ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০৬ জুন, ২০২৩

নিজেকে আরো শক্তিশালী করতে চান শাহাদাত

যুব বিশ্বকাপ জয়ী দলের সবচেয়ে প্রতিভাবানদের একজন ছিলেন শাহাদাত হোসেন দিপু। তার সতীর্থদের অনেকেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলে ফেললেও দিপু এগিয়েছেন কিছুটা ধীরলয়ে। তবে যখন ডানা মেলতে শুরু করেছেন তখন তার মাঝে মিলেছে আগামী দিনের ভরসার ছবি। সেই সম্ভাবনা দেখে দিপুকে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট দলে নিয়েছেন নির্বাচকরা। বড় মঞ্চের পরীক্ষার আগে ২১ পেরুনো এ তরুণ মনে করছেন মানসিকভাবে তাকে আরো শক্তিশালী হতে হবে। রবিবার ঘোষিত আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের ১৫ জনের বাংলাদেশ দলে প্রথমবারের মতো আসেন শাহাদাত। মূলত ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে তার পারফরম্যান্সই খূলে দিয়েছে এই দ্বার। পরিণত ক্রিকেটার ছাপ রেখেছেন ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগেও।

টেকনিক তার বেশ আঁটসাঁট, হাতে আছে নান্দনিক শটের পসরা। কিছু পরিস্থিতিতে দেখিছেন টেমাপরমেন্টে প্রমাণ। সোমবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুশীলনের পর হাজির হয়েছিলেন গণমাধ্যমের সামনে। টিভি ও পত্রিকার গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলেছেন। অনেকগুলো ক্যামেরার সামনে আসার অভিজ্ঞতাও তার এদিনই সম্ভবত প্রথম। কিছুটা স্নায়ু, কিছুটা নতুনত্বের ছায়া ছিল চেহারায়। আগের দিন সন্ধ্যায় ম্যানেজারের কাছ থেকে দলে থাকার খবর পেয়ে সবার অভিনন্দনে প্রথমদিন জাতীয় দলের ক্যাম্পে যোগ দিয়েও পেয়েছেন সাদর সম্ভাষণ। জাতীয় দলের আবহে এসে তার মনে হচ্ছে স্কিলটা ধরে রেখে বাড়াতে হবে মনের জোর, স্কিল তো ভালো সবাই বলে। তবে আমি অনুভব করি মানসিকভাবে আরো শক্তিশালী হওয়া দরকার এখানে খেলার জন্য।

খুব ছোট বয়সে বাবাকে হারিয়েছিলেন। পরে বড় ভাইয়ের সহায়তার এগিয়েছেন, ধীরে ধীরে জায়গা করে নিয়েছেন সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেটের মঞ্চে। তার কাছে ব্যাপারটা স্বপ্ন পূরণের মতো, ‘খুশি তো লাগবেই, স্বাভাবিক। সবারই স্বপ্ন থাকে জাতীয় দলে খেলার। আমারও ওই একই খুশি লাগছে। দিনের পর যেন আমি আরো উন্নতি করতে পারি, সেটাই চেষ্ট থাকেব। আপাতত ভাবনার জগতেকে জটিল না করে স্কিল শান দিতে চান এই তরুণ। বাড়াতে চান মনোবল, নিজের স্কিল আরো উন্নত করার চেষ্টা করব। মানসিকভাবে আরো শক্ত হওয়াার চেষ্টা করব। এটাই আমার কাজ। এসব কাজে যত উন্নতি করব, আমার জন্য খেলাটা আরো সহজ হবে আমি মনে করি। এদিকে ঘরের মাঠে টেস্ট খেলতে নামলে এক ঝাঁক স্পিনারদের ওপর ভর করে বাংলাদেশ। অনেক সময় পেসার ছাড়াও নামতে দেখা গেছে। তবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ঘটতে যাচ্ছে পুরো বিপরীত ঘটনা তরুণ মুশফিকসহ পেস আক্রমণে আছেন তাসকিন আহমেদ, ইবাদত হোসেন, সৈয়দ খালেদ আহমেদ আর শরিফুল ইসলাম। বিশেষজ্ঞ স্পিনার তাইজুল ইসলাম আর মেহেদী হাসান মিরাজ। চোটের কারণে সাকিব আল হাসান না থাকায় এক্ষেত্রে একাদশে পরিপূর্ণ ভারসাম্য আসছে না। অর্থাৎ দুজন স্পিনারের বেশি খেলানোর কোনো অবস্থাই নেই বাংলাদেশের। ধারণা করা যেতে পারে আফগানিস্তান যেহেতু স্পিনে শক্তিশালী তাদের বিপক্ষে তাই পেসবান্ধব উইকেটে খেলবে বাংলাদেশ। তবে উইকেট নিয়ে রহস্য রাখতে প্রধান নির্বাচক জানালেন গরমের কারণেই নাকি এই ব্যবস্থা, ‘এটা খুব চ্যালেঞ্জিং সিরিজ হবে কারণ আমরা প্রচণ্ড গরমে খেলব, উইকেটও চ্যালেঞ্জিং হবে।’ মিনহাজুলের মতো গরমে চোট শঙ্কা আছে, সে জন্য বাড়তি পেসার নিয়ে রেখেছেন তারা।

২০১৯ সালে আফগানদের বিপক্ষে প্রথম ও এখন পর্যন্ত একমাত্র দেখার স্মৃতি ভীষণ তেতো বাংলাদেশের। সেবার চট্টগ্রামে স্পিন স্বর্গ উইকেট বানিয়ে চার স্পিনার নিয়ে নেমেছিল সাকিব আল হাসানের দল। একাদশে ছিল না কোনো পেসার। বৃষ্টিতে অনেক বিঘ্নিত হলেও আফগানদের কাছে সেই টেস্টে হেরে চরম বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে বাংলাদেশ। মূলত সেই অভিজ্ঞতা থেকে সতর্ক হয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। আফগানদের থেকে নিজেদের পেস আক্রমণ এগিয়ে রাখছেন নির্বাচকরা। রশিদ খানদের সঙ্গে স্পিনে এগিয়ে থাকার সুযোগ আসলে নেই। টেস্ট জিতে হারের বদলা নিতে মরিয়া বাংলাদেশ তাই ভর করছে পেসারদের ওপর, মিনহাজুলের কথাতেও সেই আভাস, ‘আমাদের পেস আক্রমণ দারুণ করছে। পেস আক্রমণের শক্তি নিয়ে আমরা খুশি। আশা করছি সবাই খেলবে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close