মাসউদুল কাদির

  ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

স্মৃতির আলেম

স্মৃতিগদ্যে ইসহাক ফরিদী অতুলনীয়

১৯৯৮ সাল। রাজধানীর চৌধুরীপাড়ার শেখ জনুরুদ্দিন (রহ.) দারুল কোরআন মাদরাসা। কথাসাহিত্যের বরপুত্র মেধাবী আলেম আল্লামা মুহাম্মদ ইসহাক ফরিদী (রহ.) ছিলেন সিপাহসালার। তাকে পেয়েছিলাম উস্তাদ হিসেবে। একান্ত আপনজন হিসেবে। প্রিয় উস্তাদ তিনি। সর্বশেষ ইন্টারভিউ তার কাছে দিয়েই একাডেমিক পড়াশোনার যাত্রা শুরু হয়েছিল। স্মৃতিগদ্যে ইসহাক ফরিদী অতুলনীয়। অনন্য মানুষ। মানবিক শক্তিতে বলীয়ান। যিনি চোখের ইশারায় শিক্ষার্থীর মন জয় করতে পারতেন। শিক্ষার্থীর আবেদন অনুধাবন ক্ষমতা ছিল তার। শিক্ষার্থীর ভাবনাকে গুরুত্ব দিতেন। ছাত্রের কাছে বলা যায় তিনি হিরো ছিলেন। পড়াশোনা, অধ্যবসায়, ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর ছিলেন। হাদিসের খেদমতে নিরলস পরিশ্রস করতে সমর্থ ছিলেন তিনি।

উস্তাদ ইসহাক ফরিদী (রহ.) একদল সমাজকর্মী তৈরি করেছিলেন। ইংরেজ খেদাও আন্দোলন নেতা সাইয়িদ হোসাইন আহমদ মাদানি (রহ.)-এর মতো ত্যাজদীপ্ত মানুষ গঠনে সক্রিয় ছিলেন। স্বাধীনতা আন্দোলনের পুরোধা সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের চেতনায় শিক্ষার্থীকে উদ্বুদ্ধ করতেন। নিজে দেওবন্দে পড়তে যেতে পারেননি। তবে খুব যত্ন নিয়ে শিক্ষার্থীদের দেওবন্দ চেনাতেন। পড়তে পাঠাতেন। আকাবির অনুসরণে অনন্য ভূমিকা রাখতেন তিনি। কেবল বইয়ের পড়া নয়, অন্য অনেক বিদ্যায় পারদর্শী করতে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দিতেন।

খুবই অল্প বয়স পেয়েছেন তিনি। ভারতের আবদুল হাই লাখনবীর মতো অল্প বয়সে ইন্তেকাল করেছেন তিনি। ৪৮ বছর বয়সেই সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ বিসর্জন দেন তিনি। আজকাল এমন মায়াবি উস্তাদ মেলা ভার। মেলে না।

তাকে খুব মনে পড়ছে। মনে পড়ছে, আমাদের সহপাঠীদের সঙ্গে উস্তাদের অতুলনীয় ব্যবহার। ভালোবাসার ডানা দিয়ে কেমন করে আগলে রাখতেন তিনি। অসাধারণ। বিরল। এমন ইসহাক ফরিদী সত্যিই বিরল। তিনি সময়কে ধারণ করতেন, আবার আধুনিক বিশ্বের উপযোগী করে আলেম গড়তেন। আল্লাহতায়ালা প্রিয় উস্তাদকে জান্নাতের উঁচু মাকাম দান করুন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close