নিজস্ব প্রতিবেদক

  ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫

একুশে বইমেলা কাল শুরু

‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান : নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে আগামীকাল শনিবার ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে অমর একুশে বইমেলা। এবারের বইমেলা উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমির আবদুল করীম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে মেলা উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মেলা কমিটির সদস্য সচিব ড. সরকার আমিন।

প্রধান উপদেষ্টা বইমেলা উদ্বোধন করবেন উল্লেখ করে ড. সরকার আমিন বলেন, ‘আগামী ১ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টায় বইমেলা উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জ্ঞানভিত্তিক, মানবিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে বই এবং বইমেলা সহায়ক। আমরা আশা করি, সব সম্ভাবনায় আলোকিত হবে এবারের মেলা।’

তিনি বলেন, ‘এবার বইমেলার বিন্যাস গতবারের মতো অক্ষুণ্ণ রয়েছে। তবে কিছু আঙ্গিকগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিশেষ করে মেট্রোরেল স্টেশনের অবস্থানগত কারণে গতবারের মেলার বাহিরপথ এবার একটু সরিয়ে মন্দির-গেটের কাছাকাছি স্থানান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া টিএসসি, দোয়েল চত্বর, এমআরটি বেসিং প্লান্ট এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন অংশে মোট চারটি প্রবেশ ও বাহিরপথ থাকবে। খাবারের স্টলগুলো ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনের সীমানা ঘেঁষে বিন্যস্ত করা হয়েছে।

খাবারের স্টলগুলোকে এবার সুবিন্যস্ত করা হয়েছে বিশেষভাবে। এ ছাড়া নামাজের স্থান, ওয়াশরুমসহ অন্য পরিষেবা অব্যাহত থাকবে।’

মেলা কমিটির সদস্য সচিব বলেন, ‘মন্দির গেটে প্রবেশের ঠিক ডানদিকে বড় পরিসরে শিশুচত্বর রাখা, যাতে শিশুরা অবাধে বিচরণ করতে পারে এবং তাদের কাঙ্ক্ষিত বই সহজে সংগ্রহ করতে পারে। সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে। বইমেলায় বাংলা একাডেমি ও মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্য প্রতিষ্ঠান ২৫ শতাংশ কমিশনে বই বিক্রি করবে। প্রতিদিন বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে সেমিনার এবং সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বাংলা একাডেমির তিনটি প্যাভিলিয়ন এবং শিশু-কিশোর উপযোগী প্রকাশনার বিপণনের জন্য একটি স্টল থাকবে। ৮ ফেব্রুয়ারি ও ১৫ ফেব্রুয়ারি ছাড়া প্রতি শুক্র ও শনিবার মেলায় বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শিশুপ্রহর থাকবে। অমর একুশে উদযাপনের অংশ হিসেবে শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি এবং সংগীত প্রতিযোগিতার আয়োজন থাকছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা থাকবে।’

বইমেলার প্রবেশ ও বাহিরপথে পর্যাপ্ত সংখ্যক আর্চওয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন ‘মেলার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে বাংলাদেশ পুলিশ, র‌্যাব, আনসার ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। নিণ্ডিদ্র নিরাপত্তার জন্য মেলা এলাকাজুড়ে তিন শতাধিক ক্লোজসার্কিট ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বইমেলা পলিথিন ও ধূমপানমুক্ত থাকবে। নিরাপত্তার স্বার্থে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকবে মেলাপ্রাঙ্গণ ও পার্শ্ববর্তী এলাকায়। মেলার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং নিয়মিত ধুলা নিবারণের জন্য পানি ছেটানো এবং প্রতিদিন মশকনিধনের সার্বিক ব্যবস্থা করা হবে।’

সরকার আমিন আরো বলেন, ‘অমর একুশে বইমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের ২০২৪ সালে প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণগতমান বিচারে সেরা বইয়ের জন্য প্রকাশককে চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার এবং ২০২৪ সালের বইমেলায় প্রকাশিত বইয়ের মধ্য থেকে শৈল্পিক বিচারে সেরা বই প্রকাশের জন্য তিনটি প্রতিষ্ঠানকে মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হবে।’

তিনি জানান, ২০২৪ সালে প্রকাশিত শিশুতোষ গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণগত মান বিচারে সর্বাধিক গ্রন্থের জন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার এবং এ বছরের মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে স্টলের নান্দনিক সাজসজ্জায় শ্রেষ্ঠ বিবেচিত প্রতিষ্ঠানকে কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হবে। এবারের বইমেলা বাংলা একাডেমি প্রকাশ করছে নতুন ৪৩টি ও পুনর্মুদ্রিত ৪১টি বই।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে। রাত সাড়ে ৮টার পর নতুন করে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারবেন না। ছুটির দিন বইমেলা চলবে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত (৮ ফেব্রুয়ারি ও ১৫ ফেব্রুয়ারি ছাড়া)। ২১ ফেব্রুয়ারি মেলা শুরু হবে সকাল ৮টা এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close