ক্রীড়া প্রতিবেদক
জয়ের বৃত্তে থাকতে চায় বাংলাদেশ
প্রথম প্রীতি ম্যাচের জয়ে শুধু স্বস্তিই মেলেনি, ভুটানের প্রতিকূল কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে জয় পাওয়ার আত্মবিশ্বাসও জন্মেছে। একই সঙ্গে কাটানো গেছে ২০১৬ সালের সেই হারের ভয়ও। তপু বর্মণের কথায় তারই প্রতিধ্বনি। দ্বিতীয় ম্যাচের আগে বাংলাদেশ দলের অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার বললেন, জয় ছাড়া তাদের সামনে বিকল্প নেই কিছুই। থিম্পুর চ্যাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে আজ রবিবার ভুটানের বিপক্ষে দ্বিতীয় প্রীতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে শেখ মোরসালিনের একমাত্র গোলে জিতেছিল হাভিয়ের কাবরেরার দল।
প্রথম ম্যাচের পরই রাকিব হোসেনের চোট কাটিয়ে দ্বিতীয় ম্যাচে খেলা নিয়ে শঙ্কা জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ কোচ কাবরেরা। শুক্রবারের অনুশীলনে রিকভারির দিকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা জানালেও রাকিবকে নিয়ে পরিষ্কার কোনো বার্তা দেননি টিম ম্যানেজার আমের খান। আজ ১০ থেকে ১২টা পর্যন্ত রিকভারি সেশন ছিল। ফান, গেমস, যেগুলো করলে মানসিকভাবে ছেলেরা ভালো বোধ করে, সেগুলো করা হয়েছে। রাকিব গতকাল চোট পেয়েছে, তার চিকিৎসা চলছে। ২০১৬ সালে চ্যাংলিমিথাংয়ের টার্ফেই এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে ৩-১ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। ওই হারে প্রায় দুই বছর আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে দূরে ছিল বাংলাদেশ। আমের জানালেন, অতীতের সেই জড়তা কেটে গেছে প্রথম ম্যাচের জয়ে।
সবার মধ্যে একটা টেনশন কাজ করছিল, প্রথম ম্যাচ, অনেক দিন পর খেলা, ভুটানের এ মাঠে আগের একটা অভিজ্ঞতা ছিল, যেটায় আমরা ভালো ফল করতে পারিনি। সেখান থেকে সব দুঃশ্চিন্তা দুর করে একটা গোল দিয়ে যে ধরে রাখতে পেরেছি, সেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে দ্বিতীয় ম্যাচের প্রস্তুতি নিচ্ছি। পঞ্চম মিনিটে করা মোরসালিনের গোলটি আগলে রেখে প্রথম প্রীতি ম্যাচে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। ওই জয়ে খেলোয়াড়দের মানসিক শক্তির সঙ্গে আত্মবিশ্বাসও বেড়েছে বলে মনে করেন তপু। আমাদের যে লক্ষ্য ছিল, কোচের যে দর্শন ছিল, আমার মনে হয় আমাদের টিম ওয়ার্ক ভালো ছিল এবং সেটা আমরা প্রয়োগ করতে পেরেছি (প্রথম প্রীতি ম্যাচে)। দেখুন, আমরা অনেক পরিশ্রম করেছি।
আমরা সবচেয়ে বেশি উপকার পেয়েছি এখানে ৭ দিন আগে আসায়। আবহাওয়ার সঙ্গে পুরোপুরি মানিয়ে নিতে পেরেছি। পরিকল্পনা মোতাবেক খেলতে পেরেছি। আমাদের গত ম্যাচটা যদি দেখেন, আমরা কোনো তাড়াহুড়ো করিনি। আমার মনে হয়, কাল আমাদের জয়ের জন্য এটা বড় ভূমিকা রেখেছিল। দ্বিতীয় প্রীতি ম্যাচেও জয়ের ধারায় থাকতে চান তপু। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ভুটানের উচ্চতা, ঠাণ্ডা- এসব প্রতিকূল কন্ডিশন দলের লক্ষ্য পূরণের পথে অন্তরায় হতে পারবে না, দৃঢ় কণ্ঠেই বললেন অভিজ্ঞ এ ডিফেন্ডার। আমাদের এখন জয় ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। এরই মধ্যে এখানে আমরা মানিয়ে নিয়েছি। প্রথম ম্যাচ কঠিন ছিল, এরই মধ্যে সেটা জিতেছি। মানসিকভাবে আমরা এখন চাঙ্গা। প্রতিটি খেলোয়াড় আত্মবিশ্বাসী। এটা পরের ম্যাচের জন্য জরুরি। আমার মনে হয়, আমরা যদি একই কাজ (করতে পারি), একই নিবেদন নিয়ে মাঠে নামি, তাহলে নিশ্চিতভাবেই আমরা জিতব।
এদিকে ভুটানের জালে দ্বিতীয়বার গোল করলেন মোরসালিন। আগেরটি পেয়েছিলেন বেঙ্গালুরুর সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে, বাংলাদেশের ৩-১ ব্যবধানে জেতা ম্যাচে। ওই ম্যাচে পিছিয়ে পড়া দলকে সমতার স্বস্তি এনে দিয়েছিলেন মোরসালিন, এবার তিনি জয়ের নায়ক। যদিও ম্যাচে বাংলাদেশের সাদামাটা, ধীরলয়ের খেলা নিয়ে একটু-আধটু সমালোচনা চলছে। তবে ম্যাচ শেষের প্রতিক্রিয়ায় মোরসালিন সমালোচনা কানে তুলতে চাইলেন না। কোচের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারার তৃপ্তি বরং ১৯ বছর বয়সি ফরোয়ার্ডের কণ্ঠে।
আমরা খুবই ভালো খেলেছি কোচ আমাদের যেভাবে যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন, সেভাবে আসলে মাঠে বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। এ কারণে আমরা ম্যাচটা জিতেছি। আমাদের লক্ষ্য ছিল ম্যাচ বাই ম্যাচ চিন্তা করা।
প্রথম ম্যাচটা ভালোভাবে পার করেছি। এখন আমাদের টার্গেট থাকবে পরের ম্যাচে কোচের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করা, কোচের পরিকল্পনা অনুযায়ী যদি কাজ করতে পারি, তাহলে দ্বিতীয় ম্যাচের ফলও ইনশাআল্লাহ ভালো হবে। মোরসালিনের গোলের উৎস রাকিব হোসেনের বাড়ানো ক্রস। অবশ্য বল প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক হয়ে এসেছিল তার কাছে। সুযোগসন্ধানী টোকায় তিনি সারেন বাকি কাজটুকু।
জয়সূচক গোলটি মোরসালিন উৎসর্গ করলেন সতীর্থদের। আলহামদুলিল্লাহ, গোল করতে পেরে খুবই খুশি। আসলে একা তো সম্ভব না (গোল করা) গোলটা আমি উৎসর্গ করতে চাই আমার সতীর্থদের সবাইকে।
অ্যাসিস্ট করা রাকিব ভাইকে, উনিই পাসটা দিয়েছিলেন, অবশ্য গোলকিপার হয়ে বলটা আমার কাছে এসেছিল, আমি করেছি। আমি খুশি।
"