ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে সেরা অর্জন : শান্ত

পাকিস্তানকে তাদের মাঠে টেস্টে হোয়াইটওয়াশ করে বুধবার মধ্যরাতে দুই ভাগে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ দল। দেশে ফেরা জাতীয় ক্রিকেটারদের বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা দেন বিসিবি পরিচালকরা। পরে গণমাধ্যমে বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেন, এটাই বাংলাদেশের ক্রিকেটের সেরা অর্জন। বুধবার রাত ১১টায় এক গ্রুপ, রাত আড়াইটায় আরেক গ্রুপ পা রাখে বাংলাদেশে। শুরুর গ্রুপে ছিলেন অধিনায়ক শান্ত, লিটন দাস, মেহেদী হাসান মিরাজসহ দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়রা। সবাই ফিরলেও দেশে ফেরেননি সাকিব আল হাসান। তিনি কাউন্টি ক্রিকেট খেলতে দুবাই থেকেই চলে গেছেন ইংল্যান্ডে।

টেস্ট ক্রিকেটে ২৪ বছরের পথচলায় ১৪৪ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ জিতেছে স্রেফ ২১টিতে। এই ২১ জয়ের মধ্যে জিম্বাবুয়ে, আফগানিস্তান, আয়ারল্যান্ড ও ২০০৯ সালের তৃতীয় সারির ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ছিল ১২ জয়। বাকি ৯টি জয়কেই দেখা যায় বড় করে। এবারই মাত্র তৃতীয়বারের মতো দেশের বাইরে টেস্ট সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। আগের দুই সিরিজ জয় ছিল জিম্বাবুয়ে ও ২০০৯ সালের ওয়েস্ট ইন্ডিজে। কাজেই নিশ্চিতভাবেই দেশের বাইরে সেরা টেস্ট সিরিজ এটাই।

তবে শান্ত সব সংস্করণের সাফল্য মিলিয়েই বলছেন এটাই সেরা অর্জন। আমার কাছে তো মনে হয়, বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে সেরা অর্জনগুলির একটি। তখন প্রশ্ন করা হয় অন্যতম সেরা নাকি একদম সেরা? শান্তর জবাব, ‘বেস্ট, আমার মনে হয়, সবচেয়ে বড় অর্জন এটা বাংলাদেশ ক্রিকেটের। এটা শুধু আমার একার ব্যক্তিগত কথা নয়, দলের সবাই এটা বিশ্বাস করে। খুবই ভালো লাগছে।’ এই সিরিজ সামনে রেখে গত কয়েক মাসে লম্বা প্রস্তুতি নেন বাংলাদেশের লাল বলের ক্রিকেটাররা। সিলেট ও চট্টগ্রামে চলে বিশেষ ক্যাম্প। দেশের অস্থির রাজনৈতিক অবস্থার কারণে পাকিস্তানেও যায় আগেভাগে। সব মিলিয়ে ভালো প্রস্তুতির কারণেই এই সাফল্য এসেছেন, জানান শান্ত, ‘এই সিরিজটি খুবই ভালো গেছে। আমরা যেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি, সফরে যাওয়ার আগে এবং ওখানে যাওয়ার পর দলের প্রত্যেকের মানসিকতা, স্কিল নিয়ে চিন্তাভাবনা, সব মিলিয়ে খুব ভালো প্রস্তুতি ছিল এবং প্রত্যেকের ইচ্ছা ছিল যেন আমরা খেলায় জিততে পারি। আমরা পাকিস্তানে তিন দিন আগে গিয়েছিলাম, এটা আমাদের বাড়তি সুবিধা দিয়েছে।

এদিকে কদিন আগেও আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত হয়ে জাতীয় সংসদের সদস্য ছিলেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু ক্ষমতার পালাবদলের পর প্রেক্ষাপট এখন তার জন্য তিক্ত সময়। দেশের বাইরে থাকা শীর্ষ ক্রিকেটারকে একটি হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। তাকে দল থেকে বাদ দেওয়ার দাবিও উঠেছিল।

সাকিবকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা অভিযোগে আসামি করা হয়েছে বলে প্রতিবাদ জানান জাতীয় দলের তার সতীর্থরা। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা হলেও খেলোয়াড়রা যে সাকিবের পাশে- এই কথা জানাবেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বাংলাদেশ দলের পাকিস্তান সফরের সময় সাকিবকে একটি মামলায় হত্যা আসামি করা হয়। আরেক আইনজীবী সাকিবকে খেলা থেকে সরিয়ে দেশে ফিরিয়ে বিচারের মুখোমুখি করতে বিসিবিকে আইনি নোটিস দিয়েছিলেন। তবে বিসিবি অভিযোগ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত সাকিবের পাশে থাকার ঘোষণা দেয়। রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম টেস্টে পাকিস্তানকে হারানোর পর বাংলাদেশ দলের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার সাকিবের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদ করেন। সেই টেস্টে বল হাতে দলের জয়ে অবদান রেখেছিলেন সাকিব। দ্বিতীয় টেস্টেও পাকিস্তানকে ধরাশায়ী করে ঐতিহাসিক সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। বুধবার রাতে দুই দফায় পাকিস্তান থেকে দেশে ফেরেন ক্রিকেটাররা।

সিরিজ জেতার পর বাংলাদেশ দলকে সংবর্ধনা দেওয়ার কথা জানানো হয় প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে। বুধবার রাতে বিমানবন্দরে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপে শান্ত জানান, দেখা হলে আর সুযোগ হলে সাকিবের পাশে থাকার কথা বলবেন তারা, ‘সাকিব ভাইয়ের ব্যাপারটি, এটি ভিন্ন একটি ব্যাপার। তবে প্রত্যেক খেলোয়াড় সাকিব ভাইয়ের পাশে আছে। এটা আমরা সবাই জানি যে, সাকিব ভাই খেলার জন্য কতটা নিবেদিত এবং খেলার জন্য কতটা পাগল। সবসময় দলের জন্য চিন্তাভাবনা করে থাকেন। যখন দেখা হবে (প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে), এটা নিয়ে যদি কথা ওঠে প্রতিটি খেলোয়াড় সাকিব ভাইয়ের পাশে আছে।’ বাংলাদেশ দলের বাকি ক্রিকেটাররা দেশে ফিরলেও কাউন্টি দল সারের হয়ে খেলতে সাকিব গেছেন ইংল্যান্ডে। ইংল্যান্ড থেকেই তিনি ভারতে দলের সঙ্গে যোগ দেবেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close