ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ২৮ জানুয়ারি, ২০২৩

অবিশ্বাস্য ছন্দপতন মাশরাফির সিলেটের

সিলেট শহরে যে একটা ক্রিকেট উৎসব চলছে সেটি অবশ্য স্টেডিয়ামে এসে না দেখলে বোঝা কঠিন। তবে বাইরের পরিবেশটা নীরব থাকলেও ভেতরের চিত্রটা ভিন্ন। ম্যাচ শুরুর অনেক আগে থেকেই মাঠের সামনে লোকের ভিড় প্রচণ্ড। সেই জনস্রোত আস্তে আস্তে বয়ে এলো মাঠের ভেতরে। দর্শকে ঠাসা মাঠে গ্যালারির রংও বদলে গেল। হাজার হাজার দর্শকের গায়ে যে সিলেট স্ট্রাইকার্সের জার্সি! বিপিএলে এমন কিছ্ ুআগে দেখা যায়নি কখনো কোনো মাঠেই। হাতে হাতে পতাকা, প্ল্যাকার্ড, ভক্তদের কণ্ঠে স্লোগান। কিন্তু খেলা শুরু হওয়ার পর আস্তে আস্তে ভাটা পড়ে গেল সেই আবহে। সিলেটের ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিল যে শুরু হয়ে গেল! অথচ ভরা গ্যালারির দর্শকদের কিনা একরাশ হতাশা নিয়ে ফিরতে হলো বাড়ি!

গতকাল সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ছয় উইকেটে হেরে গেছে স্বাগতিক সিলেট স্ট্রাইকার্স। এবারের বিপিএলে আট ম্যাচ খেলে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার হারল মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। বিপরীতে সাত ম্যাচের চারটিতে জিতে প্লে-অফের টিকিটের দৌড়ে ভালোভাবেই থাকল রংপুর।

অবশ্য ম্যাচের ফল দেখে সিলেটের হারের ধরন বোঝানো দুষ্কর। ১৮ রান তুলতেই সাত উইকেট হারাতে হয়েছে মাশরাফি অ্যান্ড কোংকে। এমন পরিস্থিতিতে টুর্নামেন্টে সর্বনিম্ন রানে গুটিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় পড়েছিল স্বাগতিক দল। অষ্টম উইকেট তানজিম হাসান সাকিব ও মাশরাফির জুটিতে উইকেটের রাশ থামায় সিলেট।

৪৮ রানের এই জুটির ওপর দাঁড়িয়ে মান বাঁচিয়েছে স্বাগতিক শিবির। বিব্রতকর পরিস্থিতি কিছুটা পাল্টানো গেল। সিলেটের স্বস্তি যে, শেষ পর্যন্ত অলআউটের লজ্জায় পড়তে হয়নি তাদের। তবে অস্বস্তির ব্যাপারটি হলো দলীয় সংগ্রহে তিন অঙ্ক ছুঁতে পারেনি সিলেট। ৯ উইকেটে ৯২ রানে থেমে যায় তাদের ইনিংস।

৩৬ বলে সর্বোচ্চ ৪১ রান করেন তানজিম। ২১ বলে ২১ রান এসেছে মাশরাফির ব্যাট থেকে। বাকিদের কেউ যেতে পারেননি দুই অঙ্কে। তিনজন খুলতে পারেননি রানের খাতা। সমান তিনটি করে উইকেট নিয়ে সিলেটকে ধসিয়ে দিয়েছেন হাসান মাহমুদ ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই। দুটি শিকার মেহেদী হাসানের।

৯৩ রানের মামুলি লক্ষ্যে রংপুর পৌঁছে গেছে ২৬ বল হাতে রেখে। রান তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতে ২৭ রান যোগ করে সাবেক চ্যাম্পিয়নরা। ২১ বলে ১৮ রানে মোহাম্মদ নাঈমের বিদায়ে ভাঙে শুরুর জুটি। আরেক ওপেনার রনি তালুকদার অবশ্য ৩৮ বলে ৪১ রানে অপরাজিত থাকেন। শেষ দিকে মোহাম্মদ নওয়াজ ১৩ বলে ১৮ রানে টিকে থাকেন।

নবম ওভারে জোড়া ধাক্কায় অবশ্য লড়াইয়ে ফেরার আভাস দিয়েছিল সিলেট স্ট্রাইকার্স। ৬৬ রানে চতুর্থ উইকেটের পতন হয় রংপুরের। তাতে সিলেটের লড়াইয়ে ফেরার যে স্বপ্ন জেগে উঠেছিল সেটা উবে গেছে রনির দুটি করে চার-ছক্কার ইনিংসে। সিলেটের টপঅর্ডার ধসিয়ে দিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন আফগান পেসার ওমরজাই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

সিলেট স্ট্রাইকার্স : ২০ ওভার ৯২/৯ (শান্ত ৯, মুরস ২, হৃদয় ০, জাকির ০, মুশফিক ০, ইমাদ ১, পেরেরা ৩, তানজিম ৪১, মাশরাফি ২১, আমির ৩*, রাজা ২; মেহেদী ১২/২, ওমারজাই ১৭/৩, রউফ ১৯/১, হাসান ১২/৩, নাওয়াজ ১৭/০, রবিউল ১২/০)।

রংপুর রাইডার্স : ১৫.৪ ওভারে ৯৩/৪ (নাঈম ১৮, রনি ৪১*, মেহেদী ৮, মালিক ০, ওমারজাই ৪, নাওয়াজ ১৮*; আমির ২৬/১, ইমাদ ১৯/০, তানজিম ৪/০, রাজা ২৩/১, মাশরাফি ১৮/২)।

ফল : রংপুর রাইডার্স ৬ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ : আজমতউল্লাহ ওমারজাই।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close