ক্রীড়া ডেস্ক
ইউরোপা লিগের চ্যাম্পিয়ন সেভিয়া
ইউরোপা লিগের ছয় ফাইনালের একটিতেও হারেনি সেভিয়া। অন্যদিকে এএস রোমা প্রধান কোচ হোসে মরিনহো ইউরোপিয়ান ফাইনালে অপ্রতিরোধ্য। সেভিয়া নাকি মরিনহো কার অজেয় তকমা থাকবে? এ নিয়ে জল্পনা ছিল তুঙ্গে। শেষ পর্যন্ত হেরে গেলেন পর্তুগিজ কোচ। হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে ভাগ্য নির্ধারণী খেলা টাইব্রেকারে হেরে গেছে মরিনহোর দল রোমা।
পরশু রাতে প্রথমার্ধের শেষ দিকে পাওলো দিবালার গোলে এগিয়ে ছিল ইতালিয়ান জায়ান্টরা। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে জানলুকা মানচিনির আত্মঘাতী গোলে লিড হারায় তারা। নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষ হয় ১-১ গোলে ড্রয়ে। অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের খেলায়ও ফলটা পাল্টায়নি। পরে টাইব্রেকে রোমাকে ৪-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় সেভিয়া।
ইউরোপা লিগে এটা স্প্যানিশ ক্লাবটির সপ্তম শিরোপা। সবকটি শিরোপাই সেভিয়া জিতেছে গত ১৮ বছরের মধ্যে। ট্রফি জয়ে তাদের ধারেকাছেও কেউ নেই। ইন্টার মিলান, জুভেন্টাস, লিভারপুল ও অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ সমান তিনবার করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। অথচ দুবার ফাইনাল খেলা রোমার জেতা হলো না একবারও।
প্রথমবার ৩২ বছর আগে ইউরোপা লিগের ফাইনালে তারা হেরেছিল স্বদেশি ইন্টার মিলানের বিপক্ষে। আসলে রোমার কপালে ট্রফি নেই। তা না হলে লিড নেওয়ার পরও কেন আত্মঘাতী গোল হজম করবে তারা? কেনই বা ম্যাচের শেষ মুহূর্তে ক্রিস স্মলিংয়ের হেড সেভিয়ার পোস্টে লেগে প্রতিহত হবে বল!
অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয় ভাগে রোমা অবশ্য জোরাল পেনাল্টির দাবি জানিয়েছিল। কিন্তু তাদের দাবি নাকচ করে দেন রেফারি। পেনাল্টি পায়নি সেভিয়াও। ৭৫ মিনিটে ডি-বক্সে রোমা ডিফেন্ডার ইবানেস ট্যাকল করেন লুকাস ওকাম্পসকে। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। রোমার খেলোয়াড় ও কোচদের প্রতিবাদের জেরে ভিএআর দেখে সিদ্ধান্ত পাল্টান ম্যাচকর্তা।
এরপর দুদলই একাধিক সুযোগ তৈরি করেছে। কিন্তু কাজের কাজটা করতে পারেনি। বরং ফাউল আর শরীরী ফুটবলে ম্যাচটার ছন্নছাড়া রূপ দেন। দুই দলই ম্যাচ নিয়ে যায় টাইব্রেকারের দিকে। সেখানেও গোলপোস্টর বাধা! রোমার তৃতীয় শটটাও পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। যদিও ইবানেস যেদিকে শট নিয়েছেন সেই ডান দিকেই ঝাঁপ দিয়েছিলেন সেভিয়া গোলরক্ষক ইয়াসিন বুনু।
কাতার বিশ্বকাপে মরক্কোর রূপকথার যাত্রার অন্যতম নায়ক এদিন আলো ছড়ালেন ক্লাব টুর্নামেন্টের ফাইনালেও। দুই ঘণ্টার তুমুল লড়াইয়ের ব্যবধানটা তিনিই গড়ে দিয়েছেন। রোমার দ্বিতীয় পেনাল্টি নেওয়া মানচিনির শট ঠেকিয়ে দেন মরক্কান গোলরক্ষক। সেভিয়া অবশ্য প্রথম চার শটের সবকটিতেই গোল করেছে।
একপেশে পেনাল্টি শুট আউটের শেষটায় কিছুটা নাটকীয়তা ছড়ায়। সেভিয়ার পক্ষে চতুর্থ শট নেন গঞ্জালো মন্টিয়েল। বল পোস্টে লাগে। কিছুটা আশা জাগে রোমা শিবিরে। কিন্তু ওই শটটা বাতিল করে দেন রেফারি। কারণ রোমা গোলরক্ষক রুই প্যাট্রিসি গোললাইন থেকে কিছু এগিয়ে আসায় দ্বিতীয়বার শট নেওয়ার সুযোগ পান মন্টিয়েল।
এবার অবশ্য ভুল হয়নি মন্টিয়েলের। দারুণ এক শটে খুঁজে নিলেন জালের ঠিকানা। তাতেই হলো দুর্দান্ত এক ইতিহাস। ইতিহাসে প্রথমবার বিশ্বকাপ ও ইউরোপিয়ান কোনো প্রতিযোগিতার ফাইনালের নির্ধারক গোল করলেন একজনই। প্যাট্রিসিওকে আর্জেন্টাইন তারকা একটা ধন্যবাদ দিতেই পারেন। তিনি ভুল না করলে তো ইতিহাস গড়াই হতো না মন্টিয়েলের।
"