দেখতে দেখতে দুয়ারে হাজির বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) বহুল আলোচিত নির্বাচন। আগামী ৩ অক্টোবর রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে হবে ভোটযুদ্ধ। অনেকে ধরেই নিয়েছেন টানা চতুর্থ মেয়াদে সভাপতি হতে যাচ্ছেন কাজী সালাউদ্দিন। তবে তার প্রতিদ্বন্দ্বী শফিকুল ইসলাম মানিক এখনই হাল ছাড়ছেন না।

পরশু ইশতেহার হিসেবে ঘোষণা করেছেন ভিশন-২০৩৩। দিয়েছেন ২১টি প্রতিশ্রুতি। কাউন্সিলররা তাকে ভোট দিয়ে সভাপতি নির্বাচন করবেন বলে মনে করছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক এই ফুটবলার ও কোচ। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে নিজের জয়ের সম্ভাবনাই বেশি দেখছেন মানিক। তবে প্রথমবারের মতো সভাপতি নির্বাচন করতে এসে কারচুপির আশঙ্কাও আছে তার।

গতকাল গণমাধ্যমকে মানিক বললেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যদি সঠিক নির্বাচন হয়; কাউন্সিলররা যদি ঠিকমতো ব্যালটে ভোট দিতে পারেন, তাহলে ১০০ জনের ২০ জনও ওদের (সালাউদ্দিন প্যানেলের) পক্ষে নেই আমি নিশ্চিত। কিন্তু নির্বাচনে প্রভাব খাটানোর ঘটনা ঘটতে পারে, কারচুপি হতে পারে, অনেক কিছুই হতে পারে। আমি জানি বলেই আশঙ্কা করছি। তবে আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। সরকারও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। আমি সেদিকেই তাকিয়ে আছি।’

নির্বাচনের বাকি আর মাত্র দুদিন। আগামী চার বছর কারা দেশের ফুটবল নিয়ন্ত্রণ করবেন, এর নিষ্পত্তি করবেন ১৩৯ জন ভোটার। কাল পর্যন্ত ১২৫ জন ভোটারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন শফিকুল। ভোটারদের মধ্যে একটি পরিবর্তনের আভাস পাচ্ছেন বলে মনে হয়েছে তার, ‘ভোটার আছেন ১৩৯ জন। তারা কী করবেন, সেটাই বড় বিষয়। আমি অন্তত ১২৫ জনের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা পরিবর্তন চান। তাদের প্রতি আমার আস্থা আছে।’

২০১৬ সালের সর্বশেষ নির্বাচনে ভোট কেনাবেচা হয়েছে বলে অভিযোগ আছে। এবার সেই সম্ভাবনা দেখছেন কি না এমন প্রশ্নে তার কাছে ভোটাররা কিছু দাবি করেননি বলে জানালেন মানিক, ‘আমি কাজের মানুষ কাজের প্রলোভন দেখিয়েছি। কেউ যদি অনৈতিক প্রলোভন দেখান, এটা তাদের ব্যাপার। কাউন্সিলররা কিন্তু অসৎ নন। আমরাই নষ্ট করছি তাদের। আমি প্রথম দিনই বলেছি, প্রার্থীরা অনৈতিক কাজের দিকে যাবেন না বা কাউন্সিলরদের অনৈতিক পথে নেবেন না। ভোটাররা তো আমার কাছে কিছু দাবি করেননি। তারা সৎ। কিন্তু আমরাই তাদের অসৎ বানানোর চেষ্টা করছি।’

বর্তমানে ফিফা র‌্যাংকিংয়ের ১৮৭ নম্বরে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। কয়েক বছর আগে সর্বনিম্ন ১৯৭-তে নেমে গিয়েছিল। বলতে গেলে, সালাউদ্দিনের আমলে দুইশোর আশপাশেই ঘোরাফেরা করেছে লাল-সবুজ জার্সিধারীদের র‌্যাংকিং। তারপরও দেশকে ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপে নেওয়ার ‘মিথ্যা আশ্বাস’ দিয়ে গেছেন সালাউদ্দিন। মানিকের কাছে এবারের নির্বাচন তাই শুধু দেশের ফুটবলকে বাঁচানোর জন্য নয়; বরং মিথ্যাকে বিতাড়িত করে সত্যের বিজয় ত্বরান্বিত করার, ‘এবারের নির্বাচনে আমি দেখব কাউন্সিলররা সঠিক সিদ্ধান্ত নেন কি না। তারা ফুটবলকে বাঁচাবের না আবার মারবেন এটাই কাউন্সিলরদের কাছে প্রশ্নের জায়গা। তাদের জবাবদিহির সবচেয়ে বড় জায়গা এবারের নির্বাচন।’

"