ক্রীড়া ডেস্ক

  ১২ অক্টোবর, ২০২১

মেসির জয়ের দিনে নেইমারের ড্র

শুরুটা করেছিলেন লিওনেল মেসি। এরপর রদ্রিগো ডি পল, লাওতারো মার্টিনেজদের কল্যাণে আর্জেন্টিনা পেল আরো দুই গোল। তাতে উরুগুয়েকে ৩-০ গোলে হারিয়ে এক ম্যাচ পর জয়ে ফেরাটাও হয়ে গেল কোচ লিওনেল স্ক্যালোনির শিষ্যদের। আগের ম্যাচে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে দারুণ খেলে, আধিপত্য বিস্তার করেও জিততে পারেনি স্ক্যালোনির দল। এক ম্যাচ পরই জয়ে ফিরলেন মেসিরা। তবে স্কোরলাইন যতটা সহজ বলছে, আর্জেন্টিনার জয়টা ততটা সহজেও আসেনি। প্রথমার্ধে কম করে হলেও তিনটি নিশ্চিত গোলের হাত থেকে দলকে বাঁচিয়েছেন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। শুরুটা হয়েছিল ম্যাচের অষ্টম মিনিটে। লুইস সুয়ারেজের দারুণ এক বাইসাইকেল কিক রুখে দেন তিনি। এর কিছু পরে আবারও দৃশ্যপটে সেই সুয়ারেজ। দুরূহ কোণ থেকে করা তার শট কোনোক্রমে ঠেকান মার্টিনেজ, এরপর ফিরতি চেষ্টায় ফেদেরিকো ভালভার্দের জোরালো শটও রুখে দেন অ্যাস্টন ভিলা গোলরক্ষক। ফলে শুরুর ২০ মিনিটেই দুবার বড় বিপদে পড়তে পড়তেও রক্ষা পায় আর্জেন্টিনা। নিজেদের মাঠ এস্তাদিও মন্যুমেন্তালে আর্জেন্টিনা ম্যাচে ফিরেছে এরপর। লাওতারো মার্টিনেজ সহজ সুযোগ নষ্ট করেছেন দুটি, জিওভানি লো চেলসোর শট ফিরেছে ক্রসবারে প্রতিহত হয়ে। এরপর মেসির দুটি শট রুখে দিয়েছেন উরুগুয়ে গোলরক্ষক ফার্নান্দো মুসলেরা, তাতে আর্জেন্টিনার গোলের অপেক্ষাটা বাড়ছিল ক্রমেই।

আর্জেন্টিনার সে অপেক্ষাটা শেষ হয় ম্যাচের ৩৮ মিনিটে। তাতে অনেকটা ভাগ্যের ছোঁয়াও ছিল বৈকি। বক্সের অনেকটা বাইরে থেকে উরুগুয়ে বিপৎসীমায় একটা পাস লব করে বাড়িয়েছিলেন মেসি। স্ট্রাইকার লাওতারো ছুঁতে পারেননি সেটা, এরপর গোলরক্ষক মুসলেরাকেও ফাঁকি দিয়ে বলটা আছড়ে পড়ে উরুগুয়ের জালে। তাতে মেসি ছুঁয়ে ফেলেন ৮০ গোলের মাইলফলক। এমন এক কীর্তি যা নেই কোনো দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলারের।

অন্য দিকে আগের ম্যাচে ভেনিজুয়েলার বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েও দারুণভাবে ৩-১ গোলে জিতেছিল ব্রাজিল। কিন্তু রেকর্ড বিশ্বকাপজয়ীরা কলম্বিয়ার বিপক্ষে যেন নিজেদের হারিয়ে খুঁজল। ফলে কলম্বিয়ার বিপক্ষে গোলশূন্য ড্রয়েই বাধ্য হতে হয়েছে নেইমারদের। চলতি বিশ্বকাপ বাছাইয়ে টানা ৯ জয়ের পর এই প্রথম পয়েন্ট খোয়াল কোচ তিতের শিষ্যরা। তবে স্কোরলাইন কিংবা পরিসংখ্যান, কোনোটাই অবশ্য ম্যাচের আসল চিত্র তুলে ধরতে পারবে না। আক্রমণ প্রতি-আক্রমণে ব্রাজিল রক্ষণকে ব্যতিব্যস্ত রেখেছে কলম্বিয়া। সেটা একেবারে ম্যাচের শুরু থেকেই। প্রথমেই হুয়ান কুইন্তেরোর শট ঠেকাতে হয় ব্রাজিল গোলরক্ষক অ্যালিসনকে। এর একটু পরই তার ক্রস এসে আছড়ে পড়ে ব্রাজিল রক্ষণে, কিন্তু ইয়েরি মিনা পারেননি তাতে মাথা ছোঁয়াতে। প্রতিপক্ষের মাঠে ম্যাচের সময় যত গড়িয়েছে, ব্রাজিল নিজেদের ধাতস্থ করেছে ততই। ১৪ মিনিটে আসে প্রথম উল্লেখযোগ্য সুযোগ। নেইমারের পাস থেকে লুকাস পাকেতার শটটা একটুর জন্য বেরিয়ে যায় লক্ষ্যের বাইরে দিয়ে। মিনিট ছয়েক পর আবারও কলম্বিয়ার আক্রমণ আসে ব্রাজিলের বিপৎসীমায়। সে যাত্রায় নিখুঁত এক চ্যালেঞ্জে জিতে সেলেসাওদের রক্ষা করেন পিএসজি ডিফেন্ডার মারকিনিয়োস। বিরতির আগে গোল না হলেও আক্রমণ হচ্ছিল বেশ কিছু, কিন্তু বিরতির পর যেন সেটাও হলো না। ফলে গোলের সুযোগ পাল্লা দিয়ে কমছিল দুই দলেরই। সময় যত গড়িয়েছে দুই দল যেন রক্ষণে মনোযোগী হয়েছে তত। তাই দূরপাল্লার চেষ্টায় গোল পেতে চেয়েছিল স্বাগতিকরা। বক্সের বাইরে থেকে ৬৪ মিনিটে মাতিয়াস উরিবের শটটা দারুণ দক্ষতায় ঠেকাতে হয় অ্যালিসনকে, এর কিছু পরেই কুইন্তেরোর শটও একই রকমভাবে রুখে দেন লিভারপুল গোলরক্ষক। দক্ষতার পরিচয় দিতে হয়েছে কলম্বিয়া গোলরক্ষককেও। লিডস মিডফিল্ডার রাফিনিয়ার শট ৭৬ মিনিটে ঠেকান ডেভিড অসপিনা। আক্রমণ-প্রতি আক্রমণ হলেও দুই দল গোলের দেখা পায়নি শেষ পর্যন্ত। ফলে ড্রয়েই বাধ্য হতে হয় নেইমারের ব্রাজিলকে। এর ফলে ১০ ম্যাচ শেষে প্রথমবারের মতো পয়েন্ট খোয়াল সেলেসাওরা। এর আগে টানা নয়টি জয় তুলে নিয়েছিল দলটি। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে তাদের ঝুলিতে আছে ২৮ পয়েন্ট। আছে কনমেবল অঞ্চলের তালিকার শীর্ষেও।

আর্জেন্টিনা ৩

উরুগুয়ে ০

ব্রাজিল ০

কলম্বিয়া ০

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close