ডা. মির্জা মো. জিয়াউল ইসলাম

  ০৮ আগস্ট, ২০২৪

শিশুর ভিটামিন-ডির অভাব হলে

ভিটামিন-ডি চর্বিতে দ্রবণীয় একটি ভিটামিন। এর মধ্যে আছে ভিটামিন ডি১, ডি২ ও ডি৩। সরাসরি সূর্যের আলোয় আমাদের শরীর প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিন-ডি উৎপন্ন করে। তবে নির্দিষ্ট কিছু খাবার থেকেও ভিটামিন-ডি পাওয়া যায়।

ভিটামিন-ডি পেতে হলে অবশ্যই ত্বকে সরাসরি সূর্যের আলো লাগাতে হবে। সে ক্ষেত্রে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা যাবে না। এ ছাড়া বেশি পোশাকও ব্যবহার করা যাবে না। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টার মধ্যে রোদে থাকতে হবে। এ সময়ের রোদ ভিটামিন-ডির খুব ভালো উৎস।

বাইরে বের হয়ে যখন দেখবেন, আপনার ছায়া আপনার তুলনায় ছোট, সেই সময়ের রোদ ত্বকে সবচেয়ে ভালো ভিটামিন-ডি উৎপন্ন করতে পারে। আমাদের দেশে বেশির ভাগ মানুষের গায়ের রং শ্যামবর্ণের হয়। এটি শরীরে ভিটামিন-ডি শোষণ হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা। কারণ, শ্যামবর্ণের ত্বকে মেলানিন নামের রঞ্জক পদার্থ থাকে, যা অতিবেগুনি রশ্মিকে বাধা দেয়। যাদের গায়ে রং উজ্জ্বল, তাদের প্রতিদিন ২০ মিনিট সূর্যের আলোয় থাকলে শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিন-ডি তৈরি হবে।

ভিটামিন-ডির পরিমাপ : রক্তের সিরামে ভিটামিন-ডি’র মাত্রা পরিমাপ করা হয়। শিশুর শরীরে এই ভিটামিনের ঘাটতি আছে- এমন সন্দেহ হলে এর মাত্রা পরিমাপ করার উদ্যোগ নিতে হবে। তবে ভিটামিন-ডি’র ঘাটতি ও পরবর্তী চিকিৎসা পদ্ধতি নিরূপণের জন্য রক্তের ক্যালসিয়াম, প্যারাথাইরয়েড হরমোন ও ফসফরাসের মাত্রাও দেখে নিতে হয়।

ভিটামিন-ডি’র অন্যান্য উৎস : ডিমের সাদা অংশ, পনির বা চিজ, গরু বা খাসির কলিজা, কড লিভার অয়েল বা মাছের তেল, দুধ ও সয়ামিল্ক এবং ভিটামিন-ডি সাপ্লিমেন্ট।

ভিটামিন-ডি’র উপকারিতা : হাড় শক্ত ও দাঁত শক্ত করে, পেশির শক্তি বাড়ায়, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়, ওজন কমাতে সাহায্য করে।

ভিটামিন-ডি ঘাটতির লক্ষণ : হাড়ের বিকৃতি বা রিকেট রোগ, হাড়ের ক্ষয়, অত্যধিক ক্লান্তি, ওজন বৃদ্ধি, চুল পড়া, ক্ষত শুকাতে দেরি হওয়া, মানসিক অবসাদ, পিঠে ব্যথা, মাংসপেশির দুর্বলতা, হাড়ে ফাটল ও বিষণ্ণতা।

প্রতিকার ও প্রতিরোধ : শিশুকে প্রতিদিন কিছুক্ষণ রোদে থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। বুকের দুধ খাওয়া শিশু ও মাকে প্রতিদিন কিছুক্ষণ সূর্যের আলোয় থাকতে হবে। প্রতিদিন শিশুকে ভিটামিন-ডি’সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে হবে। শিশুর হাত ও কবজি বাঁকা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

পরামর্শ : সহযোগী অধ্যাপক, নবজাতক ও শিশু বিশেষজ্ঞ, বিভাগীয় প্রধান, শিশু সংক্রামক রোগ বিভাগ, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close