নিজস্ব প্রতিবেদক

  ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫

দেশে গরিব মানুষের সংখ্যা বেড়েছে

বিবিএসের জরিপ

দেশে দারিদ্র্যের হার ১৮.৭ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯.২ শতাংশে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রোভার্টি ম্যাপ অব বাংলাদেশ ২০২২ এর ফলাফলে এসেছে এমন তথ্য। এতে দেখা যায়, গ্রামে দারিদ্র্যতা কমেছে। হাউস হোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেনডিচার সার্ভে গ্রামে দারিদ্র্যের হার ছিল ২০.৫ শতাংশ, যা প্রোভার্টি ম্যাপ অব বাংলাদেশ ২০২২ এর সার্ভেতে কমে হয়েছে ২০.৩ শতাংশ। অন্যদিকে শহর এলাকায় দারিদ্র্যতা বেড়েছে ১.৮ শতাংশ। আগে শহরে দারিদ্র্যের হার ছিল ১৪.৭ শতাংশ, যা এখন বেড়ে হয়েছে ১৬.৫ শতাংশ।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে প্রভার্টি ম্যাপ প্রকাশ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এটি যৌথভাবে আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), বিশ্বব্যাংক এবং ওয়াল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি)।

দারিদ্র্য ম্যাপ প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ওয়াল্ড ফুড প্রোগ্রামের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর সামনো লাওসন পার্সিমেন্ট, বিশ্বব্যাংকের হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রোগ্রাম লিডার এস আমের আহমেদ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মহিউদ্দিন আহমেদ। প্রশ্নোত্তর পর্ব পরিচালনা করেন ড. দীপঙ্কর রায়।

প্রভার্টি ম্যাপে বলা হয়েছে, দারিদ্র্যের হার সবচেয়ে বেশি বরিশাল বিভাগে ২৬.৬ শতাংশ; আর সবচেয়ে কম চট্টগ্রাম বিভাগে। সেখানে দারিদ্র্যের হার ১৫.২ শতাংশ। রংপুরে দারিদ্র্যের হার ২৫ শতাংশ। রাজশাহীতে ১৬.৩ শতাংশ, সিলেটে ১৮.৫ শতাংশ, ময়মনসিংহে ২২.৬ শতাংশ, খুলনায় ১৭.১ শতাংশ আর ঢাকা বিভাগে দারিদ্র্যের হার ১৯.৬ শতাংশ। পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য বলছে, দারিদ্র্যতা বেড়েছে সিলেট, রংপুর, খুলনা ও ঢাকা বিভাগে। বরিশালে দারিদ্র্যের হার বেশি হলেও তা আগের ২৬.৯ শতাংশের তুলনায় ০.৩ শতাংশ কমে এখন হয়েছে ২৬.৬ শতাংশ। হাউস হোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেনডিচার সার্ভেতে ঢাকার দারিদ্র্যের হার ছিল ১৭.৯ শতাংশ, যা প্রোভার্টি ম্যাপ অব বাংলাদেশ ২০২২ সার্ভেতে বেড়ে হয়েছে ১৯.৬ শতাংশ।

দারিদ্র্য ম্যাপে আরো দেখা যায়, দেশের সবচেয়ে দারিদ্র্য উপজেলা মাদারীপুরের দাসার উপজেলা ৬৩.২ শতাংশ। ২০১০ সালের সার্ভেতে এ উপজেলার দারিদ্র্যের হার ছিল ৪৬.৬ শতাংশ। ঢাকার পল্টনে দারিদ্র্যের হার সবচেয়ে কম ১ শতাংশ।

হাজং সম্প্রদায়ে শিক্ষার হার ৬৪.০৮ শতাংশ : শেরপুর জেলায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মধ্যে হাজং সম্প্রদায়ে সবচেয়ে বেশি শিক্ষিত জনগোষ্ঠী। এ জনগোষ্ঠীর পুরুষদের মধ্যে ৭৯.২ শতাংশ এবং নারী ৬৮.৩ শতাংশ শিক্ষিত। এই জেলায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ৬৪.০৮ শতাংশ শিক্ষিত। এর মধ্যে পুরুষ ৬৯.১৩ শতাংশ এবং নারী ৫৯.০৭ শতাংশ শিক্ষিত।

গত মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) বাস্তবায়নাধীন শেরপুর জেলায় বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা জরিপ ২০২৩-এর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

বিবিএস জানায়, শেরপুরের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের হার ১৫ থেকে বেশি বছর বয়সের মানুষের মধ্যে ৫১.৮৪ শতাংশ। এর মধ্যে ঝিনাইগাতী উপজেলায় কর্মসংস্থানে যুক্ত পুরুষ ৭৩.৫২ শতাংশ এবং নারী ৪৯.২১ শতাংশ। নকলা উপজেলায় কর্মসংস্থানে যুক্ত পুরুষ ৭৩.৩৩ শতাংশ এবং নারী ২০.৯২ শতাংশ। নালিতাবাড়ী উপজেলায় কর্মসংস্থানে যুক্ত পুরুষ ৬৩.৪১ শতাংশ এবং নারী ২৬.৮৬ শতাংশ। শেরপুর সদর উপজেলায় কর্মসংস্থানে যুক্ত পুরুষ ৭৬.১৫ শতাংশ এবং নারী ১৯.০৭ শতাংশ। শ্রীবরদী উপজেলায় কর্মসংস্থানে যুক্ত পুরুষ ৭৪.৮১ শতাংশ এবং নারী ২৯.২১ শতাংশ।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন।

বিশেষ অতিথি ছিলেন শেরপুর জেলার জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান, সংস্কৃতিবিষয়ক অতিরিক্ত সচিব ফরহাদ সিদ্দিক এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হামিদুল হক, শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান। প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন প্রকল্পটির পরিচালক ফারহানা সুলতানা। বক্তব্য দেন প্রভার্টি ফোকাল পয়েন্ট মহিউদ্দিন আহমেদ ও প্রশ্নোত্তর পর্ব পরিচালনা করেন, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম সচিব দীপঙ্কর রায়।

শেরপুরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বেকারত্বের হার ৩.৮০ শতাংশ : শেরপুর জেলায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মধ্যে বেকারত্বের হার ৩.৮০ শতাংশ বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। গত মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) বাস্তবায়নাধীন শেরপুর জেলায় বসবাসরত ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা জরিপ ২০২৩-এর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

বিবিএস জানায়, শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলায় বেকার পুরুষের হার ৩.০২ শতাংশ এবং নারী বেকার ৩.৪৬ শতাংশ। নকলা উপজেলায় পুরুষ বেকার ৪.০৪ শতাংশ এবং নারী ৩.০২ শতাংশ। নালিতাবাড়ী উপজেলায় পুরুষ বেকার ৩.৫৬ শতাংশ এবং নারী ৪.৬১ শতাংশ। শেরপুর সদর উপজেলায় বেকার পুরুষ রয়েছে ৪.৮৪ শতাংশ এবং নারী ৭.১০ শতাংশ। শ্রীবরদী উপজেলায় বেকার পুরুষ ২.৮৬ শতাংশ এবং নারী ৩.৮৪ শতাংশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শেরপুর জেলায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মধ্যে প্রতিবন্ধীর হার ১.৮৪ শতাংশ। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি নালিতাবাড়ীতে ২.৫১ শতাংশ এবং সবচেয়ে কম শেরপুর সদরে ১.১৫ শতাংশ। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী মানুষের মধ্যে বাংলায় কথা বলে সবচেয়ে বেশি ৪২.২৫ শতাংশ। দ্বিতীয় গারো ভাষায় ৩১.৬২ শতাংশ। তৃতীয় অবস্থানে কোচ ভাষায় ১০.৬৪ শতাংশ।

বিবিএস আরো জানায়, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী জনগণের মধ্যে ৩৬.৯১ শতাংশ মানুষ ভাত ও মাছ খায়। নাগারাই খায় ০.২০ শতাংশ, সিংজু খায় ০.২২ শতাংশ, সিনজিডা ০.১৪ শতাংশ, নামপি খায় ০.৭৭ শতাংশ, শামুক খায় ১৪.১৬ শতাংশ, কাঁকড়া খায় ১৭.৫৬ শতাংশ, কচ্ছপ খায় ৯.২৭ শতাংশ, কুচিয়া খায় ১৯.৭২ শতাংশ এবং অন্য খাবার খায় ১.০৫ শতাংশ। এ ছাড়া ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা। এ উৎসব পালন করে ৩৬.০৪ শতাংশ মানুষ। দ্বিতীয় অবস্থানে ক্রিসমাস ডে পালন করে ২৫.৩০ শতাংশ মানুষ। তৃতীয় অবস্থানে ওয়ানগালা উৎসব পালন করে ১৯.৪৯ শতাংশ মানুষ।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন, শেরপুর জেলার জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান, সংস্কৃতিবিষয়ক অতিরিক্ত সচিব ফরহাদ সিদ্দিক এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হামিদুল হক, শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান। প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন- প্রকল্পের পরিচালক ফারহানা সুলতানা। বক্তব্য দেন প্রভার্টি ফোকাল পয়েন্ট মহিউদ্দিন আহমেদ ও প্রশ্ন উত্তর পর্ব পরিচালনা করেন, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম সচিব দীপঙ্কর রায়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close