প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৪ এপ্রিল, ২০২১

টিএলপি নেতা গ্রেপ্তার

বিক্ষোভ অবরোধ পাকিস্তানজুড়ে

আল্লামা সাদ হুসাইন রিজভি নামে এক ডানপন্থি ধর্মীয় এক নেতাকে গ্রেপ্তার করায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে পাকিস্তানজুড়ে। গত সোমবার শুরু হওয়া বিক্ষোভ গভীর রাত গড়িয়ে গতকাল মঙ্গলবার সকালেও হয়েছে।

এর আগে ওইদিনই তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান পার্টির (টিএলপি) প্রধান আল্লামা সাদ হুসাইন রিজভিকে গ্রেপ্তার করে কেন্দ্রীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ইসলাম নিয়ে কার্টুনের প্রতিবাদ স্বরূপ পাকিস্তান থেকে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার ও পণ্য আমদানি বন্ধের দাবি জানানোর এক দিন পরই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত সোমবার লাহোরে একটি শোক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া রিজভিকে গ্রেপ্তারের পরই বিক্ষোভ শুরু করেন তার সমর্থকরা। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে তারা লাহোর, ইসলামাবাদ, পেশোয়ার ও গুজরাওয়ালার মতো প্রধান প্রধান শহরের মহাসড়ক অবরুদ্ধ করে ফেলে। একইভাবে রেল যোগাযোগও বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপরই রিজভির অনুসারীদের হটাতে চেষ্টা করলে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন স্থানে।

দেশটির হাইওয়ে ও মোটরওয়ে পুলিশ বলেছে, টিএলপি সমর্থকরা অন্তত মহাসড়কের ৫০টি স্থানে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। পাঞ্জাবের কাসুর ও নরোওয়ালের রেললাইনে অবস্থান নেন তারা।

এরই মধ্যে সোমবার সন্ধ্যায় পুলিশের গুলিতে ফয়সালাবাদ টিএলপির এক সমর্থক নিহত হয়। এ ঘটনার ছবি সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সহিংস হয়ে ওঠে বিক্ষুব্ধরা। পরে করাচির বিক্ষোভে গুলি চালালে আরেকজনের মৃত্যু হয়।

করাচির পুলিশ প্রধান অতিরিক্ত আইজি গুলাম নবী মেমন বলেন, বিক্ষোভকারীরা নগরীর অন্তত ১০টি সড়কে অবস্থান নেন। প্রত্যেক অংশে ২০০ থেকে ৬০০ কর্মী রয়েছেন। পুলিশ তাদের সরানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

একইসঙ্গে রাওয়ালপিন্ডি থেকে ৩৫ জন এবং চাকওয়াল ও গুজার থেকে ৪৯ জন টিএলপি কর্মীকে আটক করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

এদিকে, টিএলপি সমর্থকরা মুরে ও আজাদ কাশ্মীরে যাওয়ার প্রধান সড়কের ভারা কাহুতে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন এবং তা বন্ধ করে দেন। একইসঙ্গে আথাল চৌকের যান চলাচলও বন্ধ করে দেয়।

এমন পরিস্থিতিতে বিক্ষোভকারীদের রাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘাতে না জড়াতে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। বুধবার রাতে টেলিভিশন ভাষণে ইমরান বলেন, এভাবে বিক্ষোভের মাধ্যমে ব্ল্যাকমেইল করলে কোনো সরকার চলতে পারে না। আর এর জন্য দুর্ভোগ পোহাচ্ছে আমাদের সাধারণ লোকজন, গরিবরা। আপনারা রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন, আপনারা লোকজনের জীবন-জীবিকা ছিনিয়ে নিচ্ছেন। এটা ইসলামের সেবা নয়, এটা রাষ্ট্রের সঙ্গে শত্রুতা।

ব্লাসফেমি আইনে দোষী সাব্যস্ত খ্রিষ্টান নারী আসিয়া বিবিকে ২০১০ সালে মৃত্যুদ- দেন লাহোর হাইকোর্ট। আসিয়া শুরু থেকেই নিজেকে নির্দোষ দাবি করে এসেছেন। আট বছর ধরে তাকে কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে দিন কাটাতে হয়েছে। আসিয়ার আপিল আবেদন গ্রহণ করে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট বুধবার তাকে খালাস দেন। এর পরপরই ইসলামাবাদ, করাচি, লাহোর, পেশোয়ার ও মুলতানে বিক্ষোভ দেখা দেয়। কট্টরপন্থি তেহরিক-ই-লাবাইক পার্টির বিক্ষোভকারীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close