ক্রীড়া ডেস্ক
বিশ্বকাপ বাছাই
উরুগুয়ের আচরণে বিরক্ত মেসি
ম্যাচের প্রথমার্ধে একটি ফাউলকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় দুই দলের মধ্যে। সেসময় আর্জেন্টিনার রদ্রিগো দি পলের দিকে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করেন উরগুয়ের মানুয়েল উগার্তে। বিষয়টি একদমই পছন্দ হয়নি লিওনেল মেসির। ম্যাচ শেষে আর্জেন্টাইন অধিনায়ক বলেন, উরুগুয়ের তরুণ খেলোয়াড়দের প্রতিপক্ষকে সম্মান করা শিখতে হবে। হারলেও বাছাইয়ে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে আর্জেন্টিনা। ৫ ম্যাচে তাদের অর্জন ১২ পয়েন্ট। সমান ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে অবস্থান করছে উরুগুয়ে।
গতকাল শুক্রবার ভোরে বুয়েন্স আয়ার্সে ঘরের মাঠে উরুগুয়ের কাছে ২-০ গোলে হেরেছে আলবিসেলেস্তেরা। গত বছর ডিসেম্বরে কাতার বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর এটি তাদের প্রথম হার। ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাই পর্বেও প্রথমবারের মতো হারের তেতো স্বাদ পেয়েছে লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা। এ হারের আগে টানা ১৪ ম্যাচ অপরাজিত ছিল তারা। প্রথমার্ধে রোনাল্ড আরাউহোর গোলে পিছিয়ে পড়া স্বাগতিকদের জালে শেষদিকে বল পাঠিয়ে উরুগুয়ের জয় নিশ্চিত করেন দারউইন নুনেজ।
পুরো ম্যাচেই ছিল আক্রমণাত্মক আবহ। সব মিলিয়ে হয় ৩৩টি ফাউল। এর মধ্যে ২২টিই করে শারীরিক শক্তিনির্ভর ফুটবল খেলার জন্য পরিচিতি থাকা উরুগুয়ে। বলা চলে, কথা কাটাকাটি আর ধাক্কাধাক্কিতে মেতে উঠেছিল দল দুটি। হারের পর প্রতিপক্ষের মারমুখী শরীরী ভাষা নিয়ে কোনো আপত্তি জানাননি মেসি। নিজ দেশের গণমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টসকে তিনি বলেন, ‘এটা (আক্রমণাত্মক আবহ) খুবই স্বাভাবিক। বাছাই পর্বের এ ম্যাচগুলোর অংশ এটা। উরুগুয়ের বিপক্ষে সবসময়ই এরকম হয়।’ তবে ২২ বছর বয়সি উরুগুয়ান মিডফিল্ডার উগার্তের আচরণে বিরক্ত হয়েছেন মেসি। উগার্তেসহ দলটির তরুণ ফুটবলারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘(অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি নিয়ে) আমি যেটা ভাবছি, তা বলতে চাচ্ছি না। তবে (উরুগুয়ের) তরুণদের তাদের (দলের) বড়দের কাছ থেকে (প্রতিপক্ষকে) সম্মান করা শিখতে হবে। এ দ্বৈরথটা সবসময়ই তীব্র ও আক্রমণাত্মক হয়ে থাকে, কিন্তু সবসময়ই সেটা শ্রদ্ধার সঙ্গে। ওদের (তরুণদের) আরো একটু শিখতে হবে।’
পুরো ম্যাচে ৬৩ শতাংশ সময়ে বল দখলে নিয়ে ১২টি শট নেয় আর্জেন্টিনা, যার তিনটি ছিল লক্ষ্যে। ৩৭ শতাংশ বল দখলে রেখে ৬টি শটের দুটি লক্ষ্যে রেখে দুটিই জালে পাঠায় উরুগুয়ে। বাছাই পর্বে পঞ্চম ম্যাচে গিয়ে প্রথম হার দেখল মেসির নেতৃত্বাধীন আর্জেন্টিনা। ৪১ মিনিটে নাহুয়েল মলিনার সঙ্গে বল দখলের লড়াইয়ে জিতে সুযোগ তৈরি করেন মাতিয়াস ভিনা। ক্ষিপ্রগতিতে ছুটে ডি-বক্সের ভেতরে বলের জোগান দেন আরাউহোকে। কোনাকুনি শটে আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজকে পরাস্ত করে উরুগুয়েকে উল্লাসে মাতান আরাউহো।
ম্যাচে ফিরতে মরিয়া আর্জেন্টিনাকে ৮৭ মিনিটে স্তব্ধ করে দেন নুনেজ। নিজেদের অর্ধে মেসির কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে আক্রমণে ওঠেন নিকোলাস দি লা ক্রুজ। নিকোলাস ওতামেন্দি ও ক্রিস্তিয়ান রোমেরোকে ফাঁকি দিয়ে তিনি পাস বাড়ান নুনেজের দিকে। বল নিয়ে ছুটে বক্সে ঢুকে জাল কাঁপান লিভারপুল তারকা নুনেজ। পুরো ম্যাচে শুরু থেকেই খেলেন মেসি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে তার একটি ফ্রিকিক পোস্টে বাধা পেলে সমতায় ফেরা হয়নি আর্জেন্টিনার। এ মহাতারকাকে বোতলবন্দি রেখে সে অর্থে জ্বলে উঠতে দেয়নি উরুগুয়ে। এ জয়ের পর ১০ পয়েন্ট নিয়ে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইতে দুইয়ে থাকল তারা। আগের ম্যাচে উরুগুয়ে একই ব্যবধানে জিতেছিল ব্রাজিলের বিপক্ষে।
"