়ে আসে অজানা অনেক কথা। আগামী ৩ অক্টোবর সংযুক্ত আরব আমিরাতে পর্দা উঠবে এবারের নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের। যদিও এটা হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশে। কিন্ত রাজনৈতিক পালাবদলে নিরাপত্তা সংকটে আইসিসি এটা সংযুক্ত আরব আমিরাতে সরিয়ে নেয়। এরমধ্যে বাংলাদেশ দল আরব আমিরাতে পৌঁছেছে।

এবারের বিশ্বকাপ দলে জাহানারা ও মারুফা দুজনেই আছেন। ভালো সম্ভাবনা আছে, একাদশেও একসঙ্গে থাকার। ২০১১ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া জাহানারাই এ দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। মারুফাও এরই মধ্যে একটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলেছেন। শুরু থেকেই আলো ছড়াচ্ছেন এ পেসার।

বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে দুজনকে নিয়েই একটি শো করে বিসিবি। জাহানারাকে ভয় পাওয়ার কথা জানান মারুফা। তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় পেশাদার ক্রিকেটে আসার আগে জাহানারাকে দেখেছেন কিনা, আসার পর দেখা হয়েছে কখন। উত্তরে মারুফা বলেন, ‘দেখেছি (টিভিতে), কিন্তু ওনাকে ভয় লাগতো।’ উপস্থাপক ভয় লাগার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না... মানে বাংলাদেশ দলের পেসার, দেখলে তো একটু ভয় লাগবেই।’

পাশে বসা জাহানারা তখন হাসা শুরু করেন। এরপর তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে বলেন, ‘ও দলে আসার বেশ কিছু দিন পর এটা জেনেছি (তাকে ভয় পেতো)। চুপচাপ থাকতো, কথা বলে না। একদিন আমার এক টিমমেট আমাকে বলল যে, মারুফা তোকে ভয় পায় কথা বলতে চায় না। তখন আমি বললাম আমি বাঘ নাকি। আমরা টাইগ্রেস কিন্তু সত্যি সত্যি বাঘ তো না। ও কথা বলতেই পারে, তো আমি নিজে থেকেই ওর সঙ্গে কথা বললাম। বিকেএসপির একটা রুলস আছে, আপনি উঠতে বসতেই সালাম পাবেন। মারুফা শুধু সালামটুকুই দিতো, পরের আর কিছু বলতো না। এরপর আস্তে আস্তে ইজি হয়েছে।’

মাঠের বাইরে চুপচাপ শান্ত থাকা মারুফা বল হাতে পেলেই হয়ে ওঠেন আগ্রাসী। সুইং, গতি দিয়ে ব্যাটারদের পরাস্ত করেন এ ডানহাতি পেসার। সতীর্থ জাহানারাকে ভয় পাওয়া মারুফা কিভাবে বল হাতে পেলেই বদলে যান। এমন প্রশ্নের উত্তরে মারুফা বলেন, ‘আসলে মাঠে ঢুকলে এটা কেমন জানি নিজের ভেতরেই চলে আসে। ব্যাটারকে দেখলেই মনে হয় যে লক্ষ্য আছে সেটা পূরণ করবো।’ এটা শুনে জাহানারা পাশ থেকে বলে উঠলেন, ‘দুর্দান্ত, স্পোর্টসম্যানশিপ।’

১৩ বছরের ক্যারিয়ারে বাংলাদেশের জার্সিতে ৫২ ওয়ানডে ও ৮০ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন জাহানারা। যেখানে ওয়ানডেতে ৪৮ আর টি-টোয়েন্টিতে নিয়েছেন ৫৮ উইকেট। মূলত জাহানারার হাত ধরেই বাংলাদেশের পেস আক্রমণ সমৃদ্ধ হওয়া শুরু হয়। শুরু থেকে টানা ভালো খেলেছেন। তবে গেলো কয়েক বছর পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা কমেছে। মাঠের বাইরেও বিতর্কে জড়িয়েছেন। অধিনায়কত্ব পেলেও অল্প সময়ে সেটা হারিয়েছেন। এমনকি দল থেকেও বাদ পড়েছেন কয়েক দফায়। তবে সব পিছনে ফেলে জাহানারা আবার ছন্দে, গত প্রিমিয়ার লিগে দারুণ বোলিং করে ফেরেন জাতীয় দলে। এবারের বিশ্বকাপে তার উওর অনেক আশা নিগার সুলতানা জ্যোতির দলের।

অন্যদিকে মারুফার শুরুটাই দুর্দান্ত। ২০২২ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দারুণ বোলিং করেন তিন। গত বছর ঘরের মাটিতে ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষেও ধারাবাহিকতা বজায় রাখেন তিনি। শেষ কয়েকটি ম্যাচে কিছুটা বিবর্ণ থাকলেও বিশ্বকাপে নিশ্চিতভাবে তার দিকেই তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ দল। ২০২২ সালে প্রথমবার বাংলাদেশের জার্সি গায়ে দেওয়া মারুফা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের হয়ে ২৬ টি-টোয়েন্টিতে নিয়েছেন ১৮ উইকেট। এছাড়া ১৫ টি-টোয়েন্টিতে এ ডানহাতি পেসারের আছে ১১ উইকেট।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close