আবাবিল শাহরিয়ার
ইসলামি বইমেলা
নতুন মোড়কে জ্ঞানের স্পন্দন
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বইমেলায় আছে নিয়মিত সিরাত, ফিলিস্তিন, জুলাই অভ্যুত্থানসহ নানা বিষয়ে আলোচনা এবং জ্ঞানভিত্তিক কর্মশালার আয়োজন
সময় ও সুযোগের ডালে ভর করে প্রাণ ফিরে পেয়েছে দেশের ‘ইসলামি বইমেলা’। পবিত্র মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে গত ২২ অক্টোবর থেকে শুরু হয় এই বইমেলা। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মেলা চলবে আগামী ১০ নভেম্বর পর্যন্ত। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন প্রথম দিনই এই বইমেলার উদ্বোধন করেন। কিন্তু বর্তমানে সৃজনশীল প্রকাশক ও সৃষ্টিশীল অনুবাদকের মাধ্যমে বৃহৎ কলেবরে এ জাতীয় বই প্রকাশিত হচ্ছে। আর পাঠক সেগুলো সংগ্রহ করে জ্ঞানান্বেষণের সুযোগ পাচ্ছেন। এটি ইসলামি ও বাংলা অনুবাদ সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করছে। তিনি আগামীতে বৃহৎ পরিসরে ইসলামি বইমেলা আয়োজনের বিষয়ে প্রকাশকদের আশ্বাস দেন।
এবারের বইমেলা জাতীয় মসজিদের দুই প্রান্ত জুড়ে দক্ষিণ ও পূর্ব চত্বরে চলছে। দক্ষিণ গেটে কিছু স্টল থাকবে এবং পূর্ব গেটের প্রশস্ত চত্বরে বৃহৎ আকারে স্টল বিন্যাস করা হয়েছে। অন্যবারের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণের বেশি জায়গা নিয়ে মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এবারের মেলায় ১৫১টি স্টল স্থান পেয়েছে। পূর্ব গেটের প্রশস্ত চত্বরে বরাদ্দ পেয়েছে প্রায় ৮৫টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান।
মেলায় পবিত্র কোরআনের অনুবাদ, তাফসির, হাদিস গ্রন্থসহ ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ের ওপর মৌলিক ও গবেষণামূলক বই পাওয়া যাবে। এ ছাড়া ইসলামিক ফাউন্ডেশনের স্টলে সব বইয়ে দেওয়া হচ্ছে ৩৫ শতাংশ কমিশন।
স্টলের সংখ্যা ও আকার বর্ধিত করার পাশাপাশি নকশায় আনা হয়েছে নান্দনিকতা। প্রকাশকরাও তাদের স্টলগুলোকে আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন করে তুলতে সাজসজ্জায় যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছেন। নতুন আঙ্গিকে ও বৈচিত্র্যময়তায় সাজানো হয়েছে এবারের বইমেলা। মেলাকে নান্দনিক ও উৎসবমুখর করতে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। যেমন- নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। নান্দনিক ডিজাইনে স্থাপন করা হচ্ছে লেখকমঞ্চ। মেলার নিয়মিত প্রচার কার্যক্রমের জন্য আছে তথ্য ও মিডিয়াকেন্দ্র। লেখক, সাংবাদিক, প্রকাশক, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা এবং দায়িত্বশীল নাগরিকদের আলাপচারিতা ও বসার জন্য আছে বিশেষ স্থান।
নিয়মিত সিরাত, ফিলিস্তিন, জুলাই অভ্যুত্থানসহ নানা বিষয়ে আলোচনা এবং জ্ঞানভিত্তিক কর্মশালার আয়োজন আছে। শিশু কর্নারকে দৃষ্টিনন্দনভাবে সজ্জিত করা হয়েছে। বিশেষ বিশেষ দিনে তাদের জন্য থাকছে শিক্ষামূলক আয়োজন। এসব আয়োজনের মধ্য দিয়ে মেলা প্রাঙ্গণের শোভা বেড়েছে অনেকটাই। এবারই প্রথম ইসলামি বইমেলা ঘিরে এমনসব আয়োজন করা হয়েছে।
নারীদের জন্য বায়তুল মোকাররম মসজিদে আলাদা নামাজের ঘর রয়েছে। বয়স্কদের জন্য হুইলচেয়ার সেবা দেওয়া হচ্ছে। মেলায় হাঁটতে হাঁটতে যারা ক্লান্ত হয়ে যাবেন, তাদের জন্য রয়েছে মসজিদের পূর্ব সায়ানে খানিকটা জিরিয়ে নেওয়ার বন্দোবস্ত। আগের তুলনায় বেশি সংখ্যায় স্বেচ্ছাসেবী মেলার সব আয়োজন সহায়তা ও শৃঙ্খলার কাজে নিয়োজিত আছে। ছুটির দিন ছাড়া বইমেলা প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা। ছুটির দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলছে।
"