নাহিদ সিরাজী নিম্মি

  ১৭ আগস্ট, ২০২১

সফল নারী উদ্যোক্তা আছিয়া খালেদা নীলা

আছিয়া খালেদা নীলা একজন সফল নারী উদ্যোক্তা। তিনি উইমেন ইন ডিজিটালের প্রতিষ্ঠাতা। প্রযুক্তির সঙ্গে নারীদের যোগসূত্র সৃষ্টিকারী একটি প্রতিষ্ঠান। দেশে প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করেন এমন নারী খুব কমই চোখে পড়ে। আর যারা কাজ করেন, তাদের বেশির ভাগই লোকচক্ষুর আড়ালে থাকতে পছন্দ করেন। তাই উইমেন ইন ডিজিটালের প্রতিষ্ঠাতা আছিয়া খালেদা নীলার চেষ্টা তাদের গল্পগুলোকে সবার সামনে তুলে ধরা।

উইমেন ইন ডিজিটাল প্রতিষ্ঠিত হয় ২০১৩ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি। বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটোয়ারীর অনুপ্রেরণায় নীলা প্রতিষ্ঠা করেন উইমেন ইন ডিজিটাল। দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকই নারী। সেই নারীরা যদি পিছিয়ে থাকে, তাহলে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে নানা বাধা আসতেই পারে। এই প্রতিষ্ঠানটি টেকনোলজির মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নে ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি ইন্টারনেটের মাধ্যমে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতেও কাজ করে।

সম্প্রতি একটি ভিডিও সাক্ষাৎকারে তার প্রতিষ্ঠানের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেন এই নারী উদ্যোক্তা। তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ হওয়া এত সহজ নয়। যেখানে বাংলাদেশের ৫০ শতাংশই নারী। এ দেশে নারীদের টেকনোলজি নিয়ে কাজের প্রতি ঝোঁক সে রকম চোখে পড়ে না। সেসময় তার বাবা তাকে বলেন, তুমি একজন নারী, পাশাপাশি একজন ইঞ্জিনিয়ার। তোমার উচিত দেশের জন্য কিছু করা। দেশের নারীদের নিয়ে কিছু করো। তোমার উচিত কাউকে দোষ না দিয়ে সময় উপযোগী একটা পদক্ষেপ নেওয়া। তখন তিনি উইমেন ইন ডিজিটাল প্রতিষ্ঠার চিন্তা করেন। তিনি আরো বলেন, মহামারির কারণে নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়েছিল নীলা এবং তার প্রতিষ্ঠানকে। তার পরও এ প্রতিষ্ঠান তাদের কোনো কর্মীদের চাকরিচ্যুত করেনি। বেতন দেওয়ার ক্ষেত্রে ছিল না কোনো ঘাটতি। অনেক নতুন প্রজেক্ট আসার কথা থাকলেও মহামারির কারণে সেগুলো আর আসেনি। শুধু তাই নয়, তার অফিস পরিবর্তন করতে হয়েছে। যদিও এখনো বোঝা যাচ্ছে না যে, করোনার অবস্থা দেশে আসলেই কেমন, কিন্তু এখন অফিস খুলে গেছে। যা একটি ভালো দিক। তবে অফিসে এখনো সবাইকে আসতে বলা হয়নি, বাসা থেকেই কাজ করছেন তারা। তিনি আশাবাদী, বাকি সমস্যা যেগুলো রয়েছে খুব তাড়াতাড়ি হয়তো সেগুলো থেকে তারা পরিত্রাণ পাবেন।

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রেক্ষাপটে নারীদের নিয়ে এগিয়ে যাওয়াই তার প্রত্যাশা। এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি ১০ হাজারের বেশি নারীকে আইটি প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং সাত হাজারের বেশি নারীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। বাংলাদেশের পাঁচটি ভিন্ন গ্রামে এবং নেপালে তাদের টেকনিক্যাল স্কুল রয়েছে। যে স্কুলগুলোতে তারা নারীদের বিভিন্ন টেকনিক্যাল বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে থাকে।

প্রতিষ্ঠানটি কাজ করে নারীর প্রযুক্তিবিষয়ক প্রশিক্ষণ এবং উইমেন ইন ই-কমার্স, উইমেন ইন সাইবার সিকিউরিটি, হেলথ টেক এবং আগ্রো টেক নিয়ে। আন্তর্জাতিক অনেক পুরস্কার পেয়েছে এই প্রতিষ্ঠান। নিজের দেশের ঐতিহ্য এবং ইতিহাসকে সম্মান রেখে বরাবরই নানা পদক্ষেপ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ঠিক তেমনভাবেই নারীদের জন্য নিয়ে এসেছে www.womenine-commerce.com or www.womeninecommerce.com.bd নামে একটি ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস। যেখানে বাংলাদেশের নারী উদ্যোক্তারা তাদের পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবেন। তাদের কোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নির্ভর করতে হবে না। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য দেশের সর্বপ্রথম মার্কেটপ্লেস এটাই। ই-কমার্স নিয়ে নীলার উইমেন ইন ডিজিটাল আট বছর যাবৎ কাজ করে আসছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close