প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক
বিশ্বে শনাক্ত ছাড়াল ১৪ কোটি
ক্রমেই যেন আরো বিধ্বংসী হয়ে উঠছে এই ভাইরাস। প্রতিদিনই বাড়ছে শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা। করোনার নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্ট শঙ্কিত করে তুলছে মানুষকে। টিকা নিয়েও পুরোপুরি নিস্তার মিলছে না। এরই মধ্যে দুনিয়াজুড়ে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা ১৪ কোটি ছাড়িয়েছে। গতকাল শনিবার আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারস এ তথ্য জানিয়েছে। বৈশ্বিক এই মহামারিতে এ পর্যন্ত বিশ্বের ২১৯টি দেশ ও অঞ্চল আক্রান্ত হয়েছে।
ওয়ার্ল্ডোমিটারস জানিয়েছে, এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা ১৪ কোটি ৬ লাখ ১১ হাজার ৪২৫। গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১২ হাজার ৫১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ৩০ লাখ ১৪ হাজার সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এরই মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছে ১১ কোটি ৯৪ লাখ ৩০ হাজার ৭০৯ জন।
সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় ৫ লাখ ৭৯ হাজার ৯৪২ জনের প্রাণ নিয়েছে এই মহামারি। এ ছাড়া করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ কোটি ২৩ লাখ ৫ হাজার ৯১২ জনের। আর সুস্থ হয়েছেন ২ কোটি ৪৮ লাখ ৩৬ হাজার ১৮৭ জন।
যুক্তরাষ্ট্রের পর করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ভারত। এশিয়ার মধ্যে করোনায় সবচেয়ে বিপর্যস্ত অবস্থা দেশটির। ভারতে এখন পর্যন্ত করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ১ কোটি ৪৫ লাখ ২১ হাজার ৬৮৩ জন। মারা গেছেন ১ লাখ ৭৫ হাজার ৬৭৩ জন। আর সুস্থ হয়েছেন ১ কোটি ২৬ লাখ ৬৬ হাজার ৮৮৯ জন।
তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্রাজিল। লাতিন আমেরিকার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ৩৮ লাখ ৩৪ হাজার ৩৪২ জন। তাদের মধ্যে মারা গেছেন ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৪ জন। আর সুস্থ হয়েছেন ১ কোটি ২২ লাখ ৯৮ হাজার ৮৬৩ জন।
করোনাভাইরাস শনাক্তের তালিকায় চারে ইউরোপের দেশ ফ্রান্স। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৫২ লাখ ২৪ হাজার ৩২১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন ১ লাখ ৪০৪ জন। আর সুস্থ হয়েছেন ৪ লাখ ৪৬ হাজার ২০৫ জন। উৎপত্তিস্থল চীনে আক্রান্তের সংখ্যা ৯০ হাজার ৪৮৩। এর মধ্যে ৪ হাজার ৬৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও দেশটির বিরুদ্ধে প্রকৃত পরিস্থিতি গোপন করার অভিযোগ রয়েছে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। একপর্যায়ে উৎপত্তিস্থল চীনে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কমলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশে এর প্রকোপ বাড়তে শুরু করে। চীনের বাইরে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ১৩ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে ২০২০ সালের ১১ মার্চ দুনিয়াজুড়ে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। তবে আশার কথা হচ্ছে, এরই মধ্যে করোনার একাধিক টিকা আবিষ্কৃত হয়েছে। দেশে দেশে টিকা দেওয়া হচ্ছে মানুষকে।
ব্রাজিলে চল্লিশের কম বয়সিরা করোনার উচ্চঝুঁকিতে : ব্রাজিলে গত সপ্তাহে যারা কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন তারা অধিকাংশই তরুণ, যাদের বয়স চল্লিশের নিচে। দেশটির ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিন অ্যাসোসিয়েশন বলছে, হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তরুণ রোগীদের সংখ্যা বাড়ছে। ফলে আইসিইউতে চাপ বাড়ছে। ব্রাজিলের এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে জানান, তরুণ জনগোষ্ঠী এত বেশি কোভিডে কেন আক্রান্ত হচ্ছে, তা বিস্তারিত এখনো জানা যায়নি। তবে করোনার যে ভিন্ন ধরন দেখা যাচ্ছে আক্রান্তের কারণ সেটা হতে পারে।
এ কথা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন সাও পাউলো ইউনিভার্সিটির সংক্রামক বিশেষজ্ঞ মারকাস বাউলোস। তিনি বলেন, এটি করোনার নতুন ধরন বা স্ট্রেইনের সঙ্গে পরিষ্কারভাবে জড়িত। ব্রাজিলে ভয়ংকর এই স্ট্রেইনটির নাম পি.১। এটি ব্রাজিল ভ্যারিয়েন্ট নামেও পরিচিত। ব্রাজিল ভ্যারিয়েন্ট এখন পর্যন্ত ৩৬টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু তা-ই নয়, যারা করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে ওঠে আবার আক্রান্ত হচ্ছেন তার কারণ এই ভ্যারিয়েন্ট।
ব্রাজিলিয়ান গবেষক ফিলিপ নাভেকা জানান, অতি সংক্রামক এই ভ্যারিয়ান্টের অনেক ক্ষমতা। এটি টিকার কার্যকারিতাকেও হার মানায়।
"