ক্রীড়া ডেস্ক

  ১০ আগস্ট, ২০২৪

বর্ণিল অধ্যায়ের ইতি টানলেন পেপে

তার বয়সি অনেকেই বুট জোড়া তুলে রেখেছেন। কেউ কেউ পুরোদমে কোচিংও করাচ্ছেন। কিন্তু তিনি খেলে যাচ্ছিলেন তার মতোই। অবশেষে থামছেন পেপে। গত বৃহস্পতিবার রাতে পেশাদার ফুটবল থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এ ডিফেন্ডার। তাতেই শেষ হলো পর্তুগিজ ফুটবলের প্রায় দেড় যুগের এক অধ্যায়।

২০০৭ সালে পর্তুগালের জার্সিতে অভিষেক হয়েছিল পেপের। শেষ হলো বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের। ৪১ বছর বয়সে জাতীয় দল ও ক্লাবকে বিদায় জানালেন তিনি। অথচ এ তো কয়েক সপ্তাহ আগেও ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে আগুন ঝরিয়েছেন পেপে। দুর্দান্ত পারফরম্যান্স হার মানিয়েছিল তার বয়সকে। টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি বয়সি খেলোয়াড় হিসেবে রেকর্ডও গড়েছিলেন তিনি।

কিন্তু বিফলে গেছে পেপের দারুণ পারফরম্যান্স। সেমিফাইনালের আগেই প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে যায় তার দল পর্তুগাল। কোয়ার্টার ফাইনালে টাইব্রেকারে ফ্রান্সের কাছে হারে তারা। স্নায়ুক্ষয়ী সেই লড়াইটিই দেশের জার্সিতে পেপের শেষ ম্যাচ হয়ে থাকল। পর্তুগালের হয়ে ওটা ছিল তার ১৪১তম ম্যাচ। দেশের জার্সিতে তার চেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন কেবল দুজন।

একজন হোয়াও মোতিনহো এবং অন্যজন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। এবারের ইউরো ভালো কাটেনি দ্বিতীয়জনের। তার ঠিক বিপরীত ছিলেন পেপে। দেশের হয়ে তৃতীয় শিরোপা জয়ের স্বপ্ন ছিল পেপের। সেটি পূরণ হয়নি। এর আগে পর্তুগালের হয়ে ২০১৬ সালে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ এবং ২০১৯ সালে উয়েফা নেশনস লিগ জয়ের স্বাদ পান পেপে। কিন্তু বিশ্বকাপ জিততে না পারার আক্ষেপ নিয়েই বর্ণিল ক্যারিয়ার শেষ করতে হচ্ছে তাকে। পেশাদার ক্লাব ফুটবলে পর্তুগালের বাইরে কেবল রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে খেলেছেন পেপে। ১০ বছরের অধ্যায়ে ক্লাবটির হয়ে সম্ভাব্য সবকিছুই জিতেছেন তিনি। এর মধ্যে আছে তিনটি উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ ও তিনটি লা লিগার শিরোপা। সর্বশেষ এ ডিফেন্ডার খেলছেন পোর্তোর হয়ে। এ ক্লাবের প্রতিনিধিত্ব পেপে করেছেন পাঁচ বছর। এছাড়া পর্তুগালের বেসিক্টাস ও মারিটিমোর হয়ে খেলেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ৩৩ মিনিটের দীর্ঘ এক ভিডিও পোস্ট করেছেন পেপে। যেখানে বুট জোড়া তুলে রাখার ঘোষণা দেন তিনি। এসময় আবেগ ছুঁয়ে যায় তাকে। পেপে বলেন, ‘আমি হয়তো দলকে খুব বেশি সহায়তা করতে পারিনি। কিন্তু নিজের প্রতি বিশ্বাস ছিল এবং চেষ্টা করেছি পারফর্ম করার। ক্লাব এবং জাতীয় দলে আমার সব সতীর্থকে ধন্যবাদ। আমি চলে যেতে চাই। আমার তরফ থেকে সবাইকে ধন্যবাদ এবং আলিঙ্গন।

ক্লাব ফুটবলে পাঁচশ’রও বেশি ম্যাচ খেলেছেন পেপে। পুরো ক্যারিয়ারে ১৭টি লাল কার্ড দেখেছেন তিনি। এছাড়া হজম করেছেন ২১২টি হলুদ কার্ড। কতটা আক্রমণাত্মক ডিফেন্ডার ছিলেন পেপে সেটি বোঝাতে এ তথ্যটিই যথেষ্ট। তার প্রস্থানে পর্তুগাল দলে অবধারিতভাবেই বড় একটা শূন্যতা তৈরি হচ্ছে। সেটি পর্তুগিজটা কীভাবে সামাল দেয় সেটিই দেখার অপেক্ষা। পেপের উত্থান অবশ্য ব্রাজিল থেকে। ল্যাটিন আমেরিকার দেশটিতে ১৯৮৩ সালে জন্ম নেন তিনি। ব্রাজিলিয়ান ক্লাব করিন্থিয়ানস থেকে ফুটবলে পেপের হাতেখড়ি। কিন্তু ২০০১ সালে পর্তুগিজ ক্লাব মারিটিমোতে যোগ দেন তিনি। পেপে আর ব্রাজিলে ফিরে যাননি। আসলে সেলেকাওদের তারকাঠাসা তার সুযোগ পাওয়া কঠিন ছিল। ওই সময়ে ব্রাজিল দলে খেলতেন কাফু-কাকাদের মতো ডিফেন্ডাররা। অবস্থা বুঝেই পর্তুগালের দিকে ঝুঁকেন পেপে। এ দেশটির জার্সিতেই শুরু হয় তার আন্তর্জাতিক ফুটবল যাত্রা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close