শফিক শাহরিয়ার

  ২৩ জানুয়ারি, ২০২১

পেটুক ছেলে

আদরের ভাগ্নে জুনাইদ হোসেন শীতল। শীতল নামেই খুব পরিচিত। শীতল নামটা রেখেছিলেন তার মামা। তিনি ভেবেছিলেন, ছেলেটা নামের সুবাদে যদি শীতল থাকে। মানে তার মেজাজ ঠা-া থাকে। কিন্তু ভেরতটা যে এত গরম, আপনাকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছাই করে ফেলবে। তাকে কেউ গরম বলে ডাকলে, মুখে যা আসে তাই বলে। সে সব সময় অস্থির। কোনো সময় স্থির থাকে না। সারা দিন কেটে যায় হই-হুল্লোড় করে। কখনো সাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। আবার কখনো খেলে।

প্রাইভেট স্যার জুয়েল। তার কাছে প্রাইভেট পড়ে। শীতল পড়তে খুব নড়াচড়া করে। পড়ার ঘরে টানানো আছে দেয়ালঘড়ি। সে একটু পরপর সময় দেখে। এ নিয়ে মাস্টার তাকে খুব বকাঝকাও করেন। তাতে কোনো লাভ হয় না। সে নাছোড়বান্দা। মনে যা খুশি তাই করে। নির্ধারিত সময়ের বেশি পড়তে চায় না। এক দিন স্যার তাকে বললেন, বাড়িতে কতক্ষণ পড়ো সে বলল, আমি কখনো সময় দেখে পড়ি না। আমার পড়তেও বেশি সময় লাগে না।

এক দিন স্যার তাকে একটি রুটিন তৈরি করে দিলেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সব কাজের বিবরণ দেওয়া আছে। কিন্তু সমস্যা দাঁড়াল অন্য জায়গায়। মানে রুটিন নিয়ে গড়বড় লাগছে। সেখানে শীতল মোট ছয়বার খাবারের কথা উল্লেখ করতে বলেছে। স্যার বললেন, কী ব্যাপার! শীতল বলল, বাড়ির কাছেই আমার নানির বাড়ি। সেজন্য প্রতি বেলার খাবার দুই বাড়িতে দুবার খেতে হয়। না খেলে গড়বড় লাগে। মানে পেট চো চো করে। বাড়িতে না খেলে মা রাগ করেন। নানির বাড়িতে না খেলে নানিও রাগ করেন। কেউ খেতে বললে না বলতে পারি না। আর একটু পেট খালি হলেই একটি দোকান বরাদ্দ আছে। যতবার খুশি জিনিস খাই।

শীতলের মামাতো ভাই হুজাইফা। তাদের সঙ্গে ওয়াসী, আরাফাত ও জামিল। এক দিন সাইকেল নিয়ে স্যারের বাড়িতে বেড়াতে এলো। স্যার মুড়ি পার্টির আয়োজন করলেন। শীতল কারো দিকে তাকায় না। সে গপাগপ খাচ্ছে। আজ সবার চেয়ে বেশি খেয়েছে। বাড়িতে ফেরার সময় পেটের পীড়া বাড়তে লাগল। কোনোমতে গন্তব্যে পৌঁছে। বাথরুমে যেতে যেতে কাপড় নষ্ট। এখন সবাইকে বলে কম চাই, কম খাই।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close