ডা. মো. আরমান হোসেন রনি
রাতকানা রোগ প্রতিরোধে যা করতে হবে

জেরোপথ্যালমিয়া নামের একটি রোগ আছে যা ভিটামিন এ এর অভাবে হয়ে থাকে। এই রোগের ৮ থেকে ৯টি পর্যায় আছে। এর শেষ পর্যায় চোখের কর্নিয়া একদম নষ্ট হয়ে যাওয়া এবং রোগীর দৃষ্টিশক্তি হারানো। এই রোগের প্রথম পর্যায় রাতকানা রোগ। ভিটামিন এ এর অভাবে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে শিশুরা রাতকানা রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। আমাদের দেশে ছয় বছর বয়সের শিশুরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে।
কারণ : শরীরে ভিটামিন এ এর অভাব; অল্প ওজনে শিশুর জন্ম নেওয়া অর্থাৎ অপুষ্টিতে ভোগা; নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া ইত্যাদি রোগ হওয়া; বাড়ন্ত বয়সের শিশুদের অতিরিক্ত খাদ্যের চাহিদা পূরণ না হওয়া।
লক্ষণ : প্রাথমিক পর্যায়ে ভোরের ও সন্ধ্যার অল্প আলোতে দেখতে অসুবিধে হওয়া; পরে চোখ শুষ্ক অনুভূত হওয়া; চোখে ছোট ছোট ছাই রঙের দাগ হওয়া; চোখের কর্নিয়াতে ঘা হয়ে কর্নিয়া ঘোলাটে হয়ে যাওয়া; অনেক সময় কর্নিয়ায় ফোঁড়ার মতো দেখা দেওয়া।
প্রতিরোধ : মায়ের দুধে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ থাকে। তাই জন্মের পর শিশুকে মায়ের শালদুধ খাওয়াতে হবে। সন্তানকে জন্মের প্রথম পাঁচ সপ্তাহ মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। সম্ভব হলে ২ বছর পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়ানো অব্যাহত রাখতে হবে। ৯ মাস বয়সে শিশুকে হামের টিকার সঙ্গে একটি নীল রঙের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়াতে হবে।
১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুকে বছরে দুবার ৬ মাস অন্তর অন্তর জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন বা জাতীয় টিকা দিবসের সময় একটি লাল রঙের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়াতে হবে। শিশুকে কোনোভাবে অপুষ্টিতে ভুগতে যাওয়া যাবে না। ছোটবেলা থেকে ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে হবে। শিশু হাম, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হলে দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
পরামর্শ দিয়েছেন : ডা. মো. আরমান হোসেন রনি চক্ষুবিশেষজ্ঞ ও সার্জন, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা
"