ক্রীড়া ডেস্ক
সেমিতে নজর কাড়বে যারা
১৯৬৬ সালের ফিফা বিশ্বকাপের পর আর কোনো বড় শিরোপা পাওয়া হয়নি ইংল্যান্ডের। অন্যদিকে ১৯৮৮ সালে ইউরো শিরোপা পাওয়া নেদারল্যান্ডস ৩৬ বছর ধরে শিরোপা খরায় ভুগছে। দুদলের মধ্যকার আজ সেমিফাইনাল সে কারণেই হয়ে উঠেছে মর্যাদার লড়াই। আগামী ১৪ জুলাই বার্লিনে এবারের আসরের ফাইনালে কে খেলবে তার নির্ধারণের জন্য শেষ চারের লড়াইকে ছাপিয়ে আছেন যারা।
কেন বনাম ভন ডাইক : ইংলশি স্ট্রাইকার হ্যারি কেন এখন পর্যন্ত ইউরোর এবারের আসরে নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি। বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে জার্মান লিগে খেলার অভিজ্ঞতাও তিনি কাজে লাগাতে পারছেন না। অথচ প্রথম মৌসুমে তিনি বায়ার্নের হয়ে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় ৩৬ গোল করেছেন। পিঠের ইনজুরি নিয়ে মৌসুম শেষ করার পর কেন কোনোভাবেই আর শতভাগ ফিটনেস ফিরে পাননি। যা ইউরোতে তার পারফরম্যান্সে দৃশ্যমান। কাল সেমিফাইনালের ম্যাচে তাকে লিভারপুলের ডিফেন্ডার ভার্জিল ফন ডাইক বিপক্ষে লড়তে হবে। দীর্ঘদেহি এ ডাচম্যানও নিজেকে প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু তারপরও পুরো দলের মতো নকআউট পর্বে দারুণ খেলেছেন ফন ডাইক।
ইংল্যান্ডের কোচ গ্যারেথ সাউথগেটও অবশ্য তার দলের অন্যতম নির্ভরযোগ্য স্ট্রাইকারকে যতটা সম্ভব মাঠে রাখতে চাচ্ছেন। আগের ম্যাচগুলোয়ও ইংলিশ বস সেটাই করেছেন। তবে ডাচ রক্ষণভাগ ভেঙে কেন এবার কতটা এগিয়ে যেতে পারবেন তা সময়ই বলে দেবে।
ট্রিপিয়ার বনাম ডামফ্রাইস : ইংলিশ রক্ষণভাগের বামদিকে কিয়েরান ট্রিপিয়ারকে খেলানোর সাউথগেটের সিদ্ধান্তেÍ সমালোচকদের সমালোচনা চলছেই। তাদের দাবি এতে করে ইংল্যান্ড নাকি অতিমাত্রায় রক্ষণাত্মক কৌশল অবলম্বন করেছে। তবে এটাও ঠিক টিপ্রিয়ারের উপস্থিতি প্রমাণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হতে যাচ্ছে নেদাল্যান্ডসের বিরুদ্ধে। ডাচ রাইট-ব্যাক ডেনজেল ডামফ্রাইস তিন বছর আগে ইউরো ২০২০-এ যেভাবে নিজেকে এগিয়ে নিয়েছিলেন এবারের আসরেও তার একটুও ব্যতিক্রম হয়নি। মাঠে সবসময়ই উজ্জীবিত ডামফ্রাইস তুরস্কের বিপক্ষে বিপজ্জনক এত ক্রস করে কোয়ার্টার ফাইনালে দলকে জয় উপহার দিয়েছিলেন। ট্রিপিয়ারের প্রথম কাজ হবে আজ ডামফ্রাইসকে পুরোপুরি অকার্যকর করে দেওয়া, যা কোনোভাবেই সহজ কাজ হবে না।
ডাচ লেফট বনাম ইংল্যান্ড রাইট : লিভারপুল উইঙ্গার কোডি গাকপো ইউরোতে এখন পর্যন্ত তিন গোল করে যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় শীর্ষে রয়েছে। নেদারল্যান্ডসের আক্রমণভাগে তিনিই মূল হুমকি। এ পর্যন্ত ডাচদের প্রায় সবকটি বিপজ্জনক আক্রমণে গাকপোর সংশ্লিষ্টতা ছিল। কিন্তু ইংলিশ রাইট-ব্যাক কাউল ওয়াকারও কম যাননি। গাকপোকে আটাকাতে তিনি সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবেন। বিশেষ করে গাকপোর গতিকে থামানোর জন্য ম্যানচেস্টার সিটির এ ডিফেন্ডার একাই যথেষ্ট বলে সাউথগেট বিশ্বাস করেন। নেদারল্যান্ডসের লেফট সাইডের হুমকিকে নষ্ট করার করা বুকায়ো সাকাকে এক্ষেত্রে সহযোগিতা করার জন্য খেলাতে পারেন ইংলিশ বস।
বেলিংহাম বনাম শুটেন ও রেইন্ডার্স : ইংল্যান্ড ও রিয়াল মাদ্রিদ মিডফিল্ডার জুড বেলিংগাম এখনো তার সেরা ফর্ম দেখাতে না পারলেও ইংল্যান্ডের সেমিফাইনালের পথে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। ২১ বছর বয়সি বেলিংহামের নাটকীয় ওভারহেড কিকে স্লোভাকিয়ার শেষ ষোল থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়। নেদারল্যান্ডস মধ্যমাঠে টিয়ানি রেইন্ডার্স ও জার্ডি শুটেনকে দিয়ে বেলিংহামকে বাক্সবন্দি করার চেষ্টা করবে। ডাচ এ জুটি একসঙ্গে দারুণ ফর্মে রয়েছে। কোচ রোনাল্ড কোম্যান তাদের জুটি ভেঙে অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে জো ভারম্যানকে খেলিয়ে পরাজয়ের মুখে পড়েছিলেন।
সাউথগেট বনাম কোম্যান : সেমিফাইনালে ফলাফলের ওপর দুই কোচের খেলোয়াড় পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত একটি প্রভাব ফেলতে পারে। শেষ আটের নিজ নিজ ম্যাচে যা প্রমাণ হয়েছে। সাউথগেট লুক শ’কে মাঠে নামিয়ে সুইসদের বিপক্ষে ১০ মিনিটের মধ্যে ইংল্যান্ডকে সমতায় ফেরান। এছাড়া ইভান টনি, ট্রেন্ট আলেক্সান্দার আর্নল্ড ও কোল পালরমারকে বদলি বেঞ্চ থেকে একসঙ্গে উঠিয়ে আনেন, যাদের গোলে ইংল্যান্ড পেনাল্টিতে ৫-৩ গোলের জয় পায়।
অন্যদিকে ১৯৮৮ ইউরো জয়ী নেদারল্যান্ডস দলের অধিনায়ক কোম্যান তুরস্কের বিপক্ষে প্রথমার্ধে ১-০ গোলে পিছিয়ে থাকার পর ওট উইগর্স্টকে মাঠে নামিয়ে ২-১ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন।
"