বাধা পেরিয়ে সফল উদ্যোক্তা হাসিনা মুক্তা
‘৫০ হাজার টাকা দিয়ে ব্যবসা শুরু তার। বর্তমানে সেই মূলধন
দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৫ লাখ টাকায়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গ্রামীণ নারীদের দিয়ে নকশিকাঁথাসহ বিভিন্ন হস্তশিল্পের কাজ করাচ্ছেন। এতে তিনি
নিজেও যেমন সাফল্যের অগ্রযাত্রা এগিয়ে নিতে পারছেন, স্বাবলম্বী
হচ্ছেন নারীরা। যারা এক সময় পরিবারে নানা ধরনের নিগ্রহের
মধ্যে ছিল, আজ তারা সমাজ সংসারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পেড়েছেন। এই কৃতিত্বের মূলে আছেন হাসনা মুক্তার মতো একজন সৃজনশীল
নার্ী’
ছোটবেলা থেকেই নিজের পোশাক নিজে তৈরি করার পাশাপাশি সৃজনশীল কাজে মনোযোগী ছিলেন হাসিনা মুক্তা। ২০০৯ সালে ‘নতুনত্ব বুটিকস ও হস্তশিল্প’ নামে তৈরি পোশাক, ক্রাফটস উৎপাদন ও বিক্রয়ের প্রতিষ্ঠান করেন হাসিনা। একই সঙ্গে নিজ বাড়িতে হস্তশিল্প ট্রেনিং সেন্টার চালু করেন। সেখানে সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করেন।
ইন্টারমিডিয়েট পাস করার পর ১৯৯৮ সালে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে পোশাক তৈরি ও ব্লক-বাটিকের প্রশিক্ষণ নেন। ১৯৯৯ সালে বিয়ের পর বিভিন্ন সময় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নেন। পরে স্বামীর সহযোগিতায় কয়েকটি সেলাইমেশিন ক্রয় করে বুটিকসের কাজ শুরু করেন এই উদ্যোক্তা। তৈরি পোশাকের পাশাপাশি ব্যাগ, ম্যাট, কলমদানি, পাপোশ ব্লক-বাটিকসহ নকশিকাঁথা, শাড়ি, বিছানার চাদর, কুশন কভার তৈরি হয় মুক্তার নতুনত্ব বুটিকস ও হস্তশিল্প প্রতিষ্ঠানে।
হাসিনা মুক্তা বলেন, বর্তমানে আমি কিছু ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করছি। একটা শোরুম আছে, পাশাপাশি আমার কারখানায় প্রায় ৬০ জন কর্মী কাজ করছেন। ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ব্যবসা শুরু হলেও বর্তমানে আমার মূলধন দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৫ লাখ টাকায়। ঢাকার বাইরে রাজশাহী, দিনাজপুরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে গ্রামীণ নারীদের দিয়ে নকশিকাঁথাসহ বিভিন্ন হস্তশিল্পের কাজ করছি আমরা।
কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ হাসিনা মুক্তা ২০১৩ সালে পান নেলসন ম্যান্ডেলা অ্যাওয়ার্ড। সেই বছর নারী উদ্যোক্তা হিসেবে পান কবি নজরুল সম্মাননা। নারীসেবা ও মানব উন্নয়নে বিশেষ অবদানের জন্য শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক সম্মাননাও পান তিনি। ২০১৪ সালে নারী আত্মকর্মসংস্থান কর্মী হিসেবে পান জাতীয় যুব পুরস্কার।
"