reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৪ জুন, ২০২২

তরুণ নারী উদ্যোক্তা সুমনা শারমিন

বর্তমানে তার প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি ১০টি বিভিন্ন প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছে। এরই মধ্যে রয়েছে ঢাকা শহরের ব্যাচেলরদের জন্য নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য আবাসন ব্যবস্থা ‘প্রজেক্ট সেকেন্ড হোম’ এবং ‘প্রজেক্ট সেফ হোম’, অর্গানিক এবং ঘরোয়া খাবারের ফুড ক্যাটারিং সার্ভিস ‘পকেট ফ্রেন্ডলি ক্যাটারিং’, দেশের পর্যটন খাতের উৎকর্ষের লক্ষ্যে ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেল এজেন্সি ‘লেটস ফ্লাই’, ফ্রেশারদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে কর্মক্ষম গড়ে তুলতে, ‘দ্য ড্রিম হাউস বিডি’, দেশীয় তাঁতশিল্পী এবং এদের শিল্পের ব্যাপ্তি ঘটাতে কাজ করছে ‘দ্য থ্রেড স্টোরি’, ইন্টিরিয়র ডিজাইন নিয়ে কাজ করছে ‘আফ্রিদিতি’, চামড়াশিল্প নিয়ে কাজ করছে ‘লেদার বি’, অর্গানিক ফুড আইটেম নিয়ে কাজ করছে ‘শুদ্ধ’ ও ক্যাপসুল হোটেল নিয়ে কাজ করছে ‘দিনান্তে’

গত এক দশক দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে তরুণদের পদচারণ ইতিবাচক হারে বেড়ে চলছে। এর প্রধান কারণ হলো, তরুণরা বর্তমানে নিজ নিজ চিন্তাভাবনাকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন। আরেকটি অন্যতম প্রধান কারণ হলো, ইন্টারনেটের ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি, যার ফলে প্রত্যেকেই অল্প সময়েই এবং সহজেই তাদের নিজেদের আইডিয়াগুলোকে পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিতে পারছেন। যোগাযোগের মাধ্যম সহজতর হওয়ার কারণেই মূলত তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন উদ্যোক্তা।

এখন তারা বারবার দেখিয়ে দিচ্ছেন, নিজেদের আইডিয়াগুলোকে সঠিক সময়ে, সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে, সফলতা পাওয়া কঠিন কিছু নয়।

অন্যভাবে বলা যায়, তরুণদের জন্য সময়ের সদ্ব্যবহারেরও একটা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তারা স্থাপন করে যাচ্ছেন। এ ছাড়া তারা প্রমাণ করেছেন, উদ্যোক্তা হতে গেলে বয়স কোনো বিষয় নয়। শুধু সঠিক পরিকল্পনা, অভিনব আইডিয়া আর দৃঢ় মনোবল প্রয়োজন।

বাংলাদেশে সরাসরি কিংবা অনলাইন- দুই ধরনের ব্যবসায়ই নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা অনেক বাড়লেও উদ্যোক্তারা বলছেন, নারী হিসেবে ব্যবসা করা কিংবা ব্যবসা সম্প্রসারণ করার ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত বাধাও বাড়ছে।

তবে এ ক্ষেত্রে সুমনা শারমিন একেবারেই ভিন্ন। দারুন আইডিয়া, পরিশ্রম আর একাগ্রতা থাকলে সফল হওয়া যে শুধু সময়ের বিষয়, তিনি সেটিরই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। ব্যারিস্টারি পড়াশোনারত অবস্থায়ই উনি উপলব্ধি করেন যে, দেশে অসংখ্য তরুণ তাদের চিন্তাচেতনা দ্বারা সঠিক সুযোগের অভাবে সেগুলোকে বাস্তবে রূপ দিতে পারছেন না। তাই তিনি দেশের তরুণ সমাজকে জনশক্তি হিসেবে কাজে লাগানোর জন্য মাত্র ২১ বছর বয়সে প্রতিষ্ঠা করেন Rtemis Limited নামের একটি মাল্টি প্রজেক্টস কোম্পানি। যেটা মূলত তরুণদের নিয়ে কাজ করবে। তাদের সরাসরি প্রফেশনাল সেক্টরে কাজ করানোর মাধ্যমে তাদের নিজেদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্কিল বাড়বে এবং এরই সঙ্গে তৈরি হবে একটি শক্তিশালী তরুণ জনগোষ্ঠীর, যারা সমাজ এবং দেশের সমৃদ্ধির পেছনে ভূমিকা রাখবে।

তার প্রতিষ্ঠিত Rtemis Limited বর্তমানে দেশের বিভিন্ন নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, যারা নিজেদের আইডিয়া দিয়ে সমাজ-দেশের উন্নয়ন সাধন করতে চাই।

বর্তমানে তার প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি ১০টি বিভিন্ন প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছে। এরমধ্যে রয়েছে ঢাকা শহরের ব্যাচেলরদের জন্য নিরাপদ এবং নির্ভরযোগ্য আবাসন ব্যবস্থা ‘প্রজেক্ট সেকেন্ড হোম’ এবং ‘প্রজেক্ট সেফ হোম’, অর্গানিক এবং ঘরোয়া খাবারের ফুড ক্যাটারিং সার্ভিস ‘পকেট ফ্রেন্ডলি ক্যাটারিং’, দেশের পর্যটন খাতের উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে ট্যুরস অ্যান্ড ট্র্যাভেল এজেন্সি ‘লেটস ফ্লাই’, ফ্রেশারদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে কর্মক্ষম গড়ে তুলতে, ‘দ্য ড্রিম হাউস বিডি’, দেশীয় তাঁতশিল্পী এবং এদের শিল্পের ব্যাপ্তি ঘটাতে কাজ করছে ‘দ্য থ্রেড স্টোরি’, ইন্টিরিয়র ডিজাইন নিয়ে কাজ করছে ‘আফ্রিদিতি’, চামড়াশিল্প নিয়ে কাজ করছে ‘লেদার বি’, অর্গানিক ফুড আইটেম নিয়ে কাজ করছে ‘শুদ্ধ’ ও ক্যাপসুল হোটেল নিয়ে কাজ করছ ‘দিনান্তে’।

একজন তরুণ ফ্রেশার এই কোম্পানিতে এসে এই সবকটি প্রজেক্টে তাদের স্কিল এবং আগ্রহের ওপর ভিত্তি সরাসরি কাজ করার সুযোগ পান এবং

প্রফেশনালভাবে সমসাময়িক বিশ্বের কাছে নিজেদের আইডিয়াগুলাকে উপস্থাপন করার যোগ্যতা অর্জন করতে পারে। দেশের বিভিন্ন নামকরা প্রতিষ্ঠানের সাবেক এবং বর্তমান অভিজ্ঞ ব্যক্তিও এখানে কাজ করেন, যারা তরুণদের স্ব স্ব কাজগুলো প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন।

ইতোমধ্যে এখান থেকে অভিজ্ঞতা সঞ্চার করে অনেক তরুণ নিজেদের একটা জায়গা তৈরি করেছেন। মূলত শুরু থেকেই সুমনা শারমিনের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল দেশের তরুণদের একটি দক্ষ-পরিশ্রমী জনগোষ্ঠী হিসেবে তৈরি করা।

সুমনা শারমিনের আর্টেমিস সব সময়ই সামাজিক কাজগুলোতে খুবই বেশি সক্রিয়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার উদ্যোগের পেছনের প্রধান কারণই হলো সামগ্রিকভাবে সামাজিক উন্নয়ন।’

নারী উদ্যোক্তা তৈরি করতে এবং নারীদের সামাজিকভাবে নিজেকে শক্ত একটা অবস্থানে নিতে আর্টিমিস বদ্ধপরিকর। এ ছাড়া সাইবার বুলিং-অ্যাসিড ভিকটিমের শিকার, ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেসড ফিমেল এবং সিঙ্গেল মাদারকে পরামর্শ এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নিজেদের একটা জায়গা তৈরি করেছেন। ভবিষ্যতেও তিনি একইভাবে আরো বেশিসংখ্যক পিছিয়ে পড়া নারীদের নিয়ে কাজ করতে চান।

আর্টেমিস গ্রুপের প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারী সরাসরি সামাজিক কাজে নিয়মিতভাবে লিপ্ত থাকে। পথশিশুদের পড়াশোনা এবং নিরাপদ খাদ্য প্রদান কিংবা মধ্যরাতে শীতার্তদের মাঝে গরম কম্বল বিতরণে এখানকার সবাই জড়িত নিয়মিতভাবে। সুমনা শারমিন বলেন, ‘এতে তরুণদের মাঝে মানবিকতা বিকাশটা ঘটে। একটি ভালো কাজে নিজেদের চর্চার মধ্যে রাখলে, সেটা একসময় একটি ভালো অভ্যাসে পরিণত হয়। আমি চাই, এদের মধ্য দিয়ে এই ভালো কাজগুলো ছড়িয়ে পরুক সমাজের বিভিন্ন স্তরে।’

সামনের দিনগুলোতে তিনি আরো বেশিসংখ্যক তরুণকে প্রশিক্ষণ দিয়ে দেশের সমৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে পারবেন বলে আশা করেন। তরুণরা নিজের পরিশ্রম এবং কাজের নাধ্যমে নিজেদের স্বপ্নগুলোতে পৃথিবীর সামনে বাস্তবে রূপ দিতে পারবেন এবং তাদেরই জন্য ‘আর্টেমিস লিমিটেড’ সব সময়ই সচেষ্ট থাকবে। তথ্যসূত্র : সংগৃহীত

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close