আজাদ হোসেন

  ০৬ আগস্ট, ২০২২

পাটের জাগ ডোবানো খেলা

এক পুকুরে বাস করত এক ব্যাঙ মাসি ও তার পরিবার। ব্যাঙ মাসির চার চারটা ছেলেমেয়ে, ছোট বাচ্চাগুলো সারা দিন ওই পুকুরে খেলা করত। লাফ-ঝাঁপ আর ছুটোছুটি করে তাদের দিন কাটত। ব্যাঙ মাসি বাচ্চাদের নিষেধ করত এত ছুটোছুটি করিস না। কিন্তু বাচ্চাগুলো কোনো কথা শুনত না।

ব্যাঙ মাসি তার বাচ্চাগুলো নিয়ে খুব সুখেই ছিল। ব্যাঙ মাসি ছোট ছোট ফড়িং ধরে এনে বাচ্চাদের খাওয়াত, আর বাচ্চাগুলো খুব মজা করে খেত। বাচ্চাগুলো অনেক সময় পাড়ে উঠে বিলের দিকে দেখত মানুষেরা জমিতে সবুজ সবুজ কি যেন লাগিয়েছে। বাচ্চাগুলো তাদের মা ব্যাঙ মাসিকে জিজ্ঞেস করে, মা বিলে ওগুলো কী দেখা যায়? তাদের মা বলত, ওগুলো হলো পাটগাছ, মানুষেরা লাগিয়েছে। একটি বাচ্চা তার মা ব্যাঙ মাসিকে বলে, মা ওগুলো দিয়ে কী করে? ব্যাঙ মাসি সব বুঝিয়ে বলে। পাট বড় হলে সেগুলো পানিতে জাগ দেয়, তারপর ভালো করে জাগ হলে সেগুলোর আঁশ ছাড়িয়ে দড়ি বানিয়ে কাজে লাগে।

সব শুনে বাচ্চাগুলো পুকুরের একটা খোলা জায়গায় খেলতে যায়। রীতিমতো তারা প্রতিদিন সেখানেই খেলা করে। এভাবে চলতে চলতে মাস দু-এক চলে যায়। পাটগুলোও বড় হয়ে যায়। এক দিন দেখে মানুষ পাটগুলো নিয়ে এসে পুকুরে ফেলছে। বাচ্চাগুলো দৌড়ে এসে মাকে বলে, মা আমাদের খেলার জায়গায় পাট ফেলেছে, এখন আমরা কোথায় খেলব? ব্যাঙ মাসি বাইরে এসে দেখে সত্যিই। ব্যাঙ মাসি বলে, এখন কি করবি তোদের আর খেলা হবে না।

এ কথা শুনে বাচ্চাগুলো কান্না শুরু করে দেয়। ব্যাঙ মাসি বাচ্চাগুলোকে শান্ত করে বলে, কয়েক দিন পরে এগুলো নিয়ে যাবে তখন খেলিস। বাচ্চাগুলো এ কথা শুনে শান্ত হলো। এভাবে আরো কয়েক দিন চলে গেল। কয়েক দিন তারা আর খেলতে পারে না তাই মনটা খুব খারাপ। একসময় একটা বাচ্চা বলে, চল আজ আমরা পাটের জাগ ডুবিয়ে দেব। তাহলে তো আমাদের খেলার জায়গা হয়ে যাবে। তাই শুনে বাকিরা সঙ্গে গেল। এরপর একে একে পাটের জাগে লাফিয়ে লাফিয়ে উঠতে লাগল। কিন্তু পাটের জাগ একটুও ডুবল না। তারপর বুদ্ধি করে পাড়ার সব ছেলেমেয়েকে ডেকে এনে পাটের জাগ ডোবানোর জন্য। আবার একে

একে সবাই পাটের জাগে ওঠে কিন্তু তাতেও কিছুই হলো না। কিন্তু সবাই খুব মজা পাচ্ছিল।

এসব দেখে ব্যাঙ মাসি এসে বলে, ওরে বোকা ছেলেমেয়ে এত বড় পাটের জাগ কি তোদের মতো ছোট বাচ্চারা ডোবাতে পারবি? এর চেয়ে তোরা পাটের জাগে খেলা কর। এটা শুনে সব বাচ্চা খুব খুশি হলো আর আগের মতো পাটের জাগ ডোবানো খেলা শুরু করে দিল।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close