ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ২৫ জানুয়ারি, ২০২৩

রোমাঞ্চ ছড়িয়ে সিলেটের জয়

বিপিএলের এই মৌসুমের সেরা ম্যাচ কোনটি? শেষ বলে কয়টি ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ হয়েছে? সে অর্থে বলা চলে সিলেট-বরিশালের ম্যাচের আগে শেষ ওভারে কয়টি ম্যাচ গড়ালেও এ ম্যাচের মতো উত্তেজনা হয়তো ছড়ায়নি। মিরপুরে চরম নাটকীয়তা আর রং বদলের খেলায় বরিশালকে ২ রানে হারিয়ে ম্যাচ জিতেছে সিলেট। চাপের মুখে দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে দলকে লড়াইয়ের রসদ এনে দিয়েছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। আর শেষটা করেছেন রেজাউর রহমান রাজা। শেষ ওভারে জয়ের জন্য বরিশালের প্রয়োজন ছিল ১৫ রান। ওয়াইড দিয়ে ওভার শুরু করা রাজা অবশ্য দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে জমিয়ে তোলেন ম্যাচ। পরের দুই বলে এক রান গুনলেও পঞ্চম বলে মোহাম্মদ ওয়াসিমের ছয়ে নড়েচড়ে বসে সবাই। শেষ বলে ছক্কা হলে ম্যাচ গড়াবে সুপার ওভারে, সমীকরণ ছিল এমনই। রাজার করা শর্ট বলে ফাইন লেগ দিয়ে ওয়াসিমের চারে হারের ব্যবধান কমলেও বেড়েছে আফসোস। দুই রানের দূরত্ব রয়ে গেল।

রান তাড়ায় নেমে যেমন শুরুর দরকার ছিল, সাইফ হাসানের সৌজন্যে তেমনটাই পেয়েছে বরিশাল। ১৯ বলে ৩২ করেছেন ডানহাতি এই ব্যাটার। অবশ্য ঝড় তোলার আগে দুইবার ক্যাচ দিয়েও জীবনও পেয়েছেন তিনি। সাইফের পর বিজয়ও ফিরেছেন। ৬১ রানের জুটিতে হাল ধরেছিলেন সাকিব-ইব্রাহিম। সেট হওয়া দুই ব্যাটারকে ফিরিয়েছেন সিলেটের শেষ ওভারের নায়ক রাজা। কুইকফায়ার জুটিতে ম্যাচ নিজেদের দিকেই টেনে নিচ্ছিলেন ইফতিখার-জানাত। মাশরাফিকে টানা তিন ছক্কা মারা জানাতকে দারুণ ইয়র্কারে ফিরিয়েছেন ম্যাচজুড়ে মোহাম্মদ আমির। ম্যাচের মোড় ঘোরানো এক ওভারই ছিল বটে। মাত্র এক রান দিয়েছিলেন আমির। এরপর মাহমুদউল্লাহ-মিরাজরা সম্ভাবনা জাগালেও শেষ অবধি থাকতে পারেননি কেউই। মিরাজ কাটা পড়েছেন মুশফিকের এক থ্রোতে। আর শেষ ওভারের নাটক তো দেখলেনই। ইনিংসজুড়ে দারুণ বল করেছেন ইমাদ ওয়াসিম। উইকেট না পেলেও চার ওভারে মাত্র ১৩ রান দিয়েছেন বাঁহাতি এই স্পিনার।

টসে জিতে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি সিলেটের। স্কোরবোর্ডে ১৫ রান তুলতেই ৩ ব্যাটারকে হারিয়ে বসে চলতি আসরে ৫ জয় পাওয়া দলটি। রানের খাতা না খুলেই প্রথম বলে ফিরেন মুশফিকুর রহিম। একই পথে হেঁটেছিলেন জাকির হাসানও। তিনিও প্রথম বলে আউট হয়েছিলেন মোহাম্মদ ওয়াসিমের শিকার হয়ে। এরপর তৌহিদ হৃদয়কেও ৪ রানে ফিরিয়েছিলেন এই পেসার। ১৫ রানে ৩ ব্যাটারকে হারালেও মোরেস ও শান্ত মিলে হাল ধরেন দলের।

তাদের ব্যাটে দলীয় ৫০ পার করে সিলেট। এরপর সেখান থেকে দুজনের হাত ধরেই একশ’র পথে হাঁটতে থাকে দল। কিন্তু ৪০ রান করা মোরেসকে ১৪তম ওভারে বিদায় করেন সাকিব আল হাসান। ১০০-এর আগে চতুর্থ উইকেট হারালেও থিসারা পেরেরাকে নিয়ে হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন শান্ত। ৪৮ বলে মাইলফলকে পৌঁছে অবশ্য থেমে যাননি শান্ত। থিসারার সঙ্গে জুটিবেঁধে আরো আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন শান্ত। শেষ ওভারে দলের রান গিয়ে দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ১৫৯। শান্ত সে সময় অপরাজিত ৮৪ রানে।

সেঞ্চুরির সুযোগ থাকলেও শেষ ওভারে সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি শান্ত। ওভারের তৃতীয় বলে থিসারাকে কামরুল ইসলাম রাব্বি আউট করলেও শেষ বলে শুধু ব্যাটিংয়ের সুযোগ পান এই ওপেনার। সে বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৮৯ এ অপরাজিত থাকেন তিনি। সিলেটের ইনিংস শেষ হয় ১৭৩ রানে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

সিলেট স্ট্রাইকার্স : ১৭৩/৫, ২০ ওভার

ফরচুন বরিশাল : ১৭১/৮, ২০ ওভার

ফলাফল : সিলেট স্ট্রাইকার্স ২ রানে জয়ী

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close