জীবনযাপন ডেস্ক

  ২৮ আগস্ট, ২০২০

করোনা রোধে চাই জীবাণুমুক্ত পোশাক

প্রতিনিয়তই রেকর্ড গড়ছে কোভিড-১৯-এ মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। জীবনযাত্রা কবে আবার স্বাভাবিক গতিতে ফিরবে, তার নিশ্চয়তা নেই। নিজেকে নিরাপদ রাখতে করোনাভাইরাস কোন কাপড়ের মধ্যে কতক্ষণ স্থায়ী হয়, জানা খুবই জরুরি। সংক্রমণ ঠেকাতে ভরসা সচেতনতা ও পরিচ্ছন্নতা। সঙ্গে ভাইরাস নির্মূল করার উপায়ও।

পোশাকে কতক্ষণ বেঁচে থাকে ভাইরাস?

পোশাকে কতক্ষণ এই ভাইরাস বেঁচে থাকতে পারে, তা নিয়ে খুব বেশি গবেষণা এখনো হয়নি। এক এক ধরনের কাপড়ে করোনাভাইরাসের স্থায়িত্বকাল এক এক রকম হয়ে থাকে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। কারো কারো মতে ‘জামা-কাপড়ে মোটামুটি দুই থেকে তিন দিন অবধি টিকে থাকতে পারে করোনাভাইরাস। তবে সুতি, লিলেন জাতীয় কাপড়ে সর্বাধিক ৯৬ ঘণ্টা স্থায়ী হয়। সিল্ক, শিফন, জর্জেটেও ভাইরাস টিকে থাকার সম্ভাবনা বেশি। তুলনায় নাইলনে কম, সর্বাধিক ৭২ ঘণ্টা থাকে ভাইরাস। অবশ্য প্লাস্টিক ও ধাতব বস্তুতে বেশিক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে না কোভিড-১৯-এর জীবাণু। পোশাক যে পুরোটাই সুতোয় হয়, এমন নয়। পোশাকের কোথাও প্লাস্টিক বা ধাতব বোতাম থাকলে, ভাইরাস সর্বাধিক ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত জীবন্ত থাকে।’

সংক্রমণ ঠেকাতে

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির সময়ে, তার নাক ও মুখ দিয়ে জলীয় কণা বা ড্রপলেট বের হয়। এই কণা গিয়ে পড়তে পারে অন্য জনের গায়ে, কাপড়ে ও আশপাশের জিনিসের ওপর। এ ছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তির স্পর্শ করা বস্তুও কাপড়ের সংস্পর্শে এসে সংক্রমণের কারণ হতে পারে। জামা-কাপড়ের মধ্যে লেগে থাকা ভাইরাসের কণা হাতের মাধ্যমে চোখ-নাক বা মুখের মধ্য দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে, সংক্রমণ ছড়াতে পারে। তবে অহেতুক আতঙ্কিত হওয়ায় কিছু নেই। বরং যথাযোগ্য সতর্কতা অবলম্বন করাই শ্রেয়। বাইরে থেকে ঘরে ফিরেই আগে পোশাক বদলান। কখনোই সেটি অন্য কোনো পোশাক বা বস্তুর সংস্পর্শে আনবেন না। পোশাক বদলানোর সময় নিজের মুখ স্পর্শ করবেন না। মুখের কাছ থেকে দূরে রাখুন নিজের হাতও। পাল্টানোর পর হাত না ধুয়ে অন্য পোশাক বা বস্তু ধরবেন না। ফেলে রাখা পোশাকটি তখনই কাচা সম্ভব না হলে, একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে রাখুন। এমন ছোট ছোট সাবধানতা অবলম্বন করেই করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করে নিজেকে বাঁচানো সম্ভব।

ধোবেন কীভাবে

ওয়াশিং মেশিনে ধোয়ার সময় জলের তাপমাত্রা সর্বাধিক বাড়িয়ে নিন। কাপড় ধোয়ার গুঁড়ো সাবান ভাইরাস মেরে ফেলার জন্য যথেষ্ট। ২০ মিনিট সাবানজলে ভিজিয়ে রেখেই ধোবেন। কাচা হয়ে গেলে রোদে ভালো করে শুকিয়ে নিন। মনে রাখবেন, বাইরের পোশাক ও ঘরের পোশাক একসঙ্গে ধোবেন না। সম্ভব হলে পরিবারের সব সদস্যের বাইরের পোশাক আলাদাভাবে ওয়াশিং মেশিনে কেচে নিন।’

শুকনো কাপড়ে ঝুঁকি কতটা

যথেষ্ট সূর্যের আলো আসে, এমন জায়গা বেছে নিন কাপড় শুকোতে। খরখরে শুকনো হলেই তুলবেন। অল্প ভিজে অবস্থাতে কাপড়ে জীবাণু রয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই বাড়ির পাশেই করোনারোগী থাকলে কাপড় শুকোনোর ব্যাপারে অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। সর্বাধিক ছয় থেকে আট ফুটের মধ্যে আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি বা কাশির ড্রপলেট শুকনো কাপড়ে এসে লাগতে পারে। একইভাবে আক্রান্ত ব্যক্তি বা ভাইরাসের সংস্পর্শে এসেছে এমন কোনো বস্তুর ছোঁয়া শুকনো কাপড়ে লাগলেও ঝুঁকি থেকে যায়।

ধোপার বাড়িতে কাপড় ধুতে দিলে বা বাড়ির বাইরে আয়রন করতে দিলে সংক্রমণের ঝুঁকি কি আরো বেশি। সে ক্ষেত্রে কাপড় সংগ্রহ করার পর, একটি প্লাস্টিক ব্যাগে বা প্যাকেটের মধ্যে পুরে তিন দিন রেখে দেওয়ার পর ব্যবহার করুন। কারণ যিনি কাপড় বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছেন, তিনি করোনামুক্ত কি না, জানা নেই। সেখান থেকে একটা সংক্রমণের আশঙ্কা থেকেই যায়। তবে ওই ব্যাগ বা প্যাকেট অন্য কিছুর সঙ্গে কখনোই মেশাবেন না।

সূত্র : আনন্দ বাজার

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close