মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ

  ৩১ মে, ২০২২

ফারহানা ইয়াসমিন ‘লেডি উইথ দ্য ল্যাম্প’

ফারহানা ইয়াসমিনের কাজের প্রতি ডেডিকেশন, মেধা ও শ্রমের মধ্য দিয়ে অনেকদূর এগিয়ে গেছেন। কয়েকটা ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সেও প্রেজেন্টেশন দিয়েছেন ফারহানা ইয়াসমিন। চার বছর আগে কিছুই বলতে না পারা এই মেয়েই এবারে পুরো প্রোগ্রাম পরিচালনা করেছেন। ঈদের ঠিক তৃতীয় দিন অনুষ্ঠিত হয় SAVE কর্তৃক আয়োজিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্য একটি দিকনির্দেশনামূলক অনুষ্ঠান

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারহানা ইয়াসমিন। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এ শিক্ষার্থী নিয়মিত লেখালেখি করেন, ক্লাসে এখন পর্যন্ত ফার্স্ট, গবেষণার কাজও করেন টুকটাক। ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার ইচ্ছা। আছে উচ্চশিক্ষার লাভের জন্য বিদেশে যাওয়ার আগ্রহ। এত কিছুতে চৌকস এই মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরুতে অর্থাৎ তিনি যখন প্রথম বর্ষে ছিলেন, তখন একটি প্রোগ্রামে তাকে কথা বলার জন্য ডাকা হলে তিনি কি না একটি লাইন বলার পর আর কিছুই বলতে পারেননি! আর ঠিক চার বছর পর সেই পুরো প্রোগ্রামটির আয়োজক হিসেবে ছিলেন ফারহানা এবং এই প্রোগ্রামেই তিনি পান ‘লেডি উইথ দ্য ল্যাম্প’ উপাধি। ফারহানা ইয়াসমিনের গ্রামের বাড়ি যশোরের অভয়নগর থানায়। এই থানার অধীনে নাউলী, সিদ্দিপাশা, গোপীনাথপুর, ইছামতী, আমতলা, ধূলগ্রাম গ্রাম রয়েছে। গ্রামগুলোর পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ভৈরব নামের এক নদী। আর এই নদীর নামেই রয়েছে এই এলাকার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের সংগঠন স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব ইস্টার্ন ভৈরব-এর পথচলা। সংগঠনটির পথচলা অনেকটা গল্পের মতো। তখন খুব সম্ভবত ২০১৩ সালের দিকে আমাদের এলাকার কয়েকজন

সিনিয়র, যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতেন। ওনারা SAVE নামে একটি সংগঠন খুলে। এই সংগঠনের উদ্দেশ্য তরুণদের উচ্চশিক্ষার জন্য উজ্জীবিত করা। যারা এই সংগঠনটি খুলেছিলেন, তারা সবাই প্রতিষ্ঠিত। কেউ জজ, ডাক্তার, ম্যাজিট্রেট, এএসপি। এই এলাকার ছেলেমেয়েরা অনেক কষ্টে লেখাপড়া করেন। অনেক লড়াই করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হয়। তবে গ্রামগুলো যথেষ্ট উন্নত। কিন্তু উচ্চশিক্ষার দিক থেকে মেয়েরা অনেকটা পিছিয়ে। ফারহানা ইয়াসমিন তাদের কাছে একটা রোল মডেল বলা যেতে পারে।

ফারহানা ইয়াসমিনের কাজের প্রতি ডেডিকেশন, মেধা ও শ্রমের মধ্য দিয়ে অনেকদূর এগিয়ে গেছেন। কয়েকটা ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সেও প্রেজেন্টেশন দিয়েছেন ফারহানা ইয়াসমিন। চার বছর আগে কিছুই বলতে না পারা এই মেয়েই এবারে পুরো প্রোগ্রাম পরিচালনা করেছেন। ঈদের ঠিক তৃতীয় দিন অনুষ্ঠিত হয় ঝঅঠঊ কর্তৃক আয়োজিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্য একটি দিকনির্দেশনামূলক অনুষ্ঠান। ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা কীভাবে তাদের স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেন, কীভাবে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়তে পারেন, সেসব বিষয় নিয়েই উক্ত অনুষ্ঠানটি সাজানো হয়। সব ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী উক্ত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। এই প্রোগ্রামের আয়োজক হিসেবে ছিলেন

ফারহানা এবং এই প্রোগ্রামেই তিনি ‘লেডি উইথ দ্য ল্যাম্প’ উপাধি লাভ করেন। এ রকম বেশ কিছু কারণে তার গ্রামের একজন সিনিয়র মো. আনিসুর রহমান মোল্লা, যিনি বর্তমানে ইন্সপেক্টর অব কাস্টমস, এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট ডিভিশনে আছেন, তিনিই তাকে এই উপাধি দেন।

উপাধি পেয়ে অনুভূতি প্রকাশ করে ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, মা, বাবা আর আমার চাচার অবদান অনস্বীকার্য, আমার এতটুকু পরিচয়ে। আর লেখালেখি এবং গবেষণায় হাতেখড়ির পেছনে প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সিনিয়র প্রভাষক মো. আলমগীর হোসেন স্যারের অবদান অনস্বীকার্য। এ ছাড়াও আমার বিভাগের শিক্ষকদের অবদানও অতুলনীয়।

তিনি আরো বলেন, আমার বিভাগের শ্রদ্ধেয় দিল আফরোজ খানম ম্যাডামের একটা সংগঠন আছে স্টেপস অ্যাহেড, যেটা কিছুদিন আগে জয় বাংলা উইথ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে, ওইটার একজন ডেডিকেটেড ভলান্টিয়ার আমি। ক্লাস পঞ্চম, অষ্টম এবং এইচএসসিতে সাধারণ গ্রেডে বৃত্তি প্রাপ্ত হয়েছিলাম। ভবিষ্যতে এই অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় কাজ করে যেতে চাই।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close