হেমন্তের মাঠে
মোজাম্মেল সুমন
আমার দেশে সোনা বরণ ধান হেমন্তের মাঠে মাঠে,
দারুণভাবে কৃষক বিভোর ফসলের পাঠে পাঠে।
গামছা মাথায় জমির পাশে বেড়ায় হেঁটে হেঁটে,
হেমন্তের ধান বিছিয়ে দেয় কাঁচি দিয়ে কেটে কেটে।
ধানের নাড়া শুকানোর পর আনবে আঁটি বেঁধে বেঁধে,
কিষানির সুখ মাড়াই ভানাই শেষে অন্ন রেঁধে রেঁধে।
নাড়ার গোড়ায় ছড়ানো ধান বালিহাঁস খায় খুঁটে খুঁটে,
ইঁদুর ধানের শিষ কেটে কেটে গর্তে ঢোকায় লুটে লুটে।
গাঁয়ের ছেলে গর্তের ধান বের করে খুঁড়ে খুঁড়ে,
খুব সহজে ফিঙেপাখি ঘাসফড়িং খায় উড়ে উড়ে।
শিশুকিশোর গোল্লাছুটেই মেতে ওঠে প্রাণে প্রাণে,
আহ্লাদিত হেমন্তের রেশ পাই নবান্নের ঘ্রাণে ঘ্রাণে।
হাওয়াই মিঠাই জিভে দিতেই উধাও সনে সনে,
কবুতরের ন্যায় বাকবাকুম ডাকে মনটা ক্ষণে ক্ষণে।
বুদ্ধি দিয়ে শুকনো খড়ে সাপ বানানো হাতে হাতে,
জোনাক ধরা গল্পের আসর জমে চাঁদনি রাতে রাতে।
বয়স বাড়লে মানুষ পড়ে জীবন নামক ফাঁদে ফাঁদে,
আহা বুকের গহিন ভেতরে শৈশব শুধু কাঁদে কাঁদে।
আমার শৈশব এখন দেখি বয়সের ভারে কাটে কাটে,
ফের জন্মিলে ফিরব আমি হেমন্তের মাঠে মাঠে।
"