ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০৪ আগস্ট, ২০২২

ছেলেদের খেলায় ‘হতাশ’ সুজন

টানা ম্যাচ হারের সঙ্গে খুব বাজে পারফর্ম। যে কারণে জিম্বাবুয়ে সফরের আগে টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্ব¡ হারান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শুধু যে নেতৃত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল তা নয়, দেওয়া হয়েছিল বিশ্রামের নামে বাদ।

মাহমুদউল্লাহ বাদ পড়ায় নুরুল হাসান সোহানকে অধিনায়ক করে তরুণ একটা দল পাঠানো হয় জিম্বাবুয়েতে। তরুণ দল বলা হলেও দলের বেশ কয়েকজন ছিলেন ৩০ কিংবা ৫০টির বেশি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা সদস্য।

বাংলাদেশ দল জিম্বাবুয়ে সফরের আগে বলা হচ্ছিল আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ কিংবা ভবিষ্যতের কথা ভেবে নতুন করে দল সাজানোর পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন দেশ ছাড়ার আগে বলেছিলেন, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হলেও আপসেট হবেন না তিনি।

‘সত্যি বলতে জিম্বাবুয়েতে যদি আমরা ৩-০ ব্যবধানে হেরে যাই তবুও আমি বিন্দুমাত্র আপসেট হব না। কারণ আমি এই চাপ ওদের দিতেই চাই না। আমি চাই ছেলেরা স্বাধীনভাবে খেলুক, ফ্রি হয়ে খেলুক। ওদের বডি-ল্যাঙ্গুয়েজ কি আছে, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট আমরা টি-টোয়েন্টির মতো খেলতে পারি কি না, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’

সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাজে বোলিং আর ফিল্ডিংয়ের জন্য ১৭ রানে হেরে যায় টাইগাররা। দ্বিতীয় ম্যাচে ৭ উইকেটের জয়ে ঘুরে দাঁড়ালেও সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ১০ রানে হেরে প্রথমবার জিম্বাবুয়ের কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারে বাংলাদেশ।

শেষ ম্যাচে বোলিংটা ভালো করলেও নাসুম আহমেদ এক ওভারে ৫ ছক্কা আর ১ চারে দেন ৩৪ রান। ১৫৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালেও শেষ ওভারে ১৯ রান প্রয়োজন থাকলে নিতে পারেননি দলের অন্যতম হার্ড হিটার আফিফ হোসেন।

ব্যর্থ হয়েছেন লিটন দাস, এনামুল হক, নাজমুল হোসেন শান্ত কিংবা দুই ম্যাচ পর আবারও দলে ফেরা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

২-১ ব্যবধানে হারের পর মন ভালো নেই খালেদ মাহমুদ সুজনের। সিরিজ শুরু আগে হোয়াইটওয়াশ হলেও আপসেট হবেন না বলা সুজন বেশ হতাশ বলে জানিয়েছেন গণমাধ্যমকে।

‘আমি খুব হতাশ। আমরা বারবার বলি নিজেদের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে। কিন্তু আমরা কবে সে শিক্ষাটা নেব। আমি পুরোপুরি ক্রিকেটারদের দোষ দেব। তাদের প্রয়োগ সম্পূর্ণ ভুল ছিল।’

মাত্র ১৫৬ রান তাড়া করে জয় পাওয়াটা সহজ ছিল না বলে মনে করছেন সুজন। তিনি মনে করেন, ছেলেদের যদি ছক্কা মারার আত্মবিশ্বাস না থাকে তাহলে তো মুশকিল।

‘এখানে আমাদের জেতাটাই স্বাভাবিক ছিল। হারটা ছিল অস্বাভাবিক। আমরা জানি যে ওভারে আমাদের ১০-১২ করে লাগবে। কেউ দেখলাম যে একটা ছয় মারার চেষ্টা করছে। সবাই ২-১ করে নিচ্ছে। আমি একটা স্কোর করে নিজের জায়গাটা ঠিক রাখলাম, এটা কি ওই ধরনের কিছু কি না, আমি ঠিক জানি না। আপনি যদি ১০০ স্ট্রাইক রেটে খেলেন তাহলে এখানে রান তাড়া করে জিততে পারবেন না। একজন-দুজনকে তো শট খেলতে হবে। ওদের দুজন ব্যাটসম্যানের স্ট্রাইক রেট দেখুন। এখানে ভিন্ন কিছু করার প্রয়োজন ছিল না। শর্ট বলকে যদি পুল করে ছক্কা মারার আত্মবিশ্বাস না থাকে তাহলে তো মুশকিল।’

ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ পারফর্ম করে দলে জায়গা করে নিয়েছেন একেক জন। ওপেনার মুনিম শাহারিয়ার সবশেষ বিপিএলে দ্রুত রান তুলে জায়গা করে নেন দলে। পারভেজ হোসেন ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি লিগে করেন দ্রুততম সেঞ্চুরি। আফিফ, শান্তরা পরীক্ষিত।

এ নিয়ে সুজন বলেন, ‘যাদের নেওয়া হয়েছে তারা সবাই ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করা ক্রিকেটার। সবাই পারফর্ম করেই এখানে এসেছে। মুনিম শাহরিয়ারের যদি কথা বলেন, পারভেজের কথা বলেন, দুজনই লোকাল টি-টোয়েন্টিতে পারফর্ম করা ক্রিকেটার। আপনি সেরা পারফর্মারদেরই তো নিয়ে এসেছেন। তারা যদি পারফর্ম না করে তাহলে কী আর করার থাকে!’ দলের এমন ব্যর্থতায় কী করণীয় সেটা ক্রিকেটারদের ওপরেই ছেড়ে দিয়েছেন খালেদ মাহমুদ।

‘করণীয়টা কী এটা ক্রিকেটাররাই বলতে পারবে। এমন না যে ছেলেরা এখন দলে আসছে আর যাচ্ছে। তারা একটা সময়ের জন্য সুযোগ পাচ্ছে। তারা জানে যে তাদের জায়গা নিয়ে এত কাড়াকাড়ি নেই। তাদের ঠিকঠাক সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এমন অবস্থায় তো মন খুলে খেলা উচিত। আমি ওই মন খুলে খেলাটা দেখতে পাচ্ছি না।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close