ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ২৭ জুন, ২০২২

‘মৌলিক’ সমস্যা ক্রিকেটারদের

টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের ধারাবাহিক ব্যর্থতায় বিরক্ত সমর্থক, ক্রিকেটপ্রেমীরা। অ্যান্টিগার পর সেন্ট লুসিয়াতেও স্বাগতিকদের চাপে বাংলাদেশ দল। ব্যাটিং, বোলিংয়ে পিছিয়ে টাইগাররা। ম্যাচের লাগামও হারিয়ে গেছে সাকিব বাহিনীর হাত থেকে। টানা ব্যর্থতার গ্লানি ছুঁয়ে যাচ্ছে টাইগারদের কোচিং স্টাফের সদস্যদেরও। হেড কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো সেন্ট লুসিয়া টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশের টেস্ট সংস্কৃতিকেই কাঠগড়ায় তুললেন।

বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার ইতিহাস পেরিয়েছে দীর্ঘপথ। এখনও ব্যাটিং হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়া, বোলিংয়ে ধুঁকতে থাকা, ঠিক সময়ে রিভিউ না নেয়া, নড়বড়ে ফিল্ডিং, এমনকি টেস্ট খেলার মানসিকতাও সেই পুরনো ধারার রয়ে গেছে। অগোছালো বোলিং, বালিরবাধের মতো টপ ও মিডল অর্ডারÍ সব মিলিয়ে টেস্টে অবস্থা এক কথায় করুণ! প্রতিটা সিরিজ বা ম্যাচ শেষে তাই থাকে বিস্তর আক্ষেপের তালিকা।

সবশেষ সেন্ট লুসিয়াতেও চলছে হতাশা, ক্ষণে ক্ষণে জন্মাচ্ছে আক্ষেপ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দারুণ কিছুর আভাস দিয়ে বোলারদের দায়হীন বোলিংয়ে ম্যাচের লাগাম এখন অনেকটাই নাগালের বাইরে। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের তোলা ২৩৪ রানের জবাবে ১৩২ তুলতেই ৪ উইকেট হারায় উইন্ডিজ। পরিষ্কারভাবেই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল, কিন্তু হতাশায় পুড়িয়েছেন টাইগার বোলাররা।

ড্যারেন স্যামি ন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বোলারদের সেই হতাশা ছুঁয়ে গেছে ডমিঙ্গোকে। দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনে গোছালো বোলিং করার পর খেই হারানো বোলিংয়ে হতাশ সাউথ আফ্রিকান কোচ।

‘গল্পটা টেস্ট ক্রিকেটের মতোই, একটা সেশন ভালো গেছে আমাদের, আরেকটা খুবই বাজে। ছেলেরা হয়তো অধৈর্য হয়ে গিয়েছিল। যথেষ্ট পরিমাণে আঁটসাঁট বোলিং করে ওদেরকে চাপে ফেলতে পারিনি, যেটা পেরেছিলাম প্রথম সেশনে। খুবই হতাশার এটি।’

কোচের হতাশা আক্ষেপে পরিণত হয়েছে বোলারদের ‘বেসিক’ কিছু ভুল দেখে। তিনি চান ডট বল করে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলতে। রানরেট নিয়ন্ত্রণে রাখতে। উইকেট নেয়ার সেই প্রক্রিয়া থেকেই বোলাররা বারবার বের হয়ে আসছেন। শেষপর্যন্ত ডমিঙ্গো প্রশ্ন তুলেছেন দেশের টেস্ট সংস্কৃতির বর্তমান অবস্থান নিয়েও।

‘পুরোপুরি বলা কঠিন। টেস্ট ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দীর্ঘ ইতিহাস ও সংস্কৃতি আছে। আশি-নব্বইয়ের দশকে তারা বিশ্বের সেরা টেস্ট দল ছিল। দলটি তাই জানে, টেস্ট ম্যাচ কীভাবে খেলতে হয়। ওদের আইকনিক অনেক ক্রিকেটার আছে, যারা টেস্ট ম্যাচে ভালো করেছেন। আমাদের টেস্ট ম্যাচ সংস্কৃতি যেখানে থাকা উচিতে এখনও সেখানে নেই।’

টেস্টের পথচলার দীর্ঘ ইতিহাসে বারবার হোঁচট খেয়ে এগিয়েছে বাংলাদেশ। গৌরবের মুহূর্ত এসেছে কমই। হতাশা আর আক্ষেপের ঘটনা ভুরিভুরি। যথেষ্ট পরিমাণ ধৈর্য না ধরে মৌলিক জায়গাগুলোতে ভুল করাই বাংলাদেশকে ডোবাচ্ছে, মনে করেন ডমিঙ্গো।

‘ধৈর্য ধরা, শৃঙ্খলা রাখা, এই প্রক্রিয়াগুলো আমরা জোর দিয়ে বলে যাচ্ছি। কিন্তু যথেষ্ট লম্বা সময় ধরে আমরা তা করতে পারছি না। আমরা এক সেশনে করতে পারি, আরেক সেশনে পারি না। লম্বা সময় চাপ ধরে রাখতে পারছি না।’

‘আমাদের বেশ কজন ক্রিকেটার এখন ফর্ম ও ছন্দ খুঁজে ফিরছে। এখান থেকে বের হওয়ার একমাত্র উপায় লম্বা সময় ব্যাট করা। ৩০-৪০ রানের ইনিংস অনেক হচ্ছে, দু-একটা ফিফটি হচ্ছে। কিন্তু কাইল মেয়ার্স যেমন ১২৬ ছাড়িয়ে যাচ্ছে, তেমন বড় ইনিংস কেউ খেলতে পারছে না। দলের রান ২৩০ আর ৪০০ হওয়ার মধ্যে মূল পার্থক্য এখানেই।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close