ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২১

সাকিব বিরল ক্রিকেটার আত্মবিশ্বাসী শামীম

অনেক অলরাউন্ডারের শক্তির জায়গা ব্যাটিং, অনেকের বোলিং। কিন্তু সাকিব আল হাসানকে ব্যাটিং অলরাউন্ডার বা বোলিং কোনো পরিচয়ে সীমাবদ্ধ রাখতে পারেন না রঙ্গনা হেরাথ। শ্রীলঙ্কান স্পিন গ্রেট ও বাংলাদেশের স্পিন পরামর্শকের মতে, ব্যাটে-বলে সমান সামর্থ্যরে এমন অলরাউন্ডার ক্রিকেট ইতিহাসেই খুব একটা নেই।

বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে টেস্ট গ্রেটদের মধ্যে কোন উচ্চতায় থাকবেন সাকিব? কিন্তু তিনি আগে বললেন অলরাউন্ডার সাকিবের কথা।

‘বোলার সাকিবের আগে ক্রিকেটার সাকিবের কথা বলি। আমার মতে, সে ক্রিকেট ইতিহাসেই বিরল একজন। ব্যাটিং-বোলিং দুটোই প্রায় সমান এবং দুটির যেকোনো একটি দিয়েই দলে আসতে পারেন, এরকম ক্রিকেটার খুব কমই খুঁজে পাবেন ইতিহাসে।’‘জ্যাক ক্যালিসের কথা বলতে পারেন। তিনি ইতিহাসের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন। বোলিংও বেশ ভালো। কিন্তু আমি নিশ্চিত নই, বোলিং দিয়ে তিনি টেস্ট দলে আসতে পারতেন কি না। সাকিব এখানে ব্যতিক্রম। তার ব্যাটিং-বোলিংয়ের একটিকে এগিয়ে বা পিছিয়ে রাখা কঠিন। আরেকটা ব্যাপার, সাকিব খুবই স্মার্ট ক্রিকেটার।’

স্পিনার সাকিবের কথাও অবশ্য এরপর বললেন হেরাথ। তিনি নিজে ৪০০ উইকেট শিকারি টেস্ট ইতিহাসের একমাত্র বোলার (৪৩৩)। ড্যানিয়েল ভেটোরির টেস্ট উইকেট ৩৬২টি। জোরের ওপর ভয়ংকর বাঁহাতি স্পিন করে তার নাম হয়ে গিয়েছিল। সেই ডেরেক আন্ডারউডের উইকেট ২৯৭টি। একসময় যাকে মনে করা হতো বাঁহাতি স্পিনের শেষ কথা, সেই বিষেন সিং বেদির উইকেট ২৬৬টি।

সাকিব সেখানে এখনো পিছিয়ে বেশ (২১৫)। তবে সাকিব টেস্ট খেলেছেন মোটে ৫৮টি। সেখানে হেরাথ খেলেছেন ৯৩টি, ভেটোরি ১১৩টি, আন্ডারউড ৮৬টি, বেদি ৬৭টি।

স্পিনার সাকিবকে নিয়ে হেরাথ বললেন টেস্ট কম খেলার এই ব্যাপারটিই।

‘সাকিবের স্পিন বোলিংয়ের কথা বললে আমাদের কারো সঙ্গে তুলনায় যাব না। তবে তার রেকর্ডই তার হয়ে কথা বলবে। একটা ব্যাপার হলো, অনেক বছর ধরে খেললেও খুব বেশি টেস্ট সে খেলেনি (১৪ বছরে মাত্র ৫৮টি)। বাংলাদেশ যদি আরো বেশি টেস্ট খেলতে পেত, সাকিব হয়তো আমার বা ড্যানের (ভেটোরি) উইকেট সংখ্যা ছাড়িয়ে যেতে পারত। সেই সামর্থ্য তার ছিল বা আছে।’

‘এই সময়ের আরেকটা ব্যাপার হলো, অনেক বেশি ক্রিকেট হয় এখন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ও ফ্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট। ওদের কাজটা তাই কঠিন। তারপরও, যদি বাংলাদেশ আরো বেশি ও নিয়মিত টেস্ট খেলত, অবশ্যই তার উইকেট অনেক বেশি থাকত।’

অন্যদিকে বয়সভিত্তিক দল থেকেই তারকা খ্যাতি পেয়েছেন শামীম পাটোয়ারী। এখন পর্যন্ত দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ অর্জনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে তার নাম। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের জার্সি গায়ে দিয়েছেন মাত্র দুই মাসও হয়নি। খেলেছেন ৭টি টি-টোয়েন্টি। এতেই বাজিমাত শামীমের। জায়গা পেয়েছেন আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে। যেখানে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ের সুখস্মৃতি টেনে নিয়ে যেতে চান তরুণ এই অলরাউন্ডার।

গতকাল মিরপুরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শামীম বললেন, ‘যেহেতু আমরা একটা বিশ্বকাপ জিতে আসতে পেরেছি, এবার মূল বিশ্বকাপ, তো আমরা আশাবাদী এবার আমরা ভালো কিছু আনব।’

বয়সভিত্তিক দলে নিজেকে প্রমাণ দিয়ে জাতীয় দলের টিকিট পেয়েছেন শামীম। থিতু হয়েছেন জাতীয় দলে। দুই জার্সির মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য খুঁজে পান না তিনি। যেটুকু তফাৎ দেখেন, সেটি স্বাভাবিক মনে হয় তার কাছে।

শামীমের ব্যাখ্যা, ‘আসলে তফাৎ বলতে ওখানেও (অনূর্ধ্ব-১৯) আমি দেশের জন্য খেলেছি এখানেও দেশের জন্য খেলছি। আমি মনে করি একটু ব্যতিক্রম থাকবে, যেহেতু এটা মূল জাতীয় দল। অনূর্ধ্ব-১৯ থেকে একটু ব্যতিক্রম হওয়াটা স্বাভাবিক।’

শামীমের বয়স অবশ্য খুব বেশি না। চলতি মাসেই ২১ এর কোটা ছুঁয়েছে। তার শৈশব কেটেছে সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদদের খেলা দেখে। সেসব তারকাদের সঙ্গে এখন ড্রেসিংরুম শেয়ার করেন শামীম। অনুভূতিটা আসলে কেমন?

শামীম বলছিলেন, ‘ছোটবেলা থেকে ইচ্ছা ছিল সাকিব ভাই, রিয়াদ ভাইদের সঙ্গে খেলব। এখন যেহেতু তাদের সঙ্গে খেলার সুযোগ পেয়েছি, খুব ভালো লাগছে। আমাদের সিনিয়র ক্রিকেটাররা আমরা যারা জুনিয়ার আছি তাদের অনেক সাপোর্ট করেন।’

অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের প্রসঙ্গ উঠতেই শামীম জানান, ‘রিয়াদ ভাই সব সময় আমাদের সাপোর্ট করেন। জুনিয়র ক্রিকেটারদের স্নেহ করেন। রিয়াদ ভাই সব সময় আমাদের ফ্রি খেলার জন্য বলেন।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close