কাছাকাছি সময়ে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ খেলতে হচ্ছে বলে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে দ্বিতীয় সারির দলই নামিয়ে দিয়েছিল ইংল্যান্ড। তাতে অসুবিধাও হচ্ছিল না, তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুটিতে সহজেই আইরিশদের হারিয়েছে ইংলিশরা। কিন্তু সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে এসে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ভড়কে দিল আয়ারল্যান্ড। সাউদাম্পটনের এজিয়াস বোলে পরশু রাতে নিয়মরক্ষার তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে আইরিশরা। সেটাও ইংল্যান্ডের মাটিতে রেকর্ড লক্ষ্য তাড়া করে!

২০০২ সালের ন্যাটওয়েস্ট ট্রফির ফাইনালে সৌরভ গাঙ্গুলীর নেতৃত্বাধীন ভারতের সামনে ৩২৬ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েছিল নাসের হুসেনের ইংল্যান্ড। সেই ম্যাচ জিতে ইতিহাস রচনা করেছিল ভারত। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাদের মাঠে ওয়ানডেতে এত রান টপকে ম্যাচ জেতার সেই রেকর্ড ১৮ বছর ধরে রেখেছিল টিম ইন্ডিয়া। পরশু ৩২৯ রানের লক্ষ্য সফলভাবে তাড়া করে নতুন ইতিহাস আয়ারল্যান্ড।

শেষ ম্যাচে শুরুটা ভালো না হলেও ইয়ন মরগানোর অধিনায়কোচিত ইনিংসে ৩২৮ রানের বড় সংগ্রহ গড়েছিল ইংল্যান্ড। আগের দুই ওয়ানডেতে দুইশোর আশপাশে রান তোলা আয়ারল্যান্ড এত বড় লক্ষ্য তাড়া করবে কে ভেবেছিল! কিন্তু পল স্টার্লিং ও অ্যান্ডি বালবার্নির দুর্দান্ত দুটি সেঞ্চুরিতে বিস্ময়কর জয় তুলে নিয়েছে আইরিশরা।

আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে আয়ারল্যান্ডের সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড এটি। আগের রেকর্ডটি ছিল ৩২৭ রানের, সেটাও এই ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই ২০১১ সালের বিশ্বকাপে।

রেকর্ড গড়তে নেমে আয়ারল্যান্ডের শুরুটা হয়েছে দুর্দান্ত। আগের দুই ম্যাচে নিষ্প্রভ পল স্টার্লিং শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছেন। অপর ওপেনার গ্যারেথ ডিলানি ১২ রানে ফিরলে তিনে নামেন অধিনায়ক বালবার্নি। এই দুজনের সঙ্গে পেরে উঠেনি ইংলিশ বোলাররা। জুটির ১০০ পূর্ণ হয়েছে ৮৮ বলে, দুইশ ১৮৩ বলে। দলীয় ২৬৪ রানে স্টার্লিং যখন রান আউট হয়ে ফিরলেন, আয়ারল্যান্ড তখন জয়ের দরজায় কড়া নাড়ছে। দ্বিতীয় উইকেটে আয়ারল্যান্ডের পক্ষে রেকর্ড ২১৪ রান তোলেন স্টার্লিং-বালবার্নি। আয়ারল্যান্ডের পক্ষে যেকোনো উইকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি এটি। রান আউট হয়ে ফেরার আগে ১২৮ বলে ১৪২ রান করেছেন স্টার্লিং। ক্যারিয়ারের নবম সেঞ্চুরির ইনিংসটি ৬ ছক্কা ও ৯ চারে সাজিয়েছেন তিনি। বালবার্নি ১২ চারে ১১২ বলে ১১৩ রান করে ফিরেছেন।

শেষ ৫ ওভারে ৪৪ রান দরকার ছিল আয়ারল্যান্ডের। এই কাজটুকু দারুণভাবে সেরেছেন হ্যারি টেক্টর ও কেভিন ও’ব্রায়ান। ২৬ বলে ২৯ রানে অপরাজিত ছিলেন টেক্টর। ম্যাচ জেতানো শট খেলা ও’ব্রায়ান ১৫ বলে করেন ২১ রান।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে দলীয় পঞ্চাশের আগেই প্রথম তিন ব্যাটসম্যানকে হারায় ইংল্যান্ড। চারে নেমে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক মরগান। টম ব্যান্টন দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন তাকে। ৮৪ বলে ১৫টি চার ৪টি ছক্কার সাহায্যে ১০৬ রান করে ফেরেন মরগান। ব্যান্টন ৫০ বলে ৫৮ ও ডেভিড ৪২ বলে ৫১ রান করেন। এক বল বাকি থাকতে ৩২৮ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড।

"