নিজস্ব প্রতিবেদক
ভোটার তালিকাভুক্ত হচ্ছেন ৫০ লাখ

বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে বাদপড়া ও নতুন ভোটারযোগ্য ব্যক্তি মিলিয়ে ৫০ লাখ মানুষের তথ্য সংগ্রহ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষে তারা ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্ত হবেন। অন্যদিকে হালনাগাদ কার্যক্রমে ১৫ লাখ মৃত ভোটারের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। ভোটার তালিকা থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়া হবে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। ইসির তথ্যানুযায়ী, চলতি বছর ২০ জানুয়ারি থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদের জন্য তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করেছিল নির্বাচন কমিশন। সোমবার সেই তথ্য সংগ্রহের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। চলমান ভোটার হালনাগাদ কর্মসূচিতে ৪৯ লাখ ৭৬ হাজার ৮৪৫ জনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, যদিও লক্ষ্য ছিল ৬১ লাখের ৮৯ হাজার ৩৭৫ জন।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, সোমবার পর্যন্ত অতীতে যারা ভোটার হতে পারেননি- এমন বাদপড়াদের মধ্যে ভোটার বৃদ্ধির হার ২.৪৪ শতাংশ এবং নতুন ভোটার যারা আগামী বছর ১ জানুয়ারি আঠারো বছর বা ভোটারযোগ্য হবেন- এমন সংখ্যা বৃদ্ধির হার ১.৪৫ শতাংশ। মোট ভোটার বৃদ্ধির হার ৪ শতাংশ। তথ্যানুযায়ী, বাদপড়া ভোটার যুক্ত হয়েছেন ৩১ লাখ ২৭ হাজার ৫১৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৪ লাখ ৬৪ হাজার ৩৮০, নারী ১৬ লাখ ৬২ হাজার ৯৯২ এবং হিজড়া ১৪৭ জন। নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছেন ১৮ লাখ ৪৯ হাজার ৩২৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৯ লাখ ৫৩ হাজার ৩১২, নারী ৮ লাখ ৯৫ হাজার ৭৭৬ এবং হিজড়া ২৩৮ জন। হালনাগাদে তালিকা থেকে মৃত ভোটারের নাম বাদ পড়ছে ১৫ লাখ ২৭ হাজার ৪২৪ জনের। এর মধ্যে পুরুষ ৮ লাখ ৭৩ হাজার ৪২৯, নারী ৬ লাখ ৫৩ হাজার ৪০৯ এবং হিজড়া ৫৮৮ জন।
সোমবার তথ্য সংগ্রহ শেষে আজ বুধবার শুরু হচ্ছে ছবি তোলা, আঙুলে ছাপ ও চোখের আইরিশের প্রতিচ্ছবি নেওয়ার কাজ, যা চলবে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যে স্থানীয় নিবন্ধন কেন্দ্রে গিয়ে ভোটার হতে পারবেন বাদপড়ারা। ছবি তোলার কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে সরাসরি ফরম-২ পূরণ করে ছবি ও আঙুলের ছাপ দিয়ে ভোটার হওয়া যাবে। ২০০৮ সালের ১ জানুয়ারি অথবা তার আগে যাদের জন্ম, যারা বাদ পড়েছেন, তাদের ভোটার তালিকাভুক্তি ও মৃত ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ এবং আবাসস্থল পরিবর্তনের কারণে স্থানান্তর করার তথ্য থাকবে হালনাগাদে।
ইসির এনআইডি উইংয়ের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর বলেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ শেষ হলেও কেউ বাদ পড়লে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে স্থানীয় নিবন্ধন কেন্দ্রে গিয়ে ভোটার হতে পারবেন। ২০২৪ সালের ২ মার্চ প্রকাশিত চূড়ান্ত তালিকায় ভোটার ছিলেন ১২ কোটি ১৮ লাখের বেশি। গত ২ জানুয়ারি গত বছরের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করে ইসি। তাতে নতুন করে যুক্ত হয় ১৮ লাখ ৩৩ হাজার ৩৫২ জনের নাম। তাতে ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৩৬ লাখ ৮৩ হাজার ৫১২ জন। আগামী ২ মার্চ তাদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হবে।
এবার হালনাগাদে যারা যুক্ত হচ্ছেন, তাদের কাজ জুনের মধ্যে শেষ করতে চায় ইসি। সেক্ষেত্রে নতুনদের যোগ করে এবং মৃতদের বাদ দিয়ে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের আগে চূড়ান্ত ভোটার সংখ্যা জানা যাবে। ডিসেম্বরে ভোট হলে তথ্য সংগ্রহ করা অনেকেই ভোটার তালিকাভুক্ত হতে পারবে না। আর ২ জানুয়ারির পরে ভোট হলে নতুন করে যাদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, তাদের সবাই তালিকাভুক্ত হতে পারবে।
"