আবারো জাদু দেখালেন রিচার্লিসন। প্রথম ম্যাচে হ্যাটট্রিক করার পর এবার করলেন জোড়া গোল। ফলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে আগেরবারের স্বর্ণজয়ী ব্রাজিল। সৌদি আরবের বিপক্ষে ৩-১ গোলের দারুণ জয় পেয়েছে তারা। তবে ব্রাজিলিয়ানদের আনন্দের আতিশয্যে বেদনা সঙ্গী হয়েছে আর্জেন্টিনা ও জার্মানির। টোকিও অলিম্পিক থেকে ছিটকে পড়েছে কোটি কোটি ফুটবলপ্রেমীর প্রিয় দুটি দল। স্পেনের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করে বিদায় নিয়েছে আর্জেন্টিনা। আর জার্মানিকে রুখে দিয়ে শেষ আটে জায়গা করে নিয়েছে আইভোরি কোস্ট।

‘ডি’ গ্রুপে তিন ম্যাচে দুটি জয় ও একটি ড্রয়ে ব্রাজিলের পয়েন্ট ৭। সমান ম্যাচে একটি জয় ও দুটি ড্রয়ে ৫ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ থেকে ব্রাজিলের সঙ্গী হয়েছে আইভোরি কোস্ট। একটি জয় ও একটি ড্রয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে বিদায় নিয়েছে জার্মানি। আসরে তিন ম্যাচেই হারা সৌদি আরব কোনো পয়েন্ট পায়নি।

এদিকে, ‘সি’ গ্রুপ থেকে ৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থেকে শেষ আটে জায়গা করে নিয়েছে উনাই সিমোন-পেদ্রি-ওইয়ারজাবালদের নিয়ে গড়া স্পেন দল। ৪ পয়েন্ট নিয়ে তাদের সঙ্গী হয়েছে মিসর। আর্জেন্টিনার পয়েন্টও মিসরের সমান। কিন্তু গোল পার্থক্যে পিছিয়ে পড়ায় বিদায় নিতে হলো তাদের।

গতকাল সাইতামা স্টেডিয়ামে গ্রুপের শেষ ম্যাচে সৌদি আরবের বিপক্ষে ব্রাজিলের হয়ে দুটি গোল করেন রিচার্লিসন। অপর গোলটি আসে ম্যাথিয়াস কুনহার কাছ থেকে। সৌদির পক্ষে একমাত্র গোলটি করেছেন আল-আমরি।

শুরু থেকেই একের পর এক আক্রমণ করতে থাকা ব্রাজিল এগিয়ে যায় ম্যাচের ১৪ মিনিটেই। ক্লাউদিনহোর নেওয়া কর্নার কিক থেকে দারুণ এক হেডে লক্ষ্যভেদ করেন কুনহা। তবে ২৭ মিনিটেই সমতায় ফেরে সৌদি। সালমান আল-ফারাজের নেওয়া ফ্রি কিক থেকে হেডে বল জালে জড়ান আল-আমরি।

৭৬ মিনিটে রিচার্লিসনের গোলে ফের এগিয়ে যায় ব্রাজিল। ব্রুনো গিমারেসের ফ্রি কিক থেকে হেডে লক্ষ্যভেদ করেন এই এভারটন তারকা। এরপর ম্যাচের যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে নিজেদের দ্বিতীয় গোল করেন রিচা। রিনিয়ারের কাছ থেকে বল পেয়ে বাঁ পায়ের শটে বল জালে জড়ান তিনি।

গ্রুপের অপর ম্যাচে রিফুর মিয়াগি স্টেডিয়ামে আইভোরি কোস্টের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে আসর থেকে বিদায় নিয়েছে জার্মানি। আইভোরি কোস্টের গোলটি আসে উপহারস্বরূপ, আত্মঘাতী। জার্মানির হয়ে গোলটি করেন এডওয়ার্ড লোয়েন।

ম্যাচের প্রথমার্ধে গোল করতে পারেনি সমান তালে খেলতে থাকা দলদুটির কেউই। তবে ৬৭ মিনিটে আত্মঘাতী গোলে পিছিয়ে পড়ে জার্মানি। বল ঠেকাতে গিয়ে নিজেদের জালে বল পাঠান বেঞ্জামিন হেনরিকস। তবে ছয় মিনিট পরই সমতায় ফেরে জার্মানরা। ম্যাক্স ক্রুসের ক্রস থেকে ডান পায়ের শটে লক্ষ্যভেদ করেন লোয়েন।

এরপর গোলের জন্য মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে জার্মানরা। কিন্তু জমাট রক্ষণে তাদের আটকে রাখে আইভোরি কোস্ট। তাতে নকআউট পর্বের টিকিট পেয়ে যায় দলটি। মূলত ব্রাজিলের বিপক্ষে ৪-২ গোলের হারই কাল হয়ে দাঁড়াল জার্মানদের জন্য। অথচ সেই ব্রাজিলকে ঠিকই রুখে দিয়েছিল আইভোরি কোস্ট।

এদিকে, কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে হলে গ্রুপের শেষ ম্যাচে জিততেই হতো আর্জেন্টিনাকে। কিন্তু নিজেদের কাজটা করতে পারেনি তারা। প্রথমার্ধে গোলশূন্য ব্যবধানে সমতায় ছিল দুই দল। বিরতির পর ৬৬ মিনিটে স্পেনকে এগিয়ে দেন মিডফিল্ডার মিকেল মেরিনো। নির্ধারিত সময়ের ৩ মিনিট আগে মিডফিল্ডার টমাস বেলমন্তের গোলে সমতায় ফেরে আর্জেন্টিনা। তবে শেষ দিকে দারুণ খেলেও জয়সূচক গোলের দেখা পায়নি সদস্য কোপা আমেরিকাজয়ী দেশটি। বিদায়ে আর্জেন্টিনার সঙ্গী হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। সকারুরাই প্রথম ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে ২-০ গোলের হারিয়ে সর্বনাশের শুরুটা করেছিল।

ব্রাজিল ৩

সৌদি আরব ১

আর্জেন্টিনা ১

স্পেন ১

জার্মানি ১

আইভোরি কোস্ট ১

‘সি’ গ্রুপের পয়েন্ট তালিকা

দেশ জয় হার ড পয়েন্ট গোল পার্থক্য

স্পেন ১ ০ ২ ৫ +১

মিসর ১ ১ ১ ৪ +১

আর্জেন্টিনা ১ ১ ১ ৪ -১

অস্ট্রেলিয়া ১ ২ ০ ৩ -১

‘ডি’ গ্রুপের পয়েন্ট তালিকা

দেশ জয় হার ড পয়েন্ট গোল পার্থক্য

ব্রাজিল ২ ০ ১ ৭ +৪

আইভোরি ১ ০ ২ ৫ +১

জার্মানি ১ ১ ১ ৪ -১

সৌদি ০ ৩ ০ ০ -৪

* গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে ব্রাজিল * তালিকার শীর্ষ দুই দল খেলবে কোয়ার্টার ফাইনালে

* মিসরের সঙ্গে পয়েন্ট সমান হলেও গোল পার্থক্যে পিছিয়ে থাকায় বাদ আর্জেন্টিনা

"