ক্রীড়া প্রতিবেদক
ব্যাটিং ব্যর্থতায় বাংলাদেশের হার
ব্যাটারদের ব্যাটে বড় ইনিংস না থাকায়, গতকাল হার দিয়ে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করল বাংলাদেশ। আসরের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ২১ রানে হেরেছে পাকিস্তানের কাছে।
প্রথমে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ১৬৭ রান করে পাকিস্তান। জবাবে ৮ উইকেটে ১৪৬ রান করে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের মোহাম্মদ রিজওয়ান ৫০ বলে অনবদ্য ৭৮ রান করে ম্যাচে বড় প্রভাব ফেলেন। তবে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটারই ম্যাচে প্রভাব ফেলতে পারেননি। শেষদিকে ইয়াসির আলির ২১ বলে অপরাজিত ৪২ রান শুধু হারের ব্যবধানই কমিয়েছে।
ক্রাইস্টচার্চে গতকাল পাকিস্তান ২০ ওভারে তোলে ১৬৭ রান। ওপেন করতে নেমে শেষ পর্যন্ত দলকে টেনে নিয়ে মোহাম্মদ রিজওয়ান অপরাজিত থাকেন ৫০ বলে ৭৮ রান করে। আইসিসি টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়ের শীর্ষ ব্যাটসম্যান সবশেষ ১২ ম্যাচে পঞ্চাশ ছিলেন এই নিয়ে ৮টিতেই!
লম্বা ভ্রমণের পর আগের রাতে দলের সঙ্গে যোগ দেওয়া অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে এই ম্যাচে খেলায়নি বাংলাদেশ। নেতৃত্ব দেন নুরুল হাসান সোহান। হ্যাগলি ওভালে টস জিতে ব্যাটিংয়ে পাঠান প্রতিপক্ষকে।
পাকিস্তানকে যথারীতি ভালো শুরু এনে দেন রিজওয়ান ও বাবর আজম। খুব গতিময় না হলেও ভালো ভিত গড়ে দেন তারা। প্রথম ওভারটি যদিও বাংলাদেশের জন্য ছিল আশা জাগানিয়া। সুইং ও মুভমেন্ট মিলিয়ে ওভারে স্রেফ ১ রান দিয়ে শুরু করেন তাসকিন আহমেদ। কিন্তু এরপর অন্যরা ধরে রাখতে পারেননি সে ধারা। প্রথম চার ওভারে চার বোলার ব্যবহার করেন অধিনায়ক। দ্বিতীয় ওভারে মুস্তাফিজুর রহমানের বলে দুটি বাউন্ডারি মারেন বাবর, পরের ওভারে হাসান মাহমুদের ওভারেও দুটি। নাসুম আহমেদের প্রথম ওভারে ছক্কা মারেন রিজওয়ান।
চতুর্থ ওভারে বাবরকে রান আউট করার সুবর্ণ সুযোগ আসে, কিন্তু সাব্বির রহমান বলই ধরতে পারেননি ঠিকমতো।
পাওয়ার প্লেতে ৪৩ রান তুলে জুটির ফিফটিও চলে আসে একটু পর। এই নিয়ে ১৫ বার পঞ্চাশ স্পর্শ করল এই দুজনের জুটি।
অষ্টম ওভারে আক্রমণে এসে ৫২ রানের জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তার প্রথম বলে সুইপ করতে গিয়ে আউট হন বাবর (২৫ বলে ২২)। দ্বিতীয় উইকেটে রিজওয়ান ও শান মাসুদ গড়েন আরেকটি কার্যকর জুটি। মাসুদ শুরুতে একটু সময় নিলেও পরে পুষিয়ে দেন। বিপজ্জনক হয়ে ওঠার মুখে তাকে থামান নাসুম আহমেদ (২২ বলে ৩১)।
পাকিস্তানের পরের ব্যাটসম্যানরা খুব বেশি সময় টিকতে পারেননি কেউ, খেলতে পারেননি ঝড়ো ইনিংস। তবে এক প্রান্ত থেকে উইকেট ধরে রাখা আর রান বাড়ানো, সবই করে যান রিজওয়ান। ৩৮ বলে ফিফটি ছুঁঁয়ে পরের ১২ বলে তিনি করেন ২৮ রান। শেষ ৫ ওভারে পাকিস্তান তোলে ৫৮ রান।
১৬৮ রানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ কখনোই সেভাবে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেনি পাকিস্তানকে। সাব্বির ও মিরাজের উদ্বোধনী জুটির ‘ফাটকা’ আবার চেষ্টা করা হয় এ দিন। কিন্তু কাজে লাগেনি।
হারিস রউফকে দুর্দান্ত একটি শটে লং অন দিয়ে ছক্কা মারলেও মিরাজ করতে পারেন ১১ বলে ১০ রান। আরো একটি ম্যাচে অস্বস্তিময় উপস্থিতি শেষে সাব্বির ফেরেন ১৮ বলে ১৪ করে।
লিটন দাস তিনে নেমে চেষ্টা করেন রানের গতিতে দম দেওয়ার। শুরুতে একটু সময় নিয়ে পরে নিজের মতোই দারুণ কিছু শট খেলেন তিনি। আফিফ হোসেনের সঙ্গে জুটি গড়ে ওঠার ইঙ্গিতও মেলে।
কিন্তু বড় ইনিংস খেলতে পারেননি কেউই। ২৫ বলে ৩৫ করে লিটন বিদায় নেন মোহাম্মদ নাওয়াজের বলে সøগ সুইপ খেলে। বাঁহাতি এই স্পিনারের পরের বলে আলসে শটে এলবিডব্লিউ হয়ে যান নতুন ব্যাটসম্যান মোসাদ্দেক।
পরের ওভারে যখন আফিফও বিদায় নেন (২৩ বলে ২৫), বাংলাদেশের লড়াই করার আশাও শেষ হয়ে যায়। অধিনায়ক সোহানও পারেননি ভালো কিছু করতে।
সব হারানোর পর শেষ দিকে কিছুটা বিনোদন দেন ইয়াসির। নিজের টি-টোয়েন্টি সামর্থ্যরে ঝলক দেখিয়ে শাহনাওয়াজ দাহানির ওভারে তিনি মারেন চার ও ছক্কা, শেষ ওভারে রউফকে মারেন তিন চার ও এক ছক্কা। ৫ চার ও ২ ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ২১ বলে ৪২ করে।
ইয়াসিরের আত্মবিশ্বাসের জন্য এই ইনিংস কাজে দেবে দারুণ, তবে বাংলাদেশ দলের জন্য আশার আলো খুব একটা নেই এই ম্যাচ থেকেও। পরের ম্যাচে আগামীকাল তাদের প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড।
"