ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০২ অক্টোবর, ২০২২

তীব্র গরমও থামাতে পারেনি তাদের উল্লাস

গত কয়েকদিন ধরেই সিলেটের তাপমাত্রা ঊর্ধ্বমুখী। গতকাল তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি হলেও অনুভূতি ছিল ৪২ ডিগ্রির মতো। এমন তীব্র গরমে যেখানে ঘরে থাকা দায়, সেখানে ছাদহীন, গ্যলারিহীন একটুকরো জায়গাতে বসেই রুমানা-সালমা-শামীমাদের জন্য গলা ফাটিয়েছেন শ’-পাঁচেক দর্শক। থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে তীব্র গরমের মধ্যেই মেয়েদের পারফরম্যান্সে ‘বাংলাদেশ বাংলাদেশ’ বলে গলা ফাটিয়েছেন তারা। গরম ও পানির অভাবে তীব্র কষ্ট পেলেও সেই কষ্ট আর কষ্ট থাকেনি দর্শকদের।

আশরাফুল ইসলাম ও মিথিলা আক্তার দম্পতি সুনামগঞ্জ থেকে এসেছেন মেয়েদের খেলা দেখতে। পুরো পরিবার নিয়ে মাত্র একটি ছাতা মাথায় দিয়ে পাঁচজন পুরোদমে ম্যাচ উপভোগ করছেন। পেশার সরকারি কর্মকর্তা আশরাফুল বাংলা ট্রিবিউনকে জানালেন, কেন তিনি মাঠে এসেছেন, ‘আমরা টিভিতে তো খেলা দেখি। কিন্তু মাঠে খেলা দেখার অন্যরকম অনুভূতি। এখানে আউটার মাঠে খেলা হচ্ছে, শুনেছি ভেতরের মাঠেও হবে। সেখানে ভালো সুযোগ-সুবিধা থাকবে দর্শকদের। এখানে রোদে কষ্ট হলেও সরাসরি খেলা দেখতে পারার আনন্দ পাচ্ছি। এর আগে ঢাকায় মাঠে গিয়ে খেলা দেখেছি।’

তীব্র গরমও তাদের উল্লাস থামাতে পারেনি পাশে বসে থাকা মিথিলা আক্তারও চুপ করে থাকলেন না। তার আশা, মেয়েরা আরও একবার এশিয়া কাপের ট্রফি জিতবে, ‘আমাদের দেশের মেয়েরা ফুটবলে একটা ট্রফি অর্জন করেছে। এখন ক্রিকেটে এসেছে। সব কিছু মিলিয়ে আমাদের মধ্যে উন্মাদনা কাজ করেছে বলে সুনামগঞ্জ থেকে এখানে এসেছি। আমরা খেলা দেখার জন্য এসেছি। আমাদের আরও ম্যাচ দেখার ইচ্ছা আছে। ছেলেদের ক্রিকেট যেরকম উন্নতি করেছে, আমরা আশা করবো মেয়েদের ক্রিকেটও উন্নতি করবে।’

রেজাউল করিম ও হারুনুর রশিদ নামে দুই বন্ধু খেলা দেখতে এসেছেন। তারা মনে করেন, মেয়েদের মাঠে এসে সাপোর্ট দিতে পারলে তাদের আরও এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে, ‘মেয়েদের ক্রিকেট পিছিয়ে আছে। আমরা সাপোর্ট না করলে ওরা কীভাবে এগিয়ে যাবে। তাই এই গরমে আমরা মাঠে এসেছি।’

‘টাইগার শোয়েব’ নামে খ্যাত শোয়েব আলী বাংলাদেশ পুরুষ দল যে প্রান্তেই যাক না কেন, ছুটে যান সেখানে। এবার চলে এসেছেন সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে। শোয়েবকে ঘিরেই উল্লাসে মেতে উঠেছিলেন দর্শকরা। শোয়েব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘আমার অনুভূতি অন্যরকম। অনেকদিন পর নিজের দেশের মাটিতে একটি টুর্নামেন্ট হচ্ছে। ছেলেদের এশিয়া কাপ হলে হয়তো দাঁড়ানোর মতো জায়গা থাকতো না। ২০১৮ সালে মেয়েদের এশিয়া কাপ দেশের বাইরে হয়েছিল, সেভাবে উদযাপন করতে পারিনি। আমি অপেক্ষায় আছি এবার দেশে উদযাপন করার।’

জৈন্তাপুর থেকে রুবেল নামেন এক ক্রিকেটপ্রেমী এসেছেন খেলা দেখতে। নতুন ভেন্যুর অভিষেক ম্যাচ তাকে টেনে নিয়ে এসেছে। পাশাপাশি মেয়েদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স মাঠে আসতে উজ্জীবিত করেছে তাকে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তীব্র রোদের মধ্যে পুরো ম্যাচ দেখেছেন তিনি। খেলা দেখতে কেবল দেশেই নয়, বিদেশেও গেছেন এই তরুণ। ‘বিশ্বের যেখানেই হোক আমি বাংলাদশেকে সাপোর্ট করতে যাওয়ার চেষ্টা করি। কখনও যেতে না পারলে টিভিতে বসেই খেলা দেখি। এবার যখন সিলেটে ম্যাচ এলো, আমার সব কাজ ফেলে তাদের উৎসাহ দিতে ছুটে এসেছি। মেয়েরা এমনিতেই উৎসাহ কম পায়, আমরা না এলে কীভাবে হবে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close