নিজস্ব প্রতিবেদক
মূল্যস্ফীতি কমাতে আরো ৩ মাস সময় চান অর্থ উপদেষ্টা

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাড়তি মূল্যস্ফীতিতে মানুষ সমস্যায় রয়েছে- এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তবে তা কমাতে এরই মধ্যে বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর প্রভাবে মূল্যস্ফীতি কমতে আরো ২ থেকে ৩ মাস অপেক্ষা করতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। অর্থ উপদেষ্টা আরো বলেন, আমাদের মূল্যস্ফীতির দিকে মূল মনোযোগ আছে, যতটুকু সম্ভব, যত তাড়াতাড়ি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারি। এখন আমরা যে উদ্যোগটা নেব, সেটার প্রভাব বাজারে দেখতে পারবেন। আশা করছি, জুন মাসের দিকে মূল্যস্ফীতিতে একটা আইডল, ৬-৭ শতাংশে যেতে পারি। তিনি বলেন, সরকার আসন্ন রোজায় নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আরো কিছু পদক্ষেপ নেবে। এসব উদ্যোগের ফলে আগামী জুন নাগাদ গড় মূল্যস্ফীতি ৬ থেকে ৭ শতাংশে নেমে আসবে।
মূল্যস্ফীতি নিয়ে আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও রোজার সময় একটা ক্রাইসিস থাকে। আর এ সময়ের জন্য বড় ধরনের একটা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, সেটার ফল এপ্রিল-মে’র দিকে গিয়ে পড়বে। এজন্য এপ্রিল, মে পর্যন্ত কোনো নিত্যপণ্যের সরবরাহে ঘাটতি হতে দেব না। সেজন্য আজ (মঙ্গলবার) চাল, ডাল, সারসহ অত্যাবশকীয় কতগুলো পণ্যের আমদানির অনুমোদন দিয়েছি।’ প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, গত আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে মাসভিত্তিক সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে রয়েছে। গত ডিসেম্বরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ১০.৮৯ শতাংশ। তবে একই সময়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২.৯২ শতাংশ। গত জুলাইয়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪.১০ শতাংশে উঠেছিল।
ভ্যাট নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, কিছু কিছু বিষয়ে ভ্যাট ইস্যুর জন্য দাম বেড়েছে, যেমন বিস্কুট। যাই হোক, এসব বিষয় নিয়ে আমরা পরশু দিন (বৃহস্পতিবার) ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসব। মার্চের দিকে বাজেট পুনর্মূল্যায়ন করব। সেখানে নিদিষ্ট কিছু অ্যাকশন দেখবেন। বিশেষ করে অর্থনৈতিক খাতে। মেইন উদ্দেশ্য ভ্যাটের। দিনের পর দিন ছাড় দেওয়া হয়েছে। এগুলো আর উৎসাহ দেব না। এর মধ্যে হয়তো দুই একটা পণ্যে প্রভাব পড়েছে। এতে লোকজনের কিছুটা কষ্ট হচ্ছে, সেটা লাঘব করার চেষ্টা করব। আয়করের বিষয় আছে, সেটা দেখব। যাতে অন্য ট্যাক্স তাদের কম হয়। তিনি বলেন, আমরা ক্রয় কমিটিতে চাল, মসুর ডাল ক্রয়ে অনুমোদন অনবরত দিয়ে যাচ্ছি। এতে কিন্তু আমাদের ফরেন এক্সচেঞ্জে বিরাট একটা চাপ রয়েছে, তারপরও দিচ্ছি।
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের যে পরিমাণ অর্থের ব্যয় হচ্ছে এতে কতটা চাপ পড়ছে বাইরে থেকে জানার কথা না। সেটা ব্যাংকার ও আমি জানি। তবে কোনো খারাপ অবস্থা না। যদি আমরা কাউন্টার ইস্যুগুলো না নিই, তাহলে বাংলাদেশের অবস্থা একটা অকল্পনীয় অবস্থায় চলে যেত। কারণ কোথাও কোনো অর্থ নেই। সব ব্যাংক থেকে অর্থ নিয়ে গেছে। বিশ্বের কোনো দেশে এমন হয়েছে বলে আমার জানা নেই। ব্যাংকের ডিপোজিটের টাকাসহ চলে গেছে। টাকা তো নেই ব্যাংকের কাছে। সেই টাকাগুলো আমরা দিচ্ছি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলেছি, কীভাবে বিশেষ ফান্ড করে দেওয়া যায়।
"