হোসাইন আল-নাহিদ

  ০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

খুকির বিড়ালবন্ধু

ছোট্ট একটি মেয়ে। নাম মনিরা। বাবা-মায়ের একমাত্র আদুরে মেয়ে। তাই বাবা-মা তাকে আদর করে খুকি নামে ডাকে। পড়ে ক্লাস থ্রিতে। তার প্রিয় কাজ পড়া এবং ছবি আঁকা। সারাদিন ছবি আঁকা ও পড়াশোনা নিয়েই সে ব্যস্ত থাকে। তার একটি প্রিয় শখের প্রাণী আছে, এটি হলো বিড়াল। কিন্তু তার কোনো পোষা বিড়াল নেই। একটি বিড়াল কোথায় থেকে যেন মাঝেমধ্যে তার বাসায় আসে। খুকি খুব পছন্দ করে তাকে। নানারকম বুদ্ধি করে বিড়ালটিকে তার কাছে নিতে চায়। কাছে ডেকে আদর করতে চায়। কিন্তু বোকা বিড়াল এগুলো কিছুই বোঝে না! উল্টো খুকি যখনি কাছে যেতে চায় তখনি পালিয়ে যায়। খুকি বিড়ালকে চকলেট, খেলনা, পুতুল, আঁকা ছবি এগুলোও দিতে চায়। বিনিময় বিড়াল যেন তার বন্ধু হয়। কিন্তু বিড়াল কি আর এগুলো বোঝে? কিছুতেই সে কাছে আসে না। এজন্য খুকি অনেক সময় মন খারাপ করে থাকে। তবুও রাগ করে না। বিড়ালকে প্রতিদিন দূর থেকে খাবার দেয়। সে খাবার খায় ঠিকই কিন্তু ধরা দেয় না।

এভাবে অনেকদিন যাওয়ার পর শীতকাল আসে। চারদিকে প্রচণ্ড শীত পড়েছে। খুকি বাইরে বের হলে অনেকগুলো জামা পরে বের হয়। ঘরেও শীতের জামা ছাড়া থাকতে পারে না। ঘুমোতে গেলে কাঁথা কম্বল মুড়ি দিয়ে গুটিসুটি হয়ে থাকে। একদিন খুকি খেয়াল করে রাতে কে যেন তার পায়ের তলায় শুয়ে থাকে। প্রথমদিকে বিষয়টি এড়িয়ে যায়। কিন্তু যখন দেখে প্রতিদিন এরকম হচ্ছে তখন লাইট জ্বালিয়ে দেখে। দেখেই খুশিতে চমকে উঠে। যে বিড়ালকে বসে আনতে কত্ত রকম বুদ্ধি করেও কাজ হয়নি, সে এখন তার বিছানায় শুয়ে আছে। একদম খুকির মতো গুটিসুটি হয়ে। খুকি ভীষণ খুশি হয়। তাকে কম্বল জড়িয়ে দেয়। বিড়ালটিও আর অমত করে না। খুকির কাছে ধরা দেয়। যেন তার বন্ধুত্ব শিকার করে নিয়েছে। খুকিতো অনেক খুশি। সকালে বাবা-মাকেও বিষয়টি বলে। বাবা-মা দোকান থেকে বিড়ালের জন্য শীতের জামা নিয়ে আসে। তা খুকিকে উপহার দেয়। আর বলে দেয়, আবার এলে বিড়ালকে এটা পরিয়ে দিতে। খুকির বাবা আরো বলে, পশুপাখিকে আদর যত্ন করলে এরা বন্ধু হয়। তোমার যেমন শীতে ঠাণ্ডা লাগে ওদেরও তেমন ঠান্ডা লাগে। তুমিতো বলতে পারছো, ওরা তা পারে না। তুমি কতগুলো শীতের জামা পরো, ওরা তো তা পায় না। ওদের দেখার মতোও কেউ নেই। তুমি যদি ওদের একটু আদর করো তাহলে বন্ধু হবে। সে তোমার সাথেই থাকবে সবসময়। খুকিও তাই করে। পরেরদিন রাতে বিড়াল আসলে জামা পরিয়ে দেয়। এতে বিড়ালটির শীত দূর হয়। বুঝতে পারে খুকির সাথে থাকাটাই তার কাছে ভালো হবে। এরপর থেকে দুজনে ভালো বন্ধু হয়। বিড়ালটি আর কখনো খুকিকে ছেড়ে যায়নি। খুকিও তার জন্য নতুন নতুন খেলনা আনে। গল্প, ছড়া পড়ে পড়ে শোনায়। খাতায় বড় করে দুজনের ছবি আঁকে আর পাশে লিখে রাখে নতুন বন্ধু। এরপর এটি দেওয়ালে টাঙিয়ে দেয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close