ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০৮ জুন, ২০২৩

‘টেস্টে বিরতি বাড়ানোর পরামর্শ’

মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে কয়েক দিন ধরে ক্রিকেটারদের অনুশীলন নিয়মিত চলছে। প্রচণ্ড গরমের সঙ্গে লড়াই করেই চলছে তাদের অনুশীলন। প্রধান কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহে গণমাধ্যমের ক্যামেরায় ইশারা করে দেখান, অনেক গরম।

অনুশীলনে তবু নিজেদের মতো করে চালানোর সুযোগ আছে। প্রয়োজনমতো থাকে পানি পানের বিরতি। কিন্তু ম্যাচ চলাকালে নির্ধারিত সময়ের আগে কোনো বিরতির সুযোগ নেই। টেস্ট ম্যাচের আগে এমন অসহনীয় গরম সংশ্লিষ্ট সবার জন্যই বড় ভাবনার জায়গা। বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশিষ চৌধুরী যেমন সম্ভাব্য করণীয় ভেবে রেখেছেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে পানি পানের বিরতি বাড়ানোর পরামর্শ তার।

পাঁচ দিনের টেস্ট ম্যাচে সাধারণত দিনের খেলায় ২ ঘণ্টা পরপর থাকে সেশন বিরতি। আর প্রতি সেশনে ১ ঘণ্টা পরপর দেওয়া হয় পানি পানের বিরতি।

তবে সিলেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের বিপক্ষে সদ্যসমাপ্ত আনঅফিসিয়াল টেস্ট সিরিজে গরমের কারণেই বাড়তি রাখা হয়েছিল। খেলার মাঝেই বড় ছাতার নিচে বসে দুই দলের খেলোয়াড়দের পানি পান করতে দেখা গেছে প্রায় নিয়মিত। দুই দলের সমঝোতায় বাড়ানো হয়েছিল বিরতি।

আফগানদের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচেও একই পথ বেছে নেওয়া উচিত, গতকাল সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপে বললেন বিসিবির প্রধান চিকিৎসক।

‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের বিপক্ষে যে সিরিজটি ছিল, দুই দলের সম্মতির ভিত্তিতে আমরা বিরতির সংখ্যা বাড়িয়েছিলাম। টেস্ট ম্যাচেও এমন হবে কি না, সেটি ম্যাচ রেফারি অথবা দলের সঙ্গে কথা বলে একটা ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু ক্রিকেটারদের স্বাস্থ্যগত দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা চাইব বিরতির সংখ্যা বাড়ানোর জন্য। অথবা কোনো ক্রিকেটার যখনই পানি বা ছায়ার জন্য ডাকবে, ওদের জন্য এই ছাড়টা যেন দেওয়া হয়।’

গত বেশ কিছু দিন ধরে সারা দেশে চলছে তাপপ্রবাহ। আগামী আরো এক-দেড় সপ্তাহ এই অবস্থা অব্যাহত থাকার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর মধ্যেই চলছে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের অনুশীলন।

এমন দাবদাহে ক্রিকেটারদের স্বাস্থ্যকে ভাবনায় রেখে কিছু ছাড় দিয়ে রেখেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। যার যতটুকু স্বাচ্ছন্দ্য মনে হচ্ছে, ততটুকুই ব্যাটিং-বোলিং করছেন ক্রিকেটাররা। রানিং ও ফিটনেস সেশনে বাড়তি জোর দেওয়া হলেও সেটি বিসিবির চিকিৎসা বিভাগের সুনির্ধারিত নিয়মের মধ্যেই চলছে।

উচ্চ তাপমাত্রার পাশাপাশি বাতাসের আর্দ্রতার কারণে শারীরিক সমস্যা দেখা দেওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই ক্রিকেটারদের শরীরকে প্রস্তুত করার জন্য অনুশীলনের আগের সময়ের মতো পরের সময়েও সমান জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন দেবাশিষ।

‘ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে আমরা ডিহাইড্রেশন প্রিভেন্ট করার জন্য প্রিহাইড্রেশন করতে বলি। অর্থাৎ খেলার আগের দিন থেকেই নিজেদের হাইড্রেশনের অবস্থাটা ধরে রাখতে হবে। এখন সূর্যের সে সরাসরি তাপটা, সেটা কমানোর জন্য আমরা সুযোগ পেলেই ঘন ঘন বিরতির ব্যবস্থা করি। ওই সময় ছায়া বা বড় ছাতার নিচে ওদের থাকতে বলি।’

‘বিরতির সময় ওদের হাইড্রেশন দেখা হয়। ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ওদের সারা শরীরের অনাবৃত স্থানগুলো মুছে দেওয়া হয়। যখনই ওরা ভেতরে চলে আসে, তখনই আমরা শরীরের বিশেষ বিশেষ জায়গায় আমরা বরফ দিয়ে থাকি। বরফ দেওয়ার মাধ্যমে শরীরের ভেতরের তাপটাকে আমরা কমানোর চেষ্টা করি। এছাড়া আইস বাথেরও ব্যবস্থা আছে।’

অনুশীলন বা খেলা শেষ হয়ে যাওয়ার পরও কেন শরীরের সমান যত্ন নিতে হবে, সেটিও ব্যাখ্যা করেছেন এই চিকিৎসক।

‘এ ধরনের তাপের কারণে শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা যে পরিমাণে বৃদ্ধি পায়, সেটি বেশ কয়েক দিন পর্যন্ত থেকে যায়। চামড়ার ওপরের তাপমাত্রা কমে গেলেও ভেতরে আরো অনেক দিন থাকতে পারে। এজন্য খেলা শেষ হয়ে যাওয়ার পরও রক্ষণাবেক্ষণ আমাদের চালিয়ে যেতে হবে।’

‘সীমিত ওভারের খেলার সুবিধা হচ্ছে পরের দিন আমরা বিশ্রাম পাই, হিট ম্যানেজমেন্ট আমরা করতে পারছি।

কিন্তু দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে আমাদের ৫ দিন টানা মাঠে থাকতে হয়। তখন ম্যানেজমেন্ট একটু কঠিন হয়। সব মিলিয়ে আমাদের ফিজিও, ট্রেইনার যারা আছে তারা এই ব্যাপারে অভিজ্ঞ। আমাদের ক্রিকেটাররাও নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে শিখছে। সবার সম্মিলিত চেষ্টায়ই আমরা চেষ্টা করছি হিট রিলেটেড ইনজুরিগুলো কাটিয়ে নেওয়ার জন্য।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close