মনিরুল ইসলাম

  ১৯ জানুয়ারি, ২০২১

অলিম্পিকে চোখ ইসমাঈলের

দেশের দ্রুততম মানব ইসমাঈল হোসেন

ছোটবেলা থেকে খেলাধুলার প্রতি দুর্বার টান ছিল ইসমাঈল হোসেনের। বাবা ছিলেন প্রবাসী। তাই বেপরোয়া জীবনে খেলাধুলা নেশায় পরিণত হয়েছিল তার। কিন্তু মায়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে যত্রতত্র খেলায় বুঁদ হতে পারতেন না। মায়ের একটা রুটিন ঠিক করে দেওয়া ছিল সন্ধ্যার আগেই বাড়ি ফিরতে হবে। তাই অহেতুক আড্ডায় সময় কাটাতে পারতেন না। সেই ইসমাঈলই সব বেড়াজাল ডিঙিয়ে হয়েছেন দেশের দ্রুততম মানব।

করোনাভাইরাসের ফাঁকফোকর গলিয়ে অবশেষে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেড়িয়ামে বসেছিল ৪৪তম জাতীয় অ্যাথলেটিকসের আসর। গত শুক্রবার উদ্বোধনী দিনের অন্যতম সেরা আকর্ষণ ছিল ১০০ মিটার স্প্রিন্ট। এতে বাজিমাত করেন পুরোনো রাজা-রানি ইসমাঈল ও শিরিন। তারা দুজনেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর স্প্রিন্টার।

এবারের ১০০ মিটার স্প্রিন্টে ১০.৫৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে দ্রুততম মানবের মুকুট অর্জন করেন কুমিল্লার কুড়িকান্দি গ্রামের ছেলে ইসমাঈল। এ নিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো ১০০ মিটার স্প্রিন্টে সেরার মুকুট উঠল তার মাথায়। গত দুবারের তুলনায় এবার অবশ্য ফিনিশিং পয়েন্ট ছুঁতে কয়েক সেকেন্ড বেশি নিয়েছেন ইসমাঈল। এ প্রসঙ্গে প্রতিদিনের সংবাদকে তিনি বললেন, ‘একদিকে করোনা, অন্যদিকে লকডাউন সব মিলিয়ে একটা ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে ছিলাম। ঠিকঠাক অনুশীলন করতে পারতাম না। নিজেকে শতভাগ ফিট রাখতে না পারায় আশানুরূপ প্রস্তুতিও নেওয়া হয়নি। এজন্য কোনো আক্ষেপ-অতৃপ্তি নেই। তার পরও নিজের সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করেছি।’

তবে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের অ্যাথলেটিকস ট্র্যাকের বেহাল দশা নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করলেন ইসমাঈল, ‘সব থেকে বড় প্রতিবন্ধকতা ছিল ট্র্যাকের জীর্ণশীর্ণ অবস্থা। একেবারে বাজে ট্র্যাক। এই ট্র্যাকে দৌড়ানো খুব কঠিন ছিল। নিজেকে খাপ খাওয়ানোর পরিস্থিতি ছিল না। রানিংয়ের সময় পুশ করলে রিটার্ন দিচ্ছিল না। কী এক কিম্ভূতকিমাকার অবস্থা! সেটা অবশ্যই আপনদেরও (সাংবাদিকদেরও) দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তার পরও আলহামদুলিল্লাহ্ প্রথম হয়েছি। পরেরবার এর চেয়ে ভালো করতে চাই।’

আগামীতে নিজেকে কোথায় দেখতে চান এই প্রশ্নে ২৮ বছর বয়সি অ্যাথলেটের জবাব, ‘যেহেতু সামনে বাংলাদেশ গেমস আছে, তাই সবার মতো আমারও টার্গেট সেদিকে। এ ছাড়া অলিম্পিক নিয়ে একটা আশা-ভরসা আছে। সেদিকেও ফোকাস রাখছি। ক্রিকেট-ফুটবল বাদ দিয়ে অ্যাথলেটিকসে নিজেকে সঁপে দেওয়ার কারণও ব্যাখ্যা করলেন দেশের দ্রুততম মানব, সবাই যদি বড় খেলায় মশগুল থাকে, তাহলে ছোট খেলাগুলোর কী হবে? এটা তো বিলুপ্ত হয়ে যাবে। সময়ের স্রোতে মানুষের কপালে যা আছে, মানুষ সেদিকেই ছুটবে। এর চেয়ে বাড়তি কিছু না। সবই ওপরওয়ালার কারিশমা। আমি সর্বোপরি সন্তুষ্ট। জীবনে কোনো আক্ষেপ নেই।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close