সাঈদুর রহমান লিটন
ছাতিম ফুলের মিষ্টি সৌরভ
গোয়ালন্দ মোড় থেকে বাইপাস সড়কে মধুখালী যাওয়ার পথে বেলেশ্বর নামক গ্রামে, গ্রামীণ ব্যাংক ঘেঁষে পাকা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে একটি ছাতিমগাছ। গাছে ফুটে আছে ঘিয়ে ও সাদা রঙের পাহাড়ি ছাতিম। ফুলের সৌরভে মুগ্ধ পথচারী ও এলাকার মানুষ। ছাতিম ফুলের এই ঘ্রাণই জানিয়ে দেয় হেমন্ত এসেছে। সকাল থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পার করে রাতের পুরো সময়টায় থাকে ছাতিমের এ ঘ্রাণ। যে ঘ্রাণে বিমোহিত সবাই।
প্রকৃতি যখন ফুলহীন বৈরাগ্য হয়ে ওঠে, তখন ফোটে ছাতিম। হেমন্তের পুরোটা সময় ছাতিমের মিষ্টি ঘ্রাণ বাংলার প্রকৃতিকে মাতিয়ে রাখে। আগে দেশের সব অঞ্চলেই কমবেশি ছাতিমগাছ দেখা যেত। এখন আর সেভাবে দেখা যায় না। মানুষ নির্বিচারে গাছ কেটে বসতি স্থাপন করায় ছাতিমগাছ দেশ থেকে বিলুপ্তির পথে। তবুও মাঝে মাঝে হেমন্ত এলে এই ফুলের সরব উপস্থিতি টের পাওয়া যায়, আর সেটা হয় যখন এই ফুলের সৌরভ নাকে আসে। ছাতিমগাছ অনেক বড় হয়। প্রকৃতির থেকে অনেক উচ্চসীমায় থাকে। তাই মানুষের চোখে খুব একটা পড়ে না। তবে গাছের নিচে সব সময় ঝরে ছাতিম ফুলের বৃষ্টি। পুরো ছাতিমতলা হয়ে যায় ফুলের কার্পেট। এলাকা হয়ে পড়ে বুনো সৌরভে মাতোয়ারা। গাছটি থাকে ঝাপটানো। একটা ছোট্ট ডালে এক জায়গায় সাতটি পাতা থাকে, যে কারণে ছাতিমগাছকে কেউ কেউ সপ্তপর্ণা বলে থাকে।
বেলেশ্বর গ্রামের এই ছাতিমগাছে অজস্র ফুল ধরেছে। এই পথে এলে আধা কিলোমিটার আগেই আপনার নাক জানান দেবে সামনেই ছাতিম ফুলের গাছ। এই ফুলে শুধু সুবাসই থাকে না গাছটিও দেখতে সুন্দর। গাছটি ছড়িয়ে থাকে ছাতার মতো। এ গাছ প্রায় ৪০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। গাছের গুলাই ধূসর বাদামি রঙের। অসমান ছালের উপরি ভাগ। গাছের পাতা ও রস ভেষজ ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করে। কাঠ দিয়ে ব্ল্যাকবোর্ড, কাঠ-পেনসিল ইত্যাদি তৈরি হয়। বনে-জঙ্গলে, পথে-ঘাটে একাই জন্ম নেয় গাছটি। এখন বাণিজ্যিকভাবেও চাষের জন্য অনেকে নার্সারিতে এর চারা রোপণ করছেন।
"