অপু চৌধুরী
আমার এ সুন্দর বন
আমাদের দেশ নদীমাতৃক পাহাড় বনে কী সৌম্য
কল কল কল ঝরনার জল নয়ন জুড়ানো, রম্য
গায়ে যেন তার রূপের মাদুলি সবুজে গিয়েছে ছেয়ে
কী পাগলপারা ত্রি নদীর ধারা সাগরে মিশেছে ধেয়ে।
পদ্মা মেঘনা ব্রহ্মপুত্রের ত্রিমুখী তিন এ ধারা
দক্ষিণে এসে সাগর পড়েছে হয়ে খুব আত্মহারা
সবুজের সাথে মিতালী তাদের ঘন ভয়ানক কূল
বাঘের কাতারে কুমির সাঁতারে ভয় পুরো সংকুল।
নানা প্রজাতির বন্যপ্রাণী ও নানা রঙে সাজে পাখি
তাদের দু’কূলে সুর তুলে তুলে গান করে সুখে নাকি
ছোট ছোট নদী তাতে নিরবধি এঁকেবেঁকে মেলে পাখা
বনের ভেতরে বিহারিণীদের এঁকেছে পথের শাখা।
শাখাপথ ধরে কাদার ভেতরে মাথা তোলে কত সুখে
কচি কান্ডের সুন্দরী গাছ মুখ তোলে সম্মুখে
তাদেরই ফাঁকে নেচে ঝাঁকে ঝাঁকে বজ্র মেঘের তালে
পেখম মেলিয়া ডাকছে ময়ূর গহন বরিষা কালে।
বাঘেরহাটের ডোরাকাটা বাঘ খাড়া করে দুই কান
সাতক্ষীরা হয়ে খুলনা অবধি ভীমনাদে গায় গান
কেওড়া গাছের শেকড় ছড়ানো তীরঘেঁষা নদ জলে
হিংস্র উগ্র উরগ প্রাণীরা খুদ খুঁজে দলে দলে।
ম্যানগ্রোভের কাদাপথ ছুঁয়ে ছুটে ছুটে মৌয়াল
মধু সংগ্রহে ভাঙে মউচাক ভাঙে সবুজের ডাল
বানর-হরিণে লুকোচুরি খেলে মেতে থাকে সারাক্ষণ
পৃথিবীর গলে রূপের গহনা আমার এ সুন্দর বন!
"