ক্রীড়া ডেস্ক
প্রথম লাল কার্ড পেলেন হেনেসি
শেষ চমক ইরানের হৃদয় ভাঙল বেলদের
কাগজে-কলমে ওয়েলসের চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও ইরান মাঠের লড়াইয়ে দেখাল ভিন্ন চিত্র। একের পর এক আক্রমণে ম্যাচের অধিকাংশ সময় রক্ষণ সামলাতে ব্যতিব্যস্ত থাকতে হলো ড্রাগনসদের। তবে ভাগ্য সঙ্গ দিচ্ছিল না এশিয়ার পরাশক্তিদের। দুবার তাদের নিশ্চিত গোল প্রতিহত হলো গোলপোস্টে। কিন্তু শেষদিকে ওয়েলস গোলরক্ষক ওয়েইন হেনেসি লাল কার্ড দেখলে বাড়তি খেলোয়াড়ের সুবিধা আদায় করে নিল ইরান। ঘটনাবহুল ম্যাচে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করে গেল কার্লোস কুইরোজের শিষ্যরা। যোগ করা সময়ের দুর্দান্ত দুই গোলে দুর্দান্ত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ল তারা। গতকাল শুক্রবার আল রাইয়ানের আহমেদ বিন আলি স্টেডিয়ামে কাতার বিশ্বকাপের ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে গ্যারেথ বেলের ওয়েলসকে ২-০ গোলে হারাল ইরান।
১৯৫৮ সালের পর প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলতে নামা ওয়েলস আগের ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছিল। ইরানের বিপক্ষেও তারা ছিল না ছন্দে। অন্যদিকে পার্সিয়ানরা একের পর এক সুযোগ নষ্ট করে হতাশার সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছিল। দ্বিতীয়ার্ধে নির্ধারিত সময়ের সঙ্গে যোগ করা হয় ১৩ মিনিট। আর সেখানেই বাজিমাত করে ইরান। অষ্টম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে রুজবেহ চেশমি দুর্দান্ত শটে অবিশ্বাস্য গোল করেন। তিন মিনিট যেতেই রামিন রেজাইয়ান করেন দ্বিতীয় গোল।
বিশ্বকাপে ‘বি’ গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথম জয়ের খোঁজে মুখোমুখি হয়েছিল ইরান ও ওয়েলস। আহমেদ বিন আলী স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধ শেষে দুই দলের কেউই গোলের দেখা পায়নি। তবে ইরানের জন্য প্রথম ৪৫ মিনিটে হতাশার ব্যাপার ছিল, তারা জালের দেখা পেলেও এগিয়ে যেতে পারেনি। পারস্যের দেশটি ১৫ মিনিটে লক্ষ্যভেদ করেছিল। কিন্তু অফসাইডের কারণে গোল বাতিল হয়ে যায়। রবার্টসের বল দখলে নিয়ে ইরানের ঘোলিজাদেহ পাঠান আজমোনকে। তার কাছ থেকে ফিরতি পাসে গোল করেন ঘোলিজাদেহ, কিন্তু ভিএআরে দেখে অফসাইডের বাঁশি বাজান রেফারি।
শুরু থেকে ইউরোপিয়ান দলটি পজিশনিং ফুটবলে মনোযোগী হলেও পাল্টা-আক্রমণে বেশ পারদর্শিতা দেখায় ইরান। তবে দুর্ভাগ্যের কবলে পরে তারা। ৫২তম মিনিটে দুবার পোস্ট বাধা পায় তাদের চেষ্টা। তবে আশা হারায়নি এশিয়ার দলটি। যোগ সময়ের অষ্টম ও একাদশ মিনিটে রুজবেহ চেশমি ও রামিন রেজাইয়ানের লক্ষ্যভেদে ওয়েলস বধের স্বাদ পায় ইরান।
ম্যাচের ৮৪তম মিনিটে সতীর্থের থ্রু পাস ধরতে এগিয়ে গিয়েছিলেন আগের ম্যাচের জোড়া গোলদাতা মেহদি তারেমি। সামনে কোনো ডিফেন্ডার না থাকায় বল আটকাতে বক্স থেকে বেরিয়ে আসেন গোলরক্ষক হেনেসিও। তবে বল ধরতে তো পারেননি, উল্টো মেহদিকে আঘাত করে ফেলেন তিনি।
তবে ঘটনার আকস্মিকতায় ঠিকভাবে বুঝতে পারেননি গুয়েতেমালার রেফারি মারিও এস্কোবার। হলুদ কার্ড দেখান তিনি। হাতে কার্ড নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অবশ্য ইরানি খেলোয়াড়রা প্রতিবাদ করেন বেশ জোরেশোরেই। তবে লাভ হয়নি। সিদ্ধান্তে অনঢ় থাকেন রেফারি। খেলাও শুরুর নির্দেশ দেন। তবে পরে ভিএআরে বদলে যায় সিদ্ধান্ত।
আর প্রতিপক্ষের একজন কমে যাওয়ার পর ইরানের জোশ যেন আরো বেড়ে যায়। একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে। যদিও গোলের দেখা মিলছিল না। নির্ধারিত সময়ের পর যোগ করা সময়ও যখন শেষের পথে, তখনই দুটি গোল পেয়ে যায় ইরান। ভালোভাবেই টিকে রইল বিশ্বকাপে। উল্লেখ্য, ভিএআরের ব্যবহার শুরু হয়েছে গত বিশ্বকাপ থেকেই। তবে এবার তার ব্যবহার নিখুঁত করতে অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে কাতার বিশ্বকাপে।
"