ক্রীড়া ডেস্ক
হাজার ছুঁয়ে ব্র্যাডম্যানের পাশে কামিন্দু
ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে বোলার রাচিন রাভিন্দ্রার মাথার ওপর দিয়ে ছক্কায় ওড়ালেন কামিন্দু মেন্ডিস। শ্রীলঙ্কার বাঁহাতি ব্যাটসম্যান স্পর্শ করলেন দারুণ এক মাইলফলক। টেস্ট ক্রিকেটে স্বপ্নময় পথচলায় এক হাজার রান হয়ে গেল তার স্রেফ ১৩ ইনিংসেই। দ্বিতীয় দ্রুততম হাজার ছুঁয়ে তিনি বসলেন স্যার ডন ব্র্যাডম্যান পাশে। কামিন্দুর ওই ছক্কার পরই গলে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে দেয় শ্রীলঙ্কা। ৫ উইকেটে তারা করে ৬০২ রান। কামিন্দু অপরাজিত রয়ে যান ক্যারিয়ার সেরা ১৮২ রানে। ২৫০ বলের ইনিংসটি গড়া ১৬ চার ও ৪ ছক্কায়। এ ইনিংসের পথে দুটি রেকর্ডের তালিকায় কিংবদন্তি ব্র্যাডম্যানের পাশে জুড়ে গেছে কামিন্দুর নাম।
এছাড়া ম্যাচের প্রথম দিন পঞ্চাশ ছুঁয়েই তিনি গড়ে ফেলেন অনন্য এক কীর্তি। ১৪৭ বছরের টেস্ট ইতিহাসে তিনিই একমাত্র ব্যাটসম্যান, ক্যারিয়ারের প্রথম ৮ ম্যাচের প্রতিটিতে যিনি ৫০ ছোঁয়া ইনিংস খেলেছেন। ওয়ানডে ঘরানার ব্যাটিংয়ে প্রথম দিন শেষে অপরাজিত ছিলেন ৫১ রানে। শুক্রবার দ্বিতীয় দিনে সেটিকে সেঞ্চুরিতে পরিণত করেন ১৪৭ বলে। ১৩ ইনিংসে তার সেঞ্চুরি হয়ে গেল ৫টি। তার চেয়ে কম ইনিংসে ৫টি সেঞ্চুরি করতে পেরেছেন কেবল তিন জন ব্যাটসম্যান। এখানে সবার ওপরে আছেন স্যার এভারটন উইকস, লেগেছিল ১০ ইনিংস। ক্যারিয়ারের প্রথম ৫ ইনিংসে ৪০ পর্যন্তও যেতে না পারা উইকস পরের টানা ৫ ইনিংসেই করেছিলেন সেঞ্চুরি। এখনো যা টানা সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ড।
হার্বার্ট সাটক্লিফ ও নিল হার্ভির লেগেছিল সমান ১২ ইনিংস। কামিন্দুর সমান ১৩ ইনিংস লেগেছিল ব্র্যাডম্যান ও জর্জ হেডলির। এশিয়ান ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দ্রুততম অবশ্য কামিন্দুই। তিনি পেছনে ফেলেছেন পাকিস্তানের হয়ে ২২ ইনিংসে ৫ সেঞ্চুরি করা ফাওয়াদ আলমকে। কামিন্দুর চেয়ে কম ইনিংসে এক হাজার রান করতে পেরেছেন কেবল দুজন- উইকস ও সাটক্লিফ। দুজনেরই লেগেছিল সমান ১২ ইনিংস।
কে জানে, নিজের আগের ইনিংসগুলোয় একটু ওপরের দিকে ব্যাট করতে পারলে হয়তো বিশ্বরেকর্ডই গড়ে ফেলতেন কামিন্দু। ঘরোয়া ক্রিকেটে রানের জোয়ার বইয়ে এ গলেই তার টেস্ট অভিষেক হয় ২০২২ সালে, একমাত্র ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ছয়ে নেমে খেলেন ৬১ রানের ইনিংস। তবে পরের টেস্ট ম্যাচটি খেলতে তাকে অপেক্ষা করতে হয় প্রায় দুই বছর।
ফেরার ম্যাচে গত মার্চে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিলেটে সেঞ্চুরি করেন দুই ইনিংসেই। সপ্তম শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যান হিসেবে গড়েন এই কীর্তি। দ্বিতীয় ইনিংসে তার ১৬৪ রান আটে নেমে টেস্ট ইতিহাসে চতুর্থ সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর। পরের টেস্টে করেন অপরাজিত ৯২। সেই ফর্ম তিনি টেনে নেন ইংল্যান্ড সফরেও। সেখানে প্রথম টেস্টে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে করেন সেঞ্চুরি, লর্ডস ও ওভালে ফিফটি।ওই দুই সিরিজে ৯ ইনিংসের ৭টিতেই তিনি নামেন ৭ নম্বরে, দুবার আটে।ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ড সিরিজে তাকে তুলে আনা হয় পাঁচে। গলেই প্রথম ম্যাচে করেন সেঞ্চুরি। একই মাঠে এবার দ্বিতীয় ম্যাচে খেললেন দেড়শ ছাড়ানো ইনিংস।
"