জাবি প্রতিনিধি

  ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

পোষ্য কোটা বাতিল দাবি

এবার উত্তাল জাবি, প্রশাসনিক ভবনে তালা

ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য বরাদ্দকৃত পোষ্য কোটা বাতিল দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)। আন্দোলনের মুখে এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পোষ্য কোটার সংখ্যা কমালেও সম্পূর্ণ বাতিল দাবিতে বিক্ষোভ-মিছিল শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। এতে ভেতরে আটকা পড়েন প্রশাসনিক ভবনে অবস্থানরত শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

অন্যদিকে আগের মতো পোষ্য কোটা বহালের দাবিতে আজ বুধবার থেকে লাগাতার কর্মবিরতি ঘোষণা দিয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। ভর্তিতে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে বেশ কয়েকদিন ধরেই বিক্ষোভ মিছিল, অবস্থান কর্মসূচি ও অনশন পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের অনশনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার পোষ্য কোটার বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। এতে পোষ্য কোটা ১৪৮টির জায়গায় মাত্র ৪০ আসন রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে তাতে রাজি না হয়ে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১টা ৫০ এর দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলার ভাসানী চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়।

মিছিলটি বিভিন্ন হল ঘুরে লাইব্রেরি হয়ে নতুন রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। এ সময় রেজিস্ট্রার ভবনের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। বিকেল ৪টায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য ভিসি এলে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন তিনি। শিক্ষার্থীরা বলছেন, পোষ্য কোটা মানেই অযোগ্যদের সুযোগ করে দেওয়া। পোষ্য কোটা নিয়ে গতকাল প্রশাসন সংস্কারের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। কিন্তু আমরা তা প্রত্যাখ্যান করে অবিলম্বে পোষ্য কোটা পুরোপুরি বাতিল করার দাবি জানাচ্ছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন তারা।

শিক্ষার্থীদের অনশনের পরিপ্রেক্ষিতে পোষ্য কোটার বিষয়ে প্রশাসনের পরিবর্তিত সিদ্ধান্ত হলো আগে প্রতি বিভাগে সর্বোচ্চ চার জন করে মোট ১৪৮ জনের ভর্তির সুযোগ ছিল, এখন সেটা ৪০টি আসনে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। আগে পোষ্য হিসেবে সন্তান, স্ত্রী, ভাই ও বোন এ সুবিধা পেতেন- এখন শুধু সন্তানের ক্ষেত্রে এ সুবিধা পাবেন এবং একজন চাকরিজীবী একবারই এ সুবিধা ভোগ করবেন। অর্থাৎ একজন চাকরিজীবীর যদি একাধিক সন্তান থাকেন, তবু তিনি একটি সন্তানের ক্ষেত্রেই এ সুবিধা পাবেন। আগে চাকরিজীবীরা যে বিভাগে চাকরি করতেন, সে বিভাগেও পোষ্যরা ভর্তি হতে পারতেন, এখন সে সুযোগ রাখা হয়নি।

এ ঘটনায় সকালে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন কর্মকর্তা কর্মচারীরা। এ সময় শিক্ষার্থীদের ‘পৌষ্য কোটা বাতিল চাই’ এ শিরোনামে লাগানো পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে তারা। এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাগবিতণ্ডা হয়। এরপরই বিক্ষোভ মিছিল বের করে প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পোষ্য কোটা বাতিলের আন্দোলনে যেহেতু কর্মচারীরা শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত তুলেছে; তাই আমরা এখন পোষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিল চাই।

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আন নাফি বলেন, আমরা নতুন বাংলাদেশে কোনো ধরনের পৌষ্য কোটা দেখতে চাই। এটি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক কোটা। আমরা এ কোটা জাহাঙ্গীরনগরে দেখতে চাই না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী সৃষ্টি বলেন, যে কর্মকর্তা কর্মচারীরা আমাদের হুমকি দিতে পারে, তাদের আমরা জাহাঙ্গীরনগরে চাই না। যদি প্রশাসন পোষ্য কোটা বাতিল ও যথাসময়ে জাকসু বাস্তবায়ন করতে না পারেন, তাহলে আরো একটা আন্দোলনের সূচনা হবে জাহাঙ্গীরনগর থেকে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close