রাশেদ সারোয়ার
গরুর খামারে সফল সালমা আক্তার
চাকরির পেছনে না দৌড়ে শ্বশুরবাড়ির পতিত জায়গায় গরুর খামার গড়ে তোলেন গফরগাঁওয়ের নিগুয়ারি নগরপাড়া গ্রামের মাস্টার্স পাস করা সালমা আক্তার। খামার করতে টাকা নেন শ্বশুরের কাছ থেকে। এতেই বাজিমাত করেন এ উদ্যোক্তা।
গেল ঈদুল আজহায় ২৫টি ষাঁড় বিক্রি করে দুই লাখ টাকার বেশি মুনাফা করেছিলেন। এবার তার খামারে রয়েছে অর্ধশত ষাঁড়। এগুলো বিক্রি করলে খরচ বাদে পাঁচ লাখ টাকারও বেশি মুনাফা হবে বলে জানান সালমা।
এ নারী উদ্যোক্তা জানান, অবসরপ্রাপ্ত শ্বশুরের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে চারটি গরু কিনে ২০১৭ সালে পতিত জমিতে মেয়ের নামে নুসরাত ডেইরি খামার গড়ে তোলেন। তার খামারে বর্তমানে ৫০টির মতো ষাঁড় রয়েছে। এর মধ্যে কোরবানির ঈদে সবগুলো বিক্রি করার উপযোগী করা হয়েছে। খামারটি দেখভালের জন্য পাঁচজন কর্মচারী দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে।
সালমা বলেন, মাস্টার্স পাস করার পর পরিবারের সবারই ইচ্ছা ছিল আমি চাকরি করব। এরপর ডেইরি খামার করার উদ্যোগ নিয়ে কাজ শুরু করি। ছোট আকারে শুরু করলেও খামার দিন দিন বড় হতে শুরু করেছে। খামারের আয় দিয়ে বর্তমানে পাঁচজন বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়েছে। ভবিষ্যতে এই খামারকে আরো কর্মমুখী করে গড়ে তুলতে নানা উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানান তিনি।
শুধু সালমা নয়, জেলায় কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ১০ হাজার ৬৩৫ জন উদ্যোক্তা পশু পালন করছেন। এসব খামারি গরু মোটাতাজাকরণ ছাড়াও বলদ, গাভি, ছাগল, মহিষ, ভেড়াসহ নানা জাতের পশু পালন করছেন। পশু পালন লাভজনক হওয়ায় দিন দিন খামারি উদ্যোক্তার সংখ্যাও বাড়ছে।
ফুলপুরের ভাইটকান্দি বিগ ব্যাং ফার্মের স্বত্বাধিকারী জহিরুল হক বাসন জানান, ঈদুল আজহায় ৪০টি ষাঁড় এবং ১৫টি খাসি বিক্রি করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। করোনার কারণে এর আগে অনলাইনে ৩৪টি ষাঁড় ও ১১টি খাসি বিক্রি করে আড়াই লাখ টাকা মুনাফা হয়েছিল। এবার অনলাইনে বিক্রির জন্য প্রস্তুতি চলছে। এবার তিন লাখের বেশি মুনাফা হতে পারে বলে আশাবাদী এই খামারি।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওয়াহেদুল আলম জানান, করোনাকালে ঈদে বিক্রির লক্ষ্যে পশু লালন-পালনে খামারিদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করা হয়েছে। গতবারও হাটের পরিবর্তে অনলাইনে পশু বেচাবিক্রি করে খামারিরা লাভবান হয়েছিলেন। এবারও খামারিরা হাটের পাশাপাশি অনলাইনে পশু বিক্রির জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছেন। খামারিদের সব ধরনের সহযোগিতা প্রাণিসম্পদ বিভাগ করবে।
"